প্রশান্তিতে তরমুজ
বৈশাখের শুরু থেকেই গরমের প্রচণ্ডতা দেখা দেওয়া শুরু হয়।
গরমে ঘাম হয় যতটা, ক্লান্তিও দেখা দেয় ততখানি। গরমের মাঝে প্রাণ জুড়াতে ও প্রশান্তি আনতে হাতের কাছেই পাওয়া যাবে চমৎকার ফল তরমুজ।
মৌসুমি এই ফলটি অল্প সময়ের জন্য পাওয়া যায় বলেই, পুরো মৌসুম জুড়ে প্রতিদিন খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। পর্যাপ্ত পানি ও স্বল্প ক্যালোরিযুক্ত মিষ্টি এই ফলটি দুশ্চিন্তা ছাড়াই খাওয়া যাবে পেট ভরে। শুধু সুস্বাদ কিংবা প্রশান্তির জন্যেই নয়, দারুণ স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্যেও নিয়মিত খাওয়া প্রয়োজন তরমুজ।
পানির ঘাটতি পূরণ করে
শরীরে পানি স্বল্পতা প্রতিরোধে পানি পান আবশ্যক। তবে যাদের নিয়মিত ও পর্যাপ্ত পানি পান করা হয় না, তরমুজ সেক্ষেত্রে শরীরে পানির ঘাটতি পূরণে কাজ করবে। ৯২ শতাংশ জলীয় অংশ পূর্ণ স্বাস্থ্যকর ফল তরমুজ, শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পানির ঘাটতি পূরণে কাজ করে।
রয়েছে নানাবিধ পুষ্টি উপকারিতা
বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক ও স্বাস্থ্যকর ফলের মাঝে তরমুজের ক্যালোরি সবচাইতে কম। ১৫৫ গ্রাম (এক কাপ) তরমুজে রয়েছে মাত্র ৪৬ ক্যালোরি। যা সবচেয়ে কম চিনিযুক্ত ফল বেরির থেকেও কম। ফলে পেট ভরে খাওয়া যাবে এই ফলটি। ক্যালোরির মাত্রা কম হলেও, পুষ্টিতে ভরপুর তরমুজ থেকে পাওয়া যাবে- ভিটামিন-সি, এ, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন-বি১, বি৫ ও বি৬। এছাড়া আরও রয়েছে ক্যারোটেনয়েডস, বেটা- ক্যারোটিন, লাইকোপেন ও সুস্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ জরুরি অ্যামিনো অ্যাসিড।
সুস্থ রাখে হৃদযন্ত্র
পুরো বিশ্বে হৃদরোগের সমস্যাটি অবস্থান করছে শীর্ষে। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের ফলে গুরুত্বর এই সমস্যাটির ফলে উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ও কোলেস্টেরল এর মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার মতো সমস্যাগুলো দেখা দিচ্ছে অহরহ।
সেক্ষেত্রে গবেষণা জানাচ্ছে তরমুজে থাকা লাইকোপেন কোলেস্টেরল ও রক্ত চাপের মাত্রা মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং বাড়তি কোলেস্টেরলের ফলে অক্সিডেটিভ ড্যামেজের মাত্রা কমাতে কাজ করে।
এছাড়া উপকারী এই ফলে থাকে সাইট্রালিন (Citrulline), এক প্রকারের অ্যামিনো অ্যাসিড। যা শরীরে নাইট্রিক অক্সাইডের মাত্রা বৃদ্ধি করে রক্তনালীকাগুলোকে প্রশস্ত করতে কাজ করে।
হজমজনিত সমস্যা কমায়
নতুন করে বলার কিছু নেই যে, তরমুজ থেকে পাওয়া যায় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি। তবে পানির সঙ্গে আরও পাওয়া যায় খাদ্যআঁশ। পানি ও আঁশ, উভয় উপাদানই খাদ্য পরিপাকে সহায়তা করে।
ত্বক ও চুল সুস্থ রাখে
তরমুজে থাকা ভিটামিন এ ও সি ত্বক ও চুলের সুস্থতার জন্য অন্যতম প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সমূহ। যা তরমুজ থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়। ভিতামিন-সি শরীরে কোলাজেন তৈরি করে। কোলাজেন এক প্রকারের প্রোটিন উপাদান, যা চুল ও ত্বকের সুস্থতা প্রদানে ভূমিকা রাখে। অন্যদিকে ভিটামিন-এ ত্বক ও চুলের ক্ষতির মাত্রা কমাতে কাজ করে।
পেশীর ব্যাথাভাব কমায়
স্বল্প ক্যালোরির এই ফলটিতে রয়েছে সাইট্রালিন (Citrulline) নামক অ্যামিনো অ্যাসিড। এই পুষ্টি উপাদানটি পেশীর ব্যাথাভাবকে কমাতে কাজ করে। গবেষণা থেকে দেখা গেছে তরমুজ, তরমুজের জ্যুস দুর্বল হার্টবিট ও পেশীর ব্যাথাভাবকে কমায় এতে থাকা সাইট্রালিনের উপস্থিতির জন্য।
আরও পড়ুন: ভিটামিন-সি পাওয়া যাবে অন্যান্য যে সকল ফলে
আরও পড়ুন: কাঁচা খেলে পুষ্টি মিলবে সম্পূর্ণ!