রাষ্ট্রীয় চিনিকল সচল রাখতে ৫০০ কোটি টাকা দরকার

ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি

আসিফ শওকত কল্লোল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-23 21:40:14

রাষ্ট্রীয় চিনিকলগুলো সচল রাখতে ও শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধ করতে এ মুহূর্তে সরকারের কাছে ৫০০ কোটি টাকা ভর্তুকি চেয়েছে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন (বিএসএফআইসি)।

গত সপ্তাহে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শামিম সুলতানা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে এই ভর্তুকি চাওয়া হয়। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, লোকসানের কারণে এ মুহূর্তে মিলের শ্রমিক কর্মচারীদের নিয়মিত বেতন-ভাতা ও বোনাস বাবদ ১২৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা, অবসরোত্তর পাওনা বাবদ ২২৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা, সরবরাহকারীদের বকেয়া  ৫০ কোটি টাকা এবং ব্যাংকের মাসিক কিস্তি বাবদ ৭০০ কোটি টাকা প্রয়োজন। তবে শুধু ১৫টি মিল সচল রাখতে শ্রমিকদের পাওনা এবং আসন্ন আখ মাড়াই মৌসুমে বিভিন্ন সামগ্রী ও আখ ক্রয় বাবদ আপাতত ৫০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। কারণ বিএসএফআইসি চলতি মৌসুমে ১০ লাখ মেট্রিক টন আখ সরকারি মিলগুলোতে সরবরাহ নিশ্চিত করতে চায়।

চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, সরকারের ভিশন-২০২১ ও সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা অনুসারে বিএসএফআইসি ই-গেজেট ও ই-পুঁজি বাস্তবায়নে সহায়তা করে আসছে। এ জন্য ২০১৬-১৭ মাড়াই মৌসুম থেকে  চাষিদের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আখের মূল্য পরিশোধ করে আসছে। এছাড়াও চিনিকলগুলোর ওজন যন্ত্র ডিজিটাল করার কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ফলে চাষিদের মাঝে আখ চাষে উৎসাহ এবং উৎপাদন বেড়েছে।

জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় মালিকাধীন ১৫টি চিনিকল এখনও লোকসান দিচ্ছে। চলতি বছর ১৫টি চিনি কলের লোকসানের পরিমাণ দাঁড়ায় এক হাজার ৭০০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। তবে কয়েক মাস আগে বিএসএফআইসি কর্তৃপক্ষকে ৩৮০ কোটি টাকা ভর্তুকি দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। ফলে চিনিকল শ্রমিকদের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফেরে। তবে বাকি এক হাজার ৩২০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ভর্তুকি দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা অর্থ মন্ত্রণালয়ের নেই বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে অবশ্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বিভিন্ন সভা সেমিনারে ভর্তুকি দিয়ে চিনি শিল্প সচল না রাখার পক্ষে মত দেন। তবে নির্বাচনের আগে শ্রমিকদের বশে রাখতে ভর্তুকি দেওয়া ছাড়া অর্থ মন্ত্রীর আর কোনো উপায় ছিল না।

উল্লেখ্য, সরকারি ১৫টি চিনিকলে মোট ১৮ হাজার শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা কর্মরত আছে। এছাড়াও ৫ লাখ ইক্ষু উৎপাদন পরিবাবসহ প্রায় ৪৫ লাখ লোক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দেশের চিনি শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। বিএসএফআইসি’র অধীনে থাকা চিনিকলগুলোর বার্ষিক মোট উৎপাদন ক্ষমতা ২ লাখ ১০ হাজার টন। তবে বার্ষিক উৎপাদন কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৬০ হাজার টনে। দেশে প্রতিবছর চিনির চাহিদা ১৫ থেকে ১৬ লাখ টন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর