কীভাবে স্বল্প স্থানে পর্যাপ্ত মাংস সংরক্ষণ করবেন?

  • ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইফস্টাইল
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

চিত্র: সংগৃহীত

চিত্র: সংগৃহীত

সাধারণত অন্যান্য সময়ে ডিপ ফ্রিজে কাঁচা মাছ-মাংস সংরক্ষণে তেমন কোন সমস্যা না হলেও, বিপত্তি দেখা দেয় কোরবানির ঈদে। মাসের বাজারের সাথে তখন যুক্ত হয় কোরবানি পশুর মাংস সংরক্ষণের তোরজোড়। স্বল্প স্থানের মাঝে পর্যাপ্ত পরিমাণ মাংস রাখার চেষ্টা করেও বিফল হতে হয়। তবে পূর্ব পরিকল্পনা ও সঠিক উপায়ে মাংস রাখার পদ্ধতি জানা থাকলে খুব সহজেই সংক্ষিপ্ত স্থানের মাঝেই সর্বোচ্চ পরিমাণ মাংস রাখা সম্ভব। মাংস সংরক্ষণের কিছু সঠিক কৌশল জানা থাকলে বিরক্তিকর সমস্যাটি এড়িয়ে যাওয়া যায় সহজেই।

আসন্ন কোরবানির ঈদে মাংস সংরক্ষণের ঝামেলা এড়াতে চাইলে চোখ বুলিয়ে নিন আজকের ফিচারে।

বিজ্ঞাপন
আরো পড়ুন: রেফ্রিজারেটর পরিষ্কার করেছেন কি?

কোরবানির ঈদের আগে ডিপ ফ্রিজে জায়গা তৈরি

১. প্রথমেই ডিপ ফ্রিজ পরিষ্কার করে অনেকদিনের পুরনো মাছ-মাংস বের করে ফেলতে হবে। এতে অনেকখানি জায়গা খালি হবে। ডিপ ফ্রিজে বরফ জমেও অনেক জায়গা নষ্ট হয়। পরিষ্কার করার ফলে বরফ দূর হবে এবং ডিপ ফ্রিজে বেশ কিছুটা জায়গা তৈরি হবে।

২. প্রয়োজনীয় মাছ-মাংস পুনরায় ডিপ ফ্রিজে রাখার সময় ফ্রিজের এক পাশে গুছিয়ে রাখতে হবে। এলোমেলোভাবে পুরো ফ্রিজ জুড়ে রাখলে জায়গা নষ্ট হবে অনেকটা। ডিপ ফ্রিজের অংশ যেহেতু ছোট হয়, সেহেতু এক পাশ বরাবর লাইন তৈরি করে মাছ-মাংস রাখতে হবে।

বিজ্ঞাপন

৩. অনেকেই বিভিন্ন মশলার পেস্ট ও কাঁচামরিচ-পেঁয়াজ কাটা ছোট-বড় বাটিতে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করেন। কোরবানির ঈদের আগের দিন এই বাটিগুলো বের করে ফেলতে হবে।

কোরবানির ঈদের মাংস সংরক্ষণ

১. কোরবানির মাংস বড় টুকরা করে কাটা হয়। চেষ্টা করতে হবে মাংসের ছোট টুকরা করে কাটার।

২. মাংস, চর্বি ও হাড় আলাদা করে রেখে ভাগ করতে হবে। হাড় ও চর্বি সাধারণত অনেকেই খেতে পছন্দ করে না। হাড় ও চর্বি বাদ দিলে মাংসের সমষ্টিগত পরিমাণ কমে যাবে অনেকটা।

৩. সাধারণত ছোট পলিথিনের ব্যাগে মাংস রাখা হয়। পলিথিনের ব্যাগের বদলে বড় ও চ্যাপ্টা বক্স ব্যবহার করলে অনেক বেশি মাংস রাখা সম্ভব হবে অল্প স্থানে।

৪. বক্স ব্যবহারে আগ্রহী না হলে পলিথিন ব্যবহারের ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে পলিথিনের ব্যাগ যেন নতুন হয়। নইলে মাংসে গন্ধ হয়ে যেতে পারে। ডিপ ফ্রিজে মাংস রাখার সময় একটা ব্যাগের উপরে আরেকটি ব্যাগ গুছিয়ে রাখতে হবে। এলোমেলোভাবে রাখার ফলে অনেক স্থান নষ্ট হয়।

৫. ডিপ ফ্রিজে কোরবানির মাংস রাখার আগে ভালোভাবে পানিতে ধুয়ে রক্ত ও পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। নইলে রক্ত চুইয়ে ডিপ ফ্রিজে শক্তভাবে আটকে যাবে।

৬. কোরবানির পর প্রায় ৩-৪ ঘণ্টা পর্যন্ত মাংস বেশ শক্ত থাকে। এই সময়ে মাংস ফ্রিজে না রাখাই শ্রেয়। অন্তত চার ঘণ্টা পর মাংস ফ্রিজে রাখতে হবে।

ডিপ ফ্রিজ পরিপূর্ণ হয়ে গেলে চিন্তা নেই। বাড়তি মাংস জ্বাল দিয়ে সংরক্ষণ করা যাবে। মাংস ভালোভাবে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। এতে পরিমাণমতো লবণ ও হলুদ মাখিয়ে পানিতে জ্বাল দিতে হবে। প্রতিদিন অন্তত দুইবার জ্বালালে দীর্ঘদিন পর্যন্ত এই মাংস ভালো ও ফ্রেশ থাকবে। তবে এমনভাবে সংরক্ষণের ক্ষেত্রে মাংসের সাথে চর্বি থাকলে ভালো হয়।

অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- সঠিকভাবে ও সঠিক সময়ে মাংস সংরক্ষণ করা না হলে, মাংস হারায় তার গুণগত মান ও স্বাদ। যে কারণে চেষ্টা করতে হবে সঠিক উপায়ে ও সময়ে মাংস সংরক্ষণের।