যেভাবে ত্বকের ক্ষতি করছে মিষ্টি খাবার
মিষ্টি খাবার সবারই কমবেশি পছন্দ।
ভারি খাবার গ্রহণের পর কিংবা কোন অনুষ্ঠানে মিষ্টি খাবারই সবার আগে প্রাধান্য পায়। যেকোন খাবারই পরিমিত পরিমাণ গ্রহণ করা যায়, তবে সমস্যা দেখা দেয় বেশি খাওয়া হলে। অনেকেই মিষ্টি খাবার খুব বেশি পছন্দ করেন, ফলে একবারে অনেক বেশি খেয়ে ফেলেন। এমনকি সাধারণ খাদ্যাভ্যাসের মাঝে মিষ্টি খাবারের আধিক্যই থাকে বেশি।
মিষ্টি খাবার শুধু স্বাস্থ্যের জন্য নয়, ত্বকের জন্যেও সমানভাবে ক্ষতিকর। চিনি যেমন রক্তে চিনির মাত্রা বৃদ্ধি করে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করে, তেমনিভাবে ত্বকজনিত নানাবিধ সমস্যাও তৈরি করে।
মিষ্টি খাবার কীভাবে ত্বকের ক্ষতি করে?
প্রতিদিন আমরা যে খাবারগুলো গ্রহণ করি, তা একইসাথে আমাদের স্বাস্থ্য ও চেহারার উপরে প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট ও চিনি গ্রহণে ত্বকের বয়স বৃদ্ধির প্রক্রিয়া দ্রুত হয়ে যায়। ফলে সঠিক বয়সের আগেই ত্বকে বয়সের ছাপ দেখা দেয়।
কার্বোহাইড্রেট দুইটি ভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে- সিম্পল ও কমপ্লেক্স। সিম্পল কার্বোহাইড্রেট (কেক, পাউরুটি প্রভৃতি) গ্রহণের পর ভেঙে খুব দ্রুত গ্লুকোজে পরিণত হয়। এই বাড়তি গ্লুকোজ ইনস্যুলিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং প্রদাহ তৈরি করে। যা পুরো শরীরের উপরেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এই প্রদাহের সময় শরীরে তৈরিকৃত এনজাইম কোলাজেন নামক জরুরি প্রোটিনকে ভেঙে ফেলে। যা ত্বককে বুড়িয়ে দেয়।
এছাড়া গ্লাইকেশন পদ্ধতির জন্য একনে ও ব্রণের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। গ্লাইকেশন পদ্ধতিতে গ্রহণকৃত অতিরিক্ত চিনি স্থায়ীভাবে কোলাজেনের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যায়। যা ত্বকের স্বাভাবিক ক্রিয়ায় বাধা প্রদান করে।
অন্যদিকে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। কারণ এই কার্বোহাইড্রেট ধীরে ধীরে পরিপাক হয়। ফলে ইনস্যুলিনের মাত্রায় কোন তারতম্য দেখা দেয় না।
কীভাবে খাদ্যাভ্যাস থেকে মিষ্টিকে দূরে রাখা যাবে?
১. প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টপূর্ণ খাবার রাখার চেষ্টা করতে হবে। হালকা প্রোটিন, আঁশসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের চেষ্টা করতে হবে। বিভিন্ন ধরনের বাদাম ও পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি রাখতে হবে।
২. উচ্চমাত্রার স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও উচ্চমাত্রার গ্লাইসেমিক ভ্যালু সমৃদ্ধ খাবার যেমন আইসক্রিম, তেলে ভাজা খাবার থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকতে হবে।
৩. সরাসরি চিনির পরিবর্তে মধু, স্টেভিয়া কিংবা খেজুরের পেস্ট ব্যবহার করতে হবে।
৪. মিষ্টি খাবারের প্রতি আসক্তি কমাতে মিষ্টি ঘরানার ফল গ্রহণের দিকে জোর দিতে হবে।
৫. ঘুমের ক্ষেত্রে কোন ছাড় দেওয়া যাবে না। প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টার ঘম আবশ্যক।
৬. ঘুমের পাশাপাশি মেডিটেশনের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
৭. কখনোই অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। বিশেষত একবারে বেশি খাবার গ্রহণ পরিপাকতন্ত্রের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে দেয়।
আরও পড়ুন: শারীরিক অসুস্থতার কারণ, অতিরিক্ত মিষ্টি গ্রহণ
আরও পড়ুন: চিনির বিকল্পে চার উপাদান