সচেতনতাই ‘সিলিকোসিস’ প্রতিরোধের মূল হাতিয়ার



মো. আকতারুল ইসলাম

  • Font increase
  • Font Decrease

‘সিলিকোসিস’ শব্দটি বাংলাদেশে খুব পরিচিত নয়। তবে এটি একটি মরণব্যাধি, যা ফুসফুসের প্রদাহজনিত রোগ। এ রোগে আক্রান্ত রোগীদের শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট হয়, সর্দি-কাশি, জ্বর সবসময় লেগে থাকে, শরীর দিনদিন দুর্বল হয়ে পরে ও ওজন কমে যায়। এক সময় আক্রান্ত ব্যক্তি মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেন। সাধারণত পাথর ভাঙা শ্রমিকরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হন।

পাথরের উপাদান সিলিকা (স্ফটিকের ধুলো) থেকে এ রোগ হয় বলে একে ‘সিলিকোসিস’ বলা হয়। সিলিকা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মানবদেহের ফুসফুসে প্রবেশ করে। ফুসফুসের সূক্ষ ছিদ্রগুলোকে বন্ধ করে দেয়। এমনকি পাথরের ধুলিকণা নাক, মুখ এমনকি চোখের মধ্যদিয়ে শরীরে প্রবেশ করায় ফসফুস ধীরে ধীরে কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।

প্রকৃতপক্ষে সিলিকোসিস রোগের কোনো চিকিৎসা নেই। তাই সচেতনতাই এ রোগ প্রতিরোধের মূল হাতিয়ার। সিলিকোসিস তিন ধরনের হতে পারে:

১. সাধারণ সিলিকোসিস/হালকা সিলিকোসিস: ধুলোর মধ্যে কাজ করলে ১০-৩০ বছরের মধ্যে এর লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এ রোগ শনাক্ত করা কঠিন। তবে এক্ষেত্রে, অব্যাহত খুসখুসে কাশি এবং শ্বাসকষ্টজনিত চিনচিনে ব্যাথা হতে পারে।

২. বর্ধমান সিলিকোসিস সিলিকার: ধুলোর মধ্যে কাজ করলে ৫-১০ বছরের মধ্যে এ রোগের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এটিও সাধারণ সিলিকোসিসের মতোই। তবে এর সংক্রমণ দ্রুততার সাথে জটিল আকার ধারণ করতে পারে।

৩. জটিল সিলিকোসিস: এটি জটিল আকার ধারণ করে যখন ফুসফুসের বায়ু কুঠুরিগুলো যুক্ত/স্ফিত হয়ে এক সেন্টিমিটার বা তারও বেশি বড় হয়। শ্বাস-প্রশ্বাসে খুব সমস্যা হয়। এ সময় যক্ষা ও ছত্রাক সংক্রমণের মতো রোগগুলো একে আরো জটিল করে তুলতে পারে। এ সমস্যা ধীরে ধীরে ফুসফুসের ক্যান্সারেও রূপ নিতে পারে।

এগুলোর বাইরে যেটি মারাত্মক এবং প্রাণঘাতি তা চরম সিলিকোসিস। পাথরগুড়া বা পাথরের ধুলা শ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে প্রবেশ করার কারণে কয়েক সপ্তাহ থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়লে তাকে একিউট বা চরম সিলিকোসিস বলে।

চরম সিলিকোসিসে দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয়, কাশি ও দুর্বলতা বাড়ায় এবং ওজন কমে যায়। এ অবস্থায় আক্রান্ত ব্যক্তি মারা যায়। এ রোগে বেসরকারি হিসাব মতে, এখনও পর্যন্ত ৬৭ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর, সিপাইপাড়া, ভোজনপুর, জগদল, ময়নাকুড়ি এলাকা,  জয়পুরহাটের আক্কেলপুর বিভিন্ন এলাকায় শিলপাটা তৈরির কারখানায় কয়েক

হাজার শ্রমিক সিলিকোসিস রোগে আক্রান্ত। পাথরভাঙা শ্রমিকদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি প্রথম আলোচনায় আসে ২০১২ সালে। সে সময় লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরের সিলিকোসিসে আক্রান্ত ৫৩ জন শ্রমিকের সন্ধান পায় জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালের বিশেষজ্ঞরা।

বক্ষব্যাধি চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রকৃতপক্ষে সিলিকোসিসের কোনো চিকিৎসা নেই। এ রোগের একমাত্র চিকিৎসা প্রতিরাধ ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা, যাতে সিলিকা ধোঁয়া বেরিয়ে যেতে পারে। এই রোগে আক্রান্ত একজন শ্রমিকের শ্বাস-প্রশ্বাসে সংস্পর্শে না আসা, শ্রমিকের ব্যক্তিগত সচেতনতা ও মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করাও এ রোগ প্রতিরোধের অংশ হতে পারে।

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থেকে বুড়িমারী স্থলবন্দরে প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গড়ে ওঠা পাথরভাঙা কারখানাগুলোয় সিলিকোসিস রোগের প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি। ভারত ও ভুটান থেকে আমদানি করা বোল্ডার পাথর, লাইমমেটালসহ বিভিন্ন ধরনের পাথরভাঙার সময় প্রচুর পরিমাণে সিলিকা কণা তৈরি হয়। এগুলো শ্রকিকের সারাদেহ ঢেকে দেয়। মাঝে মাঝে ধোঁয়ার পরিবেশ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পানি ব্যবহার করা হয়। তবে পানি ব্যবহারে উৎপাদিত পাথরের গুণগতমান নষ্ট হওয়ার অজুহাতে মলিকপক্ষ তা করতে দেন না। এতে সিলিকোসিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে শিলপাটা তৈরির কারখানায় কাজ করতে গিয়েও সিলিকোসিসে প্রায় অর্ধশত লোকের মৃত্যু হয়েছে।

পাথরভাঙা শ্রমিকদের সিলিকোসিস সম্পর্কে সচেতন করতে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ লেবার স্ট্যাডিজ (বিলস) কাজ করছে। জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, লালমনিরহাটের স্থানীয় প্রশাসন, সিভিল সার্জন অফিস, একসাথে কাজ করছে। সিলিকোসিস রোগের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে বিলস এবং জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতাল যৌথভাবে গবেষণা করছে। বেসরকারি সংস্থা সেইফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটি বুড়িমারীর পাথর শ্রমিকদের চিকিৎসায় স্বাস্থ্যক্যাম্প পরিচালনা করছে।

পাথরভাঙা শ্রমিকদের সিলিকোসিস থেকে বাঁচাতে মালিক-শ্রমিকের ব্যক্তি পর্যায়ে সচেতনতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মাস্ক ছাড়া কোনোক্রমেই কাজ করা উচিত নয়। সেইসাথে কারখানা মালিককেও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এমনকি পাথরভাঙার মেশিনগুলো জনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে সরিয়ে নিতে হবে। কোনো মতেই খোলাস্থানে কোনো পাথরভাঙা যাবে না এবং পাথর ভাঙার সময় পাথরে পর্যাপ্ত পানি ঢালতে হবে। কারণ পাথরের ধুলায় শুধু শ্রমিকই নয়, এলাকার লোকজনেরও স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকে।

এ রোগ প্রতিরোধে পরিবেশ অধিদপ্তর, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনকে বড় ভূমিকা রাখতে হবে। শ্রমিকের বিশেষ পোশাক ও মাস্কের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। পর্যাপ্ত প্রতিষেধক ওষুধ ও আর্থিক সহায়তা দিতে হবে। পদক্ষেপগুলো শুধু বুড়িমারীতে কিংবা তেঁতুলিয়াতেই নয়, যেখানে পাথর ভাঙা হয় সেখানেই নিতে হবে।

সিলিকোসিস প্রতিরোধের বিষয়ে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ডা. আনিসুল আওয়াল বলেন, ‘পাথর ভাঙার কাজ কোনোভাবেই খোলা পরিবেশে করা যাবে না। এমনকি পাথর ভাঙার সময় পর্যাপ্ত পানি ঢালতে হবে। যেখানে পাথর ভাঙা হবে সেখানেই ঝর্ণার ব্যবস্থা করতে হবে। কারখানার ভেন্টিলেশনের মাথায় এক্সজাস্ট ফ্যানের সাথে এই ঝর্ণা লাগাতে হবে, যাতে বাতাসে ডাস্ট বা ধূলিকণা মিশতে না পারে। শ্রমিকদের বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। পরিস্কার না করে কোনো মাস্ক ব্যবহার করা যাবে না।’

   

রেকর্ড ভাঙবে তাপমাত্রা, জেনে নিন গরম থেকে রক্ষার উপায়!



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
রেকর্ড ভাঙবে তাপমাত্রা, জেনে নিন গরম থেকে রক্ষার উপায়!

রেকর্ড ভাঙবে তাপমাত্রা, জেনে নিন গরম থেকে রক্ষার উপায়!

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের শুরু থেকেই আবহাওয়া অধিদপ্তর জানাচ্ছে এবার তাপমাত্রা আগের সব রেকর্ড ভাঙবে। ইতোমধ্যেই তাঁর প্রভাব দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। প্রচণ্ড গরমে দেশবাসীর বেহাল দশা। কোন না কোন কাজে সকলকেই বাড়ির বাইরে যেতেই হচ্ছে। তাই বাইরের গেলে নিজেকে রোদ থেকে রক্ষা করতে হবে।  জেনে নিই, যেভাবে এই গরমেও নিজেকে গরম থেকে রক্ষা করবেন-

পানি: নিজেকে সুস্থ রাখতে পানির কোন বিকল্প নেই। রোগ থেকে বাঁচতে হোক অথবা নিজেকে সুস্থ রাখতে, সবসময় পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। প্রচণ্ড তাপে নিজেকে রক্ষা করতে চাইলে কোন ভাবেই পানি পান করা বাদ দেওয়া যাবে না। তেষ্টা না পেলেও পানি পান করতে হবে। দিনে অন্তত ৮ গ্লাস বা তারও বেশি পানি পান করুন।

এছাড়াও, প্রতিবার বাইরে যাওয়ার সময় অবশ্যই পানি সাথে রাখা প্রয়োজন। বিকল্প হিসেবে পানিসমৃদ্ধ ফল বা সবজি খেতে পারেন। যেমন- আপেল, তরমুজ, শসা, আপেল, পেয়ারা ইত্যাাদি।

পোশাক: বাইরে গেলে রোদের সরাসরি সংস্পর্শে আসার কারণে গরম অনেক বেশি লাগে। তাই বাইরে যাওয়ার সময় ঢিলাঢালা পোশাক পরা উচিত। এছাড়াও,কম ওজনের কাপড় ব্যবহার ক্রুন। যেমন, সুতি বা লিনেন। এছাড়াও, হাল্কা রঙের পোশাক বাছাই করা উচিত। কেননা, গাঢ় রঙ তাপ বেশি শোষণ করে বিধায় গরম বেশি লাগে।

রোদ আড়াল করা: যখন বাইরে যাবেন, নিজেকে যথাসম্ভব ছায়ায় রাখুন। সঙ্গে ছাতা রাখুন, যেন ত্বক রোদের সংস্পর্শে না আসে। 

গোসল: গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করতে হবে। এতে ফ্রেশ লাগে, তাছাড়া অনেক্ষ্ণ শরীর থাকে।

গাছ: বাড়িতে থাকলে তুলনামূলকভাবে গরম কম লাগে। তবে ঘরের পরিবেশ ঠান্ডা রাখতে চাইলে বাড়িতে বেশি করে গাছ লাগান। গাছ থাকলে পরিবেষ প্রাকৃতিকভাবে ঠান্ডা হয়।

তথ্যসূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

;

গরমে চুলের যত্ন নিন ঘরে বসেই



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সারাদেশে চলছে তীব্র তাপদাহ। গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। এই গরমে মাথা ঘেমে চুল ভেজা থাকায় অনেকেই বিরক্ত থাকেন। ঘামে ভিজে চুলের অবস্থাও নাজেহাল হয়ে যায়। অনেক সময় চুলপড়া বেড়ে যায় গরমে। তাই চুলের বাড়তি যত্ন দরকার হয় এই মৌসুমে।

অনেকেই চুলের যত্ন নিতে নিয়মিত পার্লারে যান। এতে করে সময় এবং অর্থ দুই ব্যয় হয়। অনেকের সময় সুযোগ হয়ে ওঠে না নানা ব্যস্ততায়। তাই সময় এবং টাকা বাঁচিয়ে চুলের যত্ন নিন ঘরে বসেই। 

কীভাবে চুলের যত্ন নেবেন চলুন তা জেনে নিই:

ব্যস্ত সময়ে আমরা অনেকেই চুলে তেল নেই না। আর গরমে তেল না নিলে চুল আরও রুক্ষ হয়ে যায়। তাই নিয়ম করে সপ্তাহে অন্ততপক্ষে দু’দিন চুলে তেল দিতে হবে। চুলের গোড়া মজবুত করতে ‘হট অয়েল ট্রিটমেন্ট’ নিতে পারেন বাড়িতেই।

অনেকের অভ্যাস আছে তোয়ালে দিয়ে চুল পেঁচিয়ে মাথার ওপর তুলে রাখার। এই অভ্যেস থাকলে ত্যাগ করুন। কারণ এতে চুল পড়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। এর থেকে ভালো হয় পুরোনো ও নরম টি-শার্ট দিয়ে আলতো হাতে চেপে চেপে চুলের পানি শুকিয়ে নিন। চুল শুকিয়ে এলে মোটা দাঁড়ার চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়াবেন। সেক্ষেত্রে প্লাস্টিক না বরং ব্যবহার করুন কাঠের চিরুনি ।

কাজুবাদামের হেয়ার ওয়েল তেল, মধু আর দইয়ের প্যাক চুলের রুক্ষতা দূর করতে বিশেষ কার্যকর। লেবুর রস আর ডিমের কুসুম মিশিয়ে নিয়েও লাগাতে পারেন। এই প্যাক ফিরিয়ে আনতে পারে চুলের হারানো জেল্লা।

;

গরমে সুস্থ থাকতে যেসব খাবার খাবেন



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র তাপদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন। এ সময় শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি ঘাম হয়ে বের হয়। এতে শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। ফলে শরীরে ক্লান্ত লাগে। তাই শরীর সুস্থ রাখতে আপনাকে খেতে হবে পানি ও পানিযুক্ত খাবার।

গরমে কী ধরনের খাবার শরীরের জন্য ভালো চলুন তা জেনে নিই–

পানি

পূর্ণবয়স্ক একজন নারীর দিনে অন্তত ২.৫-৩ লিটার, পূর্ণবয়স্ক একজন পুরুষের ৩-৩.৫ লিটার সুপেয় পানি পান করা উচিত। তবে কিডনি রোগীদের অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে পানির পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে।

গরমে লেবু বা ফলের শরবত খাওয়া খুবই উপকারী। ডাবের পানিও খুব দারুণ কার্যকর। এসব পানীয় খুব সহজেই শরীরের পানির চাহিদা পূরণ করবে। ডাবের পানি ও ফলের শরবত খেলে পানির পাশাপাশি প্রয়োজনীয় খনিজ লবণের চাহিদাও পূরণ হবে।

সবজি
কাঁচা পেঁপে, পটল, ধুন্দল, শসা, চিচিঙ্গা, গাজর, লাউ, পেঁপে, পালংশাক, টমেটো, শসায় পানির পরিমাণ বেশি থাকে। পানিশূন্যতা দূর করতে এই খাবারগুলো অবশ্যই খাবার তালিকায় রাখার চেষ্টা করুন। এ ছাড়া পাতলা করে রান্না করা টক ডাল, শজনে ডাল শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।


মৌসুমি ফল

পানিশূন্যতা দূর করার জন্য কাঁচা আম খুবই ভালো। কাঁচা আমে আছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। এ ছাড়া ভিটামিন সি ও ম্যাগনেশিয়ামও আছে, যা শরীর ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে। তরমুজ শরীর ঠান্ডা করতে সাহায্য করে। এতে আছে ভিটামিন ও খনিজ লবণ, যা এই গরমে শরীরের জন্য দরকার।

বাঙ্গি খুবই পুষ্টিকর একটি ফল, যা খুবই সহজলভ্য এবং দামেও তুলনামূলক সস্তা। শরীর ঠান্ডা রাখতে বাঙ্গির তুলনা নেই।

আখের রস

আখের রস শরীরকে ঠান্ডা রাখতে খুবই কার্যকরী। আখের রসের সঙ্গে বিট লবণ, পুদিনাপাতা এবং লেবুর রস মিশিয়ে খেলে এর স্বাদও বাড়ে, পুষ্টিগুণও বাড়ে।

বেলের শরবত

বেলের শরবত পাকস্থলী ঠান্ডা রাখতে খুব কার্যকর। বেলে রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন, প্রোটিন, রিবোফ্লাভিন, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি১ এবং বি২, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম ও ফাইবার।


পুদিনার শরবত

শরীরকে ভেতর থেকে ঠান্ডা রাখতে এবং সতেজ অনুভূতির জন্য পুদিনার শরবত অতুলনীয়।

জিরা পানি
নোনতা স্বাদযুক্ত এই পানীয় হজমে সাহায্য করে। তবে ডায়াবেটিস রোগীরা শরবতে আলাদা করে চিনি বা মধু অ্যাড করবেন না।

যা খাবেন না

অনেক কার্বনেটেড বেভারেজ আমরা গরমের সময় প্রচুর খেয়ে থাকি, যা ঠিক না। এই পানীয়গুলো শরীরকে সাময়িক চাঙা করলেও এর কোনো পুষ্টিগুণ নেই, বরং শরীরকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করে। ঝাল, বাইরের খোলা শরবত, বাইরের খাবার, ভাজাপোড়া এ সময় যতটা পারেন এড়িয়ে চলুন। পাতলা ঝোল ঝোল খাবার খাওয়া এ সময় সবচেয়ে ভালো।

 

;

হুপিং কাশিতে আক্রান্ত, মেনে চলুন এই বিষয়গুলো!



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হুপিং কাশিতেন আক্রান্ত শিশু / ছবি:সংগৃহীত

হুপিং কাশিতেন আক্রান্ত শিশু / ছবি:সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হুপিং কাশি খুবই গুরুতর একটি রোগ। বোর্ডেটেলা পারটুসিস ব্যাকটেরিয়ার কারণে এই রোগ হয়। খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে এই ব্যাকটেরিয়া। মূলত ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ মানুষের শ্বাসনালীতে আক্রমণ করার ফলে হয়। হুপিং কাশির প্রাথমিক উপসর্গ হলো কাশির সাথে শ্বাসকষ্ট। ইদানিং বেশ কয়েকটি দেশে হুপিং কাশিতে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বাড়তে দেখা যায়। গত বছরের তুলনায় এই বছর আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা প্রায় ২০ গুণ বেশি। তাই হুপিং কাশির ক্ষেত্রে সতর্কতা বাড়াতে হবে।

সতর্কতা বাড়ানোর আগে অবশ্যই রোগের উপসর্গ সম্পর্কে জানতে হবে। এছাড়াও সংক্রমণ শিথিল করার উদ্দেশ্যে কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। জেনে নিই হুপিং কাশিতে আক্রান্ত হলে কি করতে হবে-

১. টিকা: যেকোনো রোগের প্রতিরোধের প্রাথমিক পদক্ষেপ হলো টিকাগ্রহণ। বেশির ভাগ রোগের জন্যই প্রতিরোধমূলক টিকা রয়েছে। শিশুদের ছোট থেকেই বাধ্যতামূলক কিছু টিকাদান করা হয়। সাধারণত ২ মাস বয়স থেকে শিশুদের টিকা দেওয়া শুরু করা হয়।

২. স্বাস্থ্যবিধি: ছোট থেকেই সকলের পরিষ্কার করে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অনুশীলন করতে হবে। বাড়ি বড়দের উচিত সাবান পানিতে দিয়ে হাত ধোয়ার জন্য শিশুদের উৎসাহিত করা। বিশেষ করের বাইরে থেকে ফেরত আসার পর, হাঁচি-কাশির পরে বা নোংরা কিছু ধরার পর। এছাড়া টয়লেট থেকে এসে এবং অবশ্যই খাওয়ার আগে হাত ধুতে হবে। এছাড়াও কাপ, চামচ, গ্লাস বা মগ ইত্যাদি জিনিস ব্যক্তিভেদে ভিন্ন ভিন্ন ব্যবহার করাই ভালো।   

৩. নাক-মুখ ঢাকা: শুধু হুপিং কাশি নয়, বেশিরভাগ ছোঁয়াচে রোগই হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায়। তাই অবশ্যই হাঁচি বা কাশি আসলে সবসময় রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করা উচিত। অথবা কোনো কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে নিন যেন জীবাণু না ছড়াতে পারে। হাতের কাছে কিছুই না পেলে কনুই দিয়ে মুখ ঢেকে নিন। হাঁচি এবং কাশির সময় ‍মুখ ঢেকে নিলে রোগ ছড়ানো অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব।

৪. বাড়িতে থাকা: হুপিং কাশিতে আক্রান্ত হওয়া নিশ্চিত হলে ঘর থেকে বাইরে যাওয়া কমিয়ে দিতে হবে। একেবারেই বের না হলে আরও ভালো। অত্যাধিক সংক্রমণ ঝুঁকি থাকার কারণে অন্যদেরও উচিত আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাথে দূরত্ব বজায় রাখা।

৫. চিকিৎসা: আক্রান্ত নিশ্চিত হওয়ার পর অতি দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। তাছাড়া প্রাথমিক চিকিৎসাও গ্রহণ করতে হবে। 

;