যশোরের শার্শার লক্ষনপুরে পুলিশ ও তার তিন সোর্সের বিরুদ্ধে এক গৃহবধূকে গণধর্ষনের অভিযোগ নিয়ে দায়িত্বে অবহেলা করায় শার্শা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমানকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ধর্ষণ ঘটনার পর প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ ও দায়িত্ব পালনে গাফিলতি থাকায় তাকে যশোর পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) শার্শা থানা থেকে ওসি মশিউর রহমানকে যশোর পুলিশ সুপারের অফিসে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। গণধর্ষণ ঘটনার ৫ দিনের মাথায় ওসিকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হলো।
আরও পড়ুন: ‘ধর্ষণে এসআই খাইরুলও জড়িত, ভয়ে নাম বলিনি’
তবে বিভিন্ন সূত্র ওসি মশিউর রহমানের প্রত্যাহারটি ধর্ষণ ঘটনার গাফিলতিকে কেন্দ্র করে জানালেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ‘এটি স্বাভাবিক বদলি’।
এর আগে গত (৪ সেপ্টেম্বর) গণধর্ষণের মূল অভিযুক্ত শার্শার গোড়পাড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (এসআই) খায়রুল ইসলামকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
বিদায়ী ওসি মশিউর রহমানের কর্মস্থলে শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসাবে যোগদান করেছেন ওসি আতাউর রহমান।
এদিকে, ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবেদন আদালতে তিন দিনের মধ্যে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও আরও সাত দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাউদ্দিন শিকদার। গ্রেফতারকৃত পুলিশের তিন সোর্সকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
আরও পড়ুন: গণধর্ষণ: মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে পুলিশ কর্মকর্তাকে
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ আগস্ট রাতে শার্শার লক্ষণপুরে গ্রামের বাড়ি থেকে তার স্বামী আশাদুজ্জামানকে মাদক ব্যবসার অভিযোগে তুলে নিয়ে যান এসআই খায়রুল। পরদিন তার কাছ থেকে ৫০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার দেখিয়ে তাকে আদালতে চালান দেন।
এরপর, ২ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ২টার দিকে এসআই খায়রুল ও তার তিন সোর্স ওই নারীর বাড়িতে গিয়ে তাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। পরে স্বামীকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলে এসআই খায়রুল ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এ বিষয়টি নিয়ে খায়রুলের সঙ্গে ওই নারীর কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে খায়রুল ও তার সোর্স তাকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি কাউকে জানালে তাকেও মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়।
পরদিন ৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে ধর্ষিতা নারী যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গেলে বিষয়টি প্রকাশ পায়। এরপর পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনার সত্যতা জানতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং ধর্ষিতা নারী ও অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে তিন সোর্সকে আটক দেখালেও মামলা থেকে আড়াল করা হয় মূল ধর্ষণকারী হিসাবে অভিযুক্ত এসআই খায়রুলকে।