হাঁটুর ব্যথা কমাবে ঘরোয়া সমাধান
আঘাত পাওয়া থেকে আর্থ্রাইটিস- হাঁটুর ব্যথাটি যেকোন কারণেই দেখা দিতে পারে।
সমস্যাটি হাঁটুর জয়েন্টে হতে পারে, সেই অংশের পেশীতে হতে পারে কিংবা লিগামেন্টের সমস্যার ফলেও দেখা দিতে পারে।
দৌড়ানো, নাচ, শরীরচর্চা কিংবা হাঁটা সময় অসাবধানতায় পা ফেলার ফলেও হুট করে হাঁটু ব্যথা দেখা দেওয়ার সম্ভবনা থাকে। শারীরিক এই সমস্যাটি দেখা দেওয়ার ফলে প্রতিদিনের কাজকর্ম করা, চলাফেরা করায় বড় ধরণের ব্যাঘাত ঘটে।
সাধারণত বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঘরোয়া উপাদান ব্যবহারে এই ব্যথাভাব অল্প সময়ের মাঝেই ভালো হয়ে যায়। উপকারী উপাদানের সঠিক ব্যবহারে হাঁটুর ব্যথায় খুব বেশিদিন কষ্ট করতে হবে না।
অ্যাপল সাইডার ভিনেগার
‘ন্যাচারাল রিমেডি’ হিসেবে অ্যাপল সাইডার ভিনেগারের ব্যবহার নতুন কিছু নয়। প্রত্যেহ পরিমিত পরিমাণে অ্যাপল সাইডার ভিনেগার পান শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেও কাজ করে। তবে হাঁটুর ব্যথার ক্ষেত্রেও যে এই তরলের অবদান রয়েছে, সেটা জানেন না অনেকেই। এভিসিতে থাকা অ্যালকালাইজিং প্রভাব হাঁটুর প্রদাহকে কমায়।
হাঁটুর ব্যথাভাব কমানোর জন্য দুই চা চামচ এভিসির সঙ্গে দুই টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে হাঁটুর ব্যথাযুক্ত স্থানে ম্যাসাজ করতে হবে ধীরে ধীরে। প্রতিদিন দুইবার এই মিশ্রণটি ব্যবহার করতে হবে।
আদা
আদাতে থাকে জিনজেরোল (Gingerol), যা এক প্রকারের অন্যতম শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি তথা প্রদাহ বিরোধী উপাদান। এই উপাদানটি শরীরের যেকোন অংশের ফুলে যাওয়া ও পেশীর ব্যথাকে কমাতে কাজ করে। আদা মুখে খেলে কিংবা আক্রান্ত স্থানে সরাসরি ম্যাসাজ করলে উপকার পাওয়া যাবে।
আদা খেতে চাইলে গরম পানি, আদা কুঁচি ও মধু একসাথে মিশিয়ে পান করতে হবে। হাঁটুতে ব্যবহারের জন্য নারিকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে চুলায় কিছুক্ষণ গরম করে এরপর গরম তেলটি ব্যথাযুক্ত স্থানে ম্যাসাজ করতে হবে।
তিলের তেল ও লেবুর রস
ভারতীয় উপমহাদেশ ও চীনে শারীরিক সমস্যা ও ব্যথা দূর করার জন্য বহুল ব্যবহৃত তেল হলো তিলের তেল। পেশীর ব্যথাকে কমাতে তিল বিশেষ উপকারিতা বহন করে। প্রতিদিন অন্তত একবার তিলের তেল ব্যবহারেই কাঙ্ক্ষিত উপকার পাওয়া যাবে। শুধু তিলের তেল হালকা গরম করে অথবা তিলের তেলের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়েও ব্যবহার করা যাবে। লেবুর রসে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড হাঁটুর জয়েন্টের ব্যথাকে কমাতে কার্যকরি।
হলুদ গুঁড়া
প্রতিদিনের রান্নায় যে মশলাটি ব্যবহার করা হয়, সে মশলাটিই হাঁটুর ব্যথা কমাতে উপকারী ভূমিকা রাখবে। হলুদ গুঁড়াকে অনেক স্থানেই ‘মিরাকল স্পাইস’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। হলুদের গুণাগুণের পেছনে রয়েছে এতে থাকা কারকিউমিন নামক উপাদানের উপস্থিতি। মেডিকেল শাস্ত্রে যাকে উচ্চমানের প্রদাহ বিরোধী উপাদান হিসেবে ধরা হয়।
নিয়মতি বিভিন্ন রান্নায় হলুদ খাওয়া হলেও, দুধের সঙ্গে হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে পান করলে দ্রুত উপকার পাওয়া যাবে। পাশাপাশি নারিকেল তেল ও অলিভ অয়েলের সঙ্গে হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে হাঁটুতে ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যাবে।
এই সকল উপাদানের ব্যবহার ও ম্যাসাজে হাঁটুর স্বাভাবিক ব্যথার সমস্যা দ্রুতই ভালো হয়ে যাবে। তবে হাঁটুর আঘাত যদি বড় হয় এবং ব্যথাটি দীর্ঘদিন পর্যন্ত থাকে, তবে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
আরও পড়ুন: ভোগান্তি যখন বন্ধ নাকের সমস্যা
আরও পড়ুন: পেটের মেদ বাড়ছে যে সকল অভ্যাসে