আন্তর্জাতিক যে ৫টি বইয়ে ঘুরে যেতে পারে জীবনের মোড়!
নিজেকে নতুনভাবে চেনার জন্য, গড়ে তোলার জন্য, বর্তমান অবস্থা পরিবর্তনের জন্য একটি বইয়ের ভূমিকা অনেকখানি।
জীবনের ধারা বদলে দিতে ও মোড় ঘুরিয়ে পারে একটি সঠিক বই। বইয়ের মাঝে আবিষ্কার করা যায় নতুন এক অপরিচিত পৃথিবীকে। অচেনা সেই পৃথিবীর পথে পরিভ্রমণে কখন যেন নিজের মাঝেও চলে আসে ইতিবাচক পরিবর্তনটি।
এমনই কিছু আন্তর্জাতিক অনুপ্রেরণাদায়ী চমৎকার বইকে তুলে ধরে হয়েছে আজকের ফিচারে। যার কোনটি শেখায় নিজেকে কীভাবে গড়ে তুলতে হয় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। কোন বইতে উঠে আসবে নারীদের সঙ্গে হওয়া অন্যায় ও অবিচারের গল্প। তবে প্রতিটিই এক একটি ‘মাস্ট হ্যাভ বুক’।
বিকামিং (Becoming – Michelle Obama)
স্মৃতি থেকে খুব চমৎকারভাবে শেয়ার করেছেন ও ফুটিয়ে তুলেছেন নিজের গভীর জীবনবোধের গল্পটি। সাজানো গল্পে খুব সহজেই মিশেল আকৃষ্ট করতে পেরেছে পাঠকদেরকে। নিজের একান্ত জগতের একেবারে ছেলেবেলার সাধারণ একজন কিশোরী থেকে থেকে ফার্স্ট লেডি হয়ে ওঠা, ওয়ার্কিং মাদার হয়েও সন্তানদের সামলানো, জীবনে বিজয়ের স্বাদ, হতাশা, একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়গুলোও উঠে এসেছে আত্মজীবনীমূলক বই বিকামিং এ। ২০১৮ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত হওয়া এই বইটি নিঃসন্দেহে সংগ্রহে রাখার মতোই।
হার বডি এন্ড আদার পার্টিজ (Her Body and Other Parties – Carmen Maria Machado)
বলা হচ্ছে, মনের উপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব বিস্তার করতে পারার মতো ক্ষমতা রয়েছে এই বইটির। ছোটগল্প সংকলনের এই বইয়ে উঠে এসেছে নারীদের সঙ্গে হওয়া যৌন ও শারীরিক নির্যাতনের প্রতিচ্ছবি। বইটির প্রতিটি গল্পেই ফুটে উঠেছে ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতি ও ঘটনা। ২০১৭ সালের অক্টোবরে প্রকাশিত হওয়া কারমেন মারিয়া মাচাডোর এই বইটি ‘ন্যাশনাল বুক এওয়ার্ড ফিকশন’ এর ফাইনাল লিস্টে জায়গা করে নিয়েছিল।
হার্ট বেরিস: আ মেমোয়ার (Heart Berris: A Memoir – Terese Marie Mailhot)
আত্মজীবনীমূলক বইটিতে লেখিকা খুব পরিষ্কারভাবে ট্রমা, মানসিক অসুস্থতা ও পরিবারের সঙ্গে বোঝাপড়ার বিষয়টি তুলে এনেছেন। নিজের জীবনের কাহিনী ও ঘটনা লেখার অভ্যাসটি ছিল, তার মানসিক অসুস্থতা কাটিয়ে ওঠার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার ও বায়পোলার-২ ডিসঅর্ডার নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হবার পর, তার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল কাগজ-কলম।
যার ফলাফল হিসেবে প্রকাশ পায় চমৎকার এই আত্মজীবনীটি। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হওয়া বইটি ইতোমধ্যেই স্থান করে নিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমসের বেস্টসেলারের তালিকায়।
ইমারজেন্সি কন্ট্যাক্ট (Emergency Contact – Mary H. K. Choi)
বইটির কাহিনী আবর্তিত হয়েছে দুইজন তরুণ-তরুণীর মাঝে গড়ে ওঠা সম্পর্ককে ঘিরে। তাদের মধ্যকার অনুভূতি ও তাদের জীবনের সঙ্গে জড়িত থাকা নানান ঘটনা নিয়ে গড়ে ওঠা এই বইটিতে দেখানো হয়েছে, ভালোবাসার সম্পর্কের এক ভিন্ন রূপ। ২০১৮ সালের মার্চে প্রকাশিত হওয়া কন্টেম্পরারি ইয়াং-এডাল্ট ফিকশন ঘরানার এই বইটি পছন্দ করবে ফিকশনপ্রেমী যে কেউ।
দ্য ইয়ার অব ম্যাজিক্যাল থিংকিং (The Year of Magical Thinking – Joan Didion)
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইকনিক, স্টানিং, সুপরিচিত ও জনপ্রিয় লেখিকা জোয়ান দিদিয়ন স্মৃতিগাঁথায় লেখা এই বইটিতেও ছিলেন অনবদ্য। এখানে তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাগুলো এমনভাবে তিনি তুলে ধরেছেন, যা সঙ্গে পাঠক নিজেকে জড়াতে পারবে সহজেই। বিবাহিত জীবনের খুঁটিনাটি, চাওয়া-পাওয়া, ভালো ও খারাপ দিনের অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা এই বইটি তাই খুব সহজেই নন-ফিকশনের জিতে নিয়েছে ‘ন্যাশনাল বুক এওয়ার্ড। ২০০৫ সালে প্রকাশিত হওয়া এই বইটি এতোগুলো বছর পরেও ত্যার জৌসুল ধরে রেখেছে। বইটি যদি পড়া না হয়ে থাকে, তবে এই বছরেই পড়ে ফেলুন অসাধারণ এই বইটি।
আরও পড়ুন: ১২ কারণে গড়ে তুলুন বই পড়ার অভ্যাস