মহুয়া
পরিত্যাক্ত ফ্ল্যাটটাতে ভূত আছে এমন গুজব আছে।
তার পাশে গোরস্থান। ভাড়া সস্তা তাও কোনো ভাড়াটিয়া আসে না। পূর্বে যারা ছিল, তারা অনেকে অনেক কিছু দেখছে। রাতের বেলা জানালায় কারে বলে দেখত। চাপা পড়া মানুষের গোঙ্গানি শুনা যাইত। শীৎকার তো। যা শুনে কাম জাগত না, লোম খাড়ায় যাইত। কে শখ করে এসব সাউন্ড শুনতে যাবে! লাস্ট টাইম রুবেলরা ছিল। মধ্যরাতে বলে ঘুম থেকে উঠে দেখে শূন্যে ভাসতেছে। যাবার সময় কোনোমতে লুঙ্গি পইরা বাইর হইছে।
সাদেকের খুব শখ ভূত দেখে। ভূত দেখার আশায় একদিন সারারাত শ্মশানে বইসা ছিল। কিচ্ছু দেখে নাই। উল্টা পরদিন তারে দেইখা বন্ধুরা দৌড়াইছে। গল্প শুনতে শুনতে ছোটবেলা থেকে ভূত আবিষ্কারে বের হওয়া তার একটা অ্যাডভেঞ্চার। ভূত-মুতে তার বিশ্বাস নাই। সে থাকে একা, লাইফে একটুস থ্রিলের দরকার আছে। একদিন নির্জন দুপুর বেলায় চইলা গেল সেই ফ্ল্যাটের ছয় তলায়। এখানে এক কিশোরী ফাঁস নিয়া আত্মহত্যা করছিল। ক’দিন কারা জানি তাশ পিটাইতে এই ফ্ল্যাট দখল নিছিল। তাদের মধ্যে মার্ডার হইছে। সাদেক আসছিল, যেহেতু ভাড়া কম। কিন্তু মালিক নতুন সিদ্ধান্ত নিছে, এই বিল্ডিং সেল করে দিবে।
ফ্ল্যাটের কলাপ্সিবল গেট লক। চারিদিকে নীরব। সে ঘুরে এসে অতি উত্তেজনার ঠেলায় কায়দা করে পিছনে পঁচা-ডোবা দিয়া লটকে লটকে ব্যালকনি দি উপরে উঠে গেল। নিজেরে বেয়ার গ্রিল ফিল লাগে। উঠে গেল কিন্তু ব্যালকনি থেকে ভেতরে ঢোকা যায় না। লাগোয়া একটা রুম আর এটাচ্ বাথ আছে। রুমের সোজা দরজা দিয়ে আরো ভিতরে দেখা যায়। ভিতরে কিছু কাঠ-কুঠ ছাড়া কিচ্ছু নাই। একটা ইন্দুরও না। উঁকি দিয়া যতটুক দেখা যায়। নাহ্, বরাবরের মতো হতাশ হইতে হয় সাদেকরে। কিছুক্ষণ সেখানেই খাড়ায়া সিগারেট ধরায় সে। হিম হিম হাওয়া আসে। ব্যালকনি থেকে বাইরের ভিউটা সুন্দর লাগতেছে। পানা-মজা ডোবাটাও ওয়ান্ডারফুল লাগে। মোবাইলে ছবি তোলে। সিগারেট শেষ করে নামতে যাবে, নিচে মানুষের আওয়াজ পায়। সে নামে না। নিজেকে আড়াল করে অপেক্ষা করে। একে তো ভূতের ব্যাপার নির্ঘাত তাকে ভূত ভেবে কেলেঙ্কারী হবে। আগুন টাগুনও দিয়া বসতে পারে। অথবা, চোর টোর মনে করে গণধোলাই দিলে ইজ্জত পাংচার। অথবা এমনও হতে পারে ওরা চোরা-কারবারি, ড্রাগস্ ডিলার। যদি সে দেখে ফেলে, যদি তারা সাদেকরে দেখে ফেলে—আর দুনিয়া দেখতে হবে না। ফানা। বুকে থুথু দেয়। গোয়েন্দা প্লট হয়ে যাচ্ছে নাকি? ব্যালকনি পুরান জিনিসে ভর্তি। সাদেক খুঁটি ছাড়া একটা ভাঙ্গা সোফায় বসে রেস্ট নেয়।
কখন ঘুমায় পড়ছে কখন সন্ধ্যা হয়া গেছে খেয়ালই করে নাই। উঠে নিচে তাকায় দেখে কেউ নাই, নামতে যাবে এমন সময় ‘গসগস’ শব্দ। ‘শব্দটা কিসের’, ‘কোনদিক থেকে আইছে’ বোঝা যায় না। সে একটু অপেক্ষা করে। কিছু খাওয়ার শব্দ। ভিতর থেকেই তো! হইতে পারে কোনো বিড়াল, কুকুর। পরক্ষণেই মনে হয় বিড়াল, কুকুর আসবে কোত্থেকে? ঢুকবে কোনদিক দিয়া? সাদেক ব্যালকনি দিয়ে উঁকি দেয়, একটা ক্ষীণ আগুনের মতো দেখা যাচ্ছে।
ধুম করে তার মনে বাড়ি খায়, তাহলে সবার মতো সেও দেখতে পাচ্ছে!? সবাই যা বলে সত্যি?! নাকি আলো, আঁধারিতে তার হেলুসিনেশান হচ্ছে? আগুনটারে ফলো করে সে। শুধু একটা আগুন বাথরুমের দিকে ঢুকে। বাথরুমের উইন্ডোর দিকে চোখ দিয়ে সাদেকের চক্ষু চড়কগাছ। ফিট খায়া যাবার দশা।
নগ্ন একটা মেয়ে। ইরোটিক ফিল আসার বদলে তার বডি দিয়া কারেন্টের একটা ঝনঝনানি বয়া যায়। লিটারেলি দাঁত ঠকঠক করে। হাতড়িয়ে ব্যালকনিতেই একটা রঙমোছা কাপড় ছিল সেটা মুখে গুঁজে কোনোমতে সামলায়। রঙের গন্ধটা গায়ে লাগে না।
এখন গোসলের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। অন্যপাশে হেলান দিয়ে বসে থাকে সাদেক। এমএমএস বানায় ফেলবে নাকি? ভূতের এমএমএস? সাহস করে বানায় ফেললে হেব্ভি মার্কেট খাবে। সে এখনো স্ট্রংলি বিলিভ করে এটা ভূত না। অন্য কাহিনী আছে। কাহিনী বাইর করতে হবে। সাদেকের ব্রেইন তছনছ খায় গেছে। গুছায় নিতে পারে না। রুমের এলুমিনিয়াম ডোর আস্তে আরেকবার ঠেলার ট্রাই করে। এইসময় তথাকথিত ভূত বের হয়। ভূত, পেত্নি, পরী, রহস্যময়ী যা-ই হোক বাথরুম থেকে বের হইছে। গুনগুন করে গানও গায়—“একটা ছেলে মনের আঙিনাতে, ধীর পায়েতে এক্কা দোক্কা খেলে, বন পাহাড়ী ঝর্না খুঁজে, বৃষ্টি জলে একলা ভিজে, সেই ছেলেটা আমায় ছুঁয়ে ফেলে।”
ভূতে এত সুন্দর গায়! আউটস্ট্যান্ডিং! এইটা কাউরে কইলে তারে বিশাল পাগল বলবে। বাট এভাবে ছাইড়া দেওন যাইব না। সাথে মেশিনপাতি কিচ্ছু নাই। পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়া আবার আসতে হবে। ডাইরেক্ট অ্যাকশন হবে।
পরদিন
সন্ধ্যা হয় হয়। সাদেক কোমর বেঁধে নামছে। সেফটি দড়ি দিয়া উপ্রে উঠে জায়গামতো পজিশন নেয়। আসার আগে সাধুরে কয়ে আসছিল। ‘কী থেকে কী হয়’—একজন সাক্ষী থাকা দরকার। সাধু এটা নিয়া লিখে জাতিরে জানাবে।
সাদেকের পিঠে ব্যাগ, ব্যাগে টুকটাক জিনিস। দেয়ালের দিকে পিঠ দিয়া ব্যাগ থেকে স্ক্রু-ড্রাইভার বের করে এলুমিনিয়ামের স্লাইড ডোরটা ফাঁক করতে যাবে—এই সময় মেয়েটা মানে কালকের ভূতটা ডোরের কাছে আসে। সে কি ধরা পড়ে গেছে? এখন কি সাদেক আক্রমণ করবে? দ্রুত ভাবে সাদেক। অনামিকা মেয়েটা স্লাইড ডোরটা খুলে হাল্কা বাতাস নেয়। তারপর ওখান থেকে সরে যায়। সাদেক কনফার্ম হয় মেয়েটা সরে গেছে। কিছুক্ষণ ওয়েট করে। এইটাই তো সে চায়। যে-ই হোক রিস্ক তো লইতেই হবে। রড দিয়া খুলতে গিয়া দেখে স্লাইড ডোর খোলা। হাল্কা খুলে দ্রুত ভিতরে ঢুকে পড়ে। সাবধানে পা ফেইলা মেয়েটারে খঁজতে খুঁজতে ঘরের ভিতরের দিকে যাইতে থাকে। কোত্থাও কেউ নাই। হাওয়ায় মিলায়ে গেলনি?!
ড্রয়িংরুমের দিকে এসে দ্রুত একটা পিলারের পিছনে লুকায় পড়ে সাদেক। কল্লাটা বের করে দেখে ভূতে চারপাশে মোমবাতি জ্বালায়ে ইয়োগারত। হাঁটু পর্যন্ত স্কার্ট বা ঘাগড়া তোলা এক পায়ের ওপর আরেক পা। দুইহাত দুইদিকে আঙ্গুলের বিশেষ ভঙ্গিমা। চোখ বন্ধ। ইয়োগাই তো। ভূত ছাড়া এই মুহূর্তে আর কিছু মনে আসে না, যদিও সাদেক নিশ্চিত ভূত না। এই সুযোগে ঝাপায়ে কি পড়বে? ইয়োগার সুবিধা নিয়া পিছন থেকে ঝাপায় পড়ল... নিজেকে ভীরু ভীরু লাগে। কুলহুআল্লাও পুরাটা মনে করতে পারে না। সাদেক ব্যাগ খুলে ক্লোরোফর্মের বোতলটা খোলে। বারবার মনে হয় ভূতটা তার পিছনেই। হঠাৎ একটা শব্দে মেয়েটা সতচকিত হয়ে ওঠে। আর অপেক্ষা করা বুদ্ধিমানের কাম হবে না মনে করে সাদেক ক্লোরোফর্মসহ ঝাপায় পড়ে। মেয়েটা জাস্ট একটা চিৎকার দিয়ে দৌড় দিতে নিলে গায়ে থাকা উপরের জামা পড়ে যায়। সাদেক তার হাত ধরে ফেলে। কিন্তু ক্লোরোফর্ম ছিটকে পড়ে। কার হাত ধরে আছে এখনো নিশ্চিত না। সাদেকের শরীর থরথর কাঁপতে থাকে। কী বলবে মেয়েটাকে? মেয়েটাও কিছুই বলে না। ব্যাপারটা কি রেইপ কেসের দিকে যাচ্ছে? সে তো মোটেই সেই টাইপ না। এটা মেয়েটারে বুঝানো উচিত। মেয়েটা শুধু গোঁ গোঁ করে। এটা মানুষও না, ভূতও না। এটা কোন জাতি? এলিয়েন জাতীয় কিছু? পরে দেখা গেল কোনো পাওয়ার টাওয়ার আছে তারে মাইরা দিল। এলিয়েনে বিশ্বাস করে সাদেক।
সাদেক : হোয়াটজ ইয়্যোর নেইম?
শালার ইংলিশই বাইর হইল কেন তার মুখ দিয়া! এলিয়েন ইংলিশ জানলে বাংলাও জানবে।
এলিয়েনটা শুধু একটা শব্দ কইল, ছারিদুয়াঁরে।
: এইটা কী ভাষা?
এলিয়েনটা বলেই যেতে থাকে ‘ছারিদুয়াঁরে, ছারিদুয়াঁরে।’
বাংলা ফিল্মের মতো ঘুরতে থাকে দুইজনে। মাটিতে গড়াগড়ি হইলে ব্যাপারটা পারফেক্ট হইত। ব্যালকনি দিয়া শিরশির বাতাস ঢুকতে থাকে। সাদেকের মনে হয় এখানে আরো কেউ আছে। হয়তো তার পিছনেই। একটা ছায়া দেখতে পেয়ে সে শট করে মেয়েটাকে পিছন দিক থেকে জড়িয়ে ধরে ঘুরে দাঁড়ালে দেখে পিছন দিকে লুঙ্গি পরা একজন মোটা কাঠ হাতে জাস্ট তার মাথায় বাড়ি দিচ্ছিল...
ষাঁড়ের মতো চিৎকার দিলে বোঝা যায় একটা ছেলে। উন্মাদ ছেলে। আলো আঁধারিতে খেলা চলতেছে। সাদেক মেয়েটার গলায় প্যাঁচায়ে রডটা ধরে। এত ভায়োলেন্ট তাকে কখনো হইতে হয় নাই। ইন ফ্যাক্ট তার ইন্টেশনও ছিল না। কী করার? এরমধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়া গেল। ছেলেটাকে দেখে মেয়েটা আরো একরোখা হয়ে গেল। ওরা কি এই দুইজন? নাকি আরো আছে? সাদেক আঁচ করার ট্রাই করে। ধস্তাধস্তি করতে গিয়া পারা গেল না, একটা কাঠের বাড়িতে মাথা ঝিলমিল করে চোখে ঝাপসা দেখতে লাগল সে।
অনেকক্ষণ পর হুঁশ ফিরলে সাদেক দেখে সে ভিতরে অন্য একটা রুমে বান্ধা। রুমটা মোটামুটি গুছানো, বিছানাপাতা সুন্দর। একটা স্টোভের মতো আছে। ওরা দুইজন তার সামনে মোটা কাঠসহ দাঁড়িয়ে। সে কী করবে? বেহুঁশের মতো থাকবে? তারা তাকে নিয়ে কী করবে? ভাবাই যায় না। দূরে ছোট্ট একটা মোমবাতির জ্বলতেছে। তাতে পোলাটার (পোলা না কি!?) মুখ ভালো বোঝা যায় না। তবে মেয়েটারে অপার্থিব সুন্দর দেখায়। আগেও অবশ্য দেখছে মেয়েটারে, খালি গায়ে। সাদেককেই শুরু করতে হবে, এইটার একটা শেষ করতে হবে। আর তাকে বুঝাইতেও হবে সে হার্মফুল না, বিশিষ্ট ভদ্রলোক।
: এক্সকিউজ মি! হু হু হুয়ার ইউ?
সে তোতলাচ্ছে কেন? এটা নার্ভাসনেসের লক্ষণ। দুর্বলতা প্রকাশ করা যাবে না। পাল্টা প্রশ্ন আসে, এবং খাঁটি বাংলায়—
: তুমি কে? এখানে কী চাও? চুরি করতে? এখানে ভূত থাকে জানো না?
ভূতে ভূতের কথা কয়! ঘাপলা আছে।
সাদেক : আমি? চুরি? না না, একদম না। আমি চোর না।
ওদের একটু ইন্সিকিউরিটিতে ফেলে দেবে নাকি?
: তোমরা এখানে কেন? এটা আমাদের...
পোলা : একদম কল্লা নামায় দেব।
একটা ঢোঁক গিলে মেয়েটার দিকে তাকাইলে দেখা যায় মেয়েটাও ফুঁসতাছে।
সাদেক : দেখো, আমি একদম সাধারণ একটা মানুষ। কোনো মারামারিতে নাই, এখানে আসার উদ্দেশ্যও খারাপ না...
ওরা একে অপরের দিকে তাকায়। বিশ্বাস না করে উপায় নাই বোধ হয়। ওদের মনোভাব বুঝার জন্য ‘পানি খাবে’—বোঝায়। দিলে ঠিকাছে না দিলে ঝামেলা আছে।
সে আবার শুরু করে : আমি ব্যাচেলর। বিশিষ্ট ভদ্রলোক। এটা ভাড়া নিতে চাইছিলাম। জানেনই তো ভূতের আছর বলে... ভূতের হইলে ভূতের আমি ডিটারমাইন আমি থাকব। সবাইরে দেখাইতে আসলাম এখানে কিছু নাই, আমি থাকতে পারি।
মেয়েটা মুখের সামনে একটা গ্লাস ধরে। পানি আসে। ছেলেটা ‘খাড়ো’ বলে একটা দা নিয়া আসে। দড়িটা কাটে, তারপর দা নিয়া সামনে খাড়ায় থাকে।
এখন ওদের হাতে অপশন থাকে সাদেকরে মাইরা ফেলা। সবাই জানবে ভূতে খাইছে। কিন্তু মনে হয় না মারবে। নিজেরা নিজেরা আলাপ করে, ‘এহন ফুয়াবিরা লই কিত্থ হদ্দে।’
অরাও বিপদে। ছেলেটা কাছে আসে,
: অই বিশিষ্ট, কী করো? এখানে কী?
সাদেক : বললাম তো, এমনেই... আমি টিচার। কম্পিউটার শিখাই, গ্রাফিক্স, প্রোগ্রাম, সফটওয়্যার...
সাদেকের ব্যাগ ঘেঁটে আইডি কার্ড, সিডি দেখে। এবার কিছুটা নমনীয় হয় অচেনা ছেলেটা।
ছেলেটা : দেখেন (আপনি করে), আমি আজিম। চট্টগ্রাম থাকি।
একটু থামে সে। তারাও অসহায় সেটা বুঝায়। বলে যেতে থাকে—
: আমি মায়ানমারে কাজ করতাম। ও মহুয়া, মায়ানমারের মেয়ে। আমরা একজন আরেকজনকে... ও আরো অনেক আগে আসছে বাংলাদেশে আমার সাথে। ওর এখন যাবার জায়গা নাই, থাকার জায়গা নাই। এই জায়গাটা আমরা বেছে নিছি। এখন আমরা বিপদে। সব ঠিক হয়ে আসলে মহুয়ারে বিয়ে করে বাসায় তুলব।
সাদেক সাহস পেয়ে কৌতূহল ঝাড়ে—
: কিন্তু ঢুকলেন ক্যামনে?
: অমা, চাবি দিয়ে। চাবি তো আগেই বানাই নিছি।
তারপর বলে, এখন আপনাকে বিশ্বাস করব কী করে?
এইসময় কোইত্থেকে ডিগবাজি দিয়ে ঢুকে সাধু। হাতে ধরা পিস্তল ওদের দিকে তাক করে। দুইজন ভয় পাইয়া যায়। ছেলেটারে উদ্দেশ্য করে বলে সাধু বলে, দা নামা।
মেয়েটা ভূত বলে চিৎকার দিতে নিয়া মুখে হাত দিয়া ফেলে। সাদেক অবাক এবং বিরক্ত হয়, হোয়াট এ টাইমিং! আরে আইলি আইলি টাইম পাইলি না!
সাধু : ব্যালকনির চিপায় আছিলাম, কাণ্ড দেখতেছিলাম।
সাদেক : আমি মাইর টাইর খায়া বেহুঁশ হয়া গেলাম, আরো কাণ্ড দেখবি?
সাধু (আস্তে আস্তে) : পিস্তলে গুলি নাই বেডা।
সাদেক ওদের দিকে তাকায়। ওরা হাত উঁচা করে দাঁড়ায়ে।
সাদেক উঠে ব্যাগ ট্যাগ গুছিয়ে চলে আসতে নেয়। আসার সময় কার্ড দেয়, নিশ্চিন্তে থাকেন। আর কোনো প্রবলেম হইলে কল দিবেন। এখানে নাম্বার আছে। থাকার প্রবলেম হলে জানায়েন। আর আমি এইখানে ভাড়া নিতে চাই। আমি আইসা পড়লে আর প্রবলেম হবে না।
কার্ডটা নেয় আজিম।
সাদেক : দড়ি বাইয়া নামতে পারুম না ভাই সিঁড়ি দিয়া নামুম।
সাধু : দড়ি দিয়া আবার, মাথা খারাপ। উঠতে গিয়া কতক্ষণ লটকায় আছিলাম জানোস?
আজিম হেসে দরজা খুলে দেয়।
সাধু : আপনাদের পরের কাহিনী শোনার অপেক্ষায় থাকলাম।