যোগব্যায়ামের সাথে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা

  • ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইফস্টাইল
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

শরীর ও মন উভয়ই ভালো থাকবে যোগব্যায়ামে, ছবি: সংগৃহীত

শরীর ও মন উভয়ই ভালো থাকবে যোগব্যায়ামে, ছবি: সংগৃহীত

আজ (২১ জুন) পুরো বিশ্ব জুড়ে পালিত হচ্ছে বিশ্ব যোগ দিবস।

আমাদের দেশে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় বিশ্ব যোগ দিবস পালন করলো ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশন। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে কয়েক হাজার মানুষের যোগব্যায়ামে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে এই অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন হয়।

অনুষ্ঠানে শরীর, মন ও আত্মার জন্য যোগব্যায়ামের উপকারিতা তুলে ধরা হয়। জানানো হয় প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে তার ইতিবাচক প্রভাব।

বিজ্ঞাপন

অনেকেই প্রতিদিনের ব্যস্ততার সাথে তাল মিলিয়ে শরীরচর্চা করেন। তবে শরীরচর্চার পাশপাশি অথবা শুধু যোগব্যায়াম করার উপকারিতাগুলো জানা থাকলে, নিজ থেকেই আগ্রহী হওয়া যায় এর ব্যাপারে। আজকের ফিচারে তুলে ধরা হলো যোগব্যায়ামের অসাধারণ অনেকটি ইতিবাচক দিক।

রক্ত চলাচলের মাত্রা বৃদ্ধি করে

নিয়মিত যোগব্যায়াম করার ফলে রক্ত চলাচলের হার বৃদ্ধি পায় এবং নিয়মিত থাকে। প্রশান্তিদায়ক এই এক্সারসাইজের মাধ্যমে পুরো শরীর তো বটেই, হাত ও পায়ের রক্ত চলাচল উন্নত হয়। এছাড়া শারীরিক চলাচল ও যোগব্যায়ামের বিভিন্ন পজিশনের দরুন হার্টবিট বৃদ্ধি পায়। যা হৃদযন্ত্র থেকে রক্ত পাম্প করে পুরো শরীরে ছড়িয়ে দিতে বেশি কার্যকরি হয়।

বিজ্ঞাপন

বৃদ্ধি করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা

যোগব্যায়াম করার সময় শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ কন্ট্র্যাক্ট ও স্ট্রেস করতে হয়। এতে করে পেশীতে শিথিলতা আসে। যা লিম্ফ (Lymph) এর নিঃসরণ বৃদ্ধিতে কাজ করে। লিম্ফ হল এক প্রকার তরল, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে অবদান রাখে। এই লিম্ফ ইনফেকশনের বিরুদ্ধে, ও শরীরের টক্সিক উপাদানের বিরুদ্ধে কাজ করে।

কমায় রক্তচাপের সমস্যা

যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাটি আছে, ওষুধ সেবনের চাইতেও ভালো ও দ্রুত ফল পাবেন নিয়মিত যোগব্যায়াম করলে। বিট্রিশ মেডিক্যাল জার্নাল দ্য ল্যানচেটে প্রকাশিত দুইটি ভিন্ন ভিন্ন গবেষণার ফল বলছে, প্রত্যহ শবাসন (ইয়োগার ধরণ) রক্ত চাপকে প্রশমিত করতে কাজ করে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/21/1561101759065.jpg

কমায় রক্তে চিনির মাত্রা

যোগব্যায়াম রক্তে চিনির মাত্রা ও খারাও কোলেস্টেরলের মাত্রা (LDL) কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরলের (HDL) মাত্রা বৃদ্ধি করে। পরীক্ষা থেকে দেখা গেছে, বেশ কয়েকভাবে রক্তে চিনির মাত্রা কমায় যোগব্যায়াম। যার মাঝে প্রধান হলো- কর্টিসল ও অ্যাড্রেলাইনের মাত্রা কমানোর মাধ্যমে রক্তে চিনির মাত্রা কমানো। এতে করে অনাকাঙ্ক্ষিত ওজনকেও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়।

সুরক্ষিত রাখে মেরুদণ্ডকে

আমাদের শরীরের হাড়ের মাঝে সবচেয়ে বেশি চাপ ও স্ট্রেসের মুখোমুখি হয় মেরুদণ্ড। যোগব্যায়ামের বেশ কিছু ভঙ্গীর জন্য শরীরকে বাঁকাতে হয়, ঝুঁকাতে হয় এবং সে অবস্থায় ধরে রাখতে হয়। যার প্রভাবে মেরুদণ্ড অনেকটাই সঠিক স্থানে চলে আসে এবং হাড় ও হাড়ের জয়েন্টগুলো মজবুত হয়।

মনোযোগ বৃদ্ধি করে

যোগব্যায়ামের সবচেয়ে জরুরি ও প্রধান উপাদান হলো- বর্তমানে মনোযোগ নিবন্ধ করা। গবেষণা জানাচ্ছে, নিয়মিত যোগব্যায়ামের চর্চা স্মৃতিশক্তি, সময়ের প্রতিফলন, সমন্বয়ের সাথে জ্ঞানীয় বুদ্ধিবৃত্তি বৃদ্ধিতেও অবদান রাখে।

মন ভালো ও প্রফুল্ল রাখে

যোগব্যায়ামের প্রভাবে শুধু শারীরিক সুস্থতায় নয়, মানসিক সুস্থতাও পাওয়া যায়। ভালোভাবে বললে, যোগব্যায়ামের ফলে শরীরের ছোট-বড় অসুস্থতা যেমন দূর হয়, তেমনিভাবে দূর হয় মানসিক অশান্তি, অস্থিরতা, দুশ্চিন্তা অবসন্নতা। ফিরে আসে স্থিরতা। এই মানসিক স্থির ভাব মন থেকে বিষণ্ণতাকে ফেলে দেয়। যা মনকে প্রফুল্লও আনন্দিত রাখতে কাজ করে।

আরও পড়ুন: সাত উপকারিতার এক যোগাসন