কোনো কোনো রাতে মানুষ অপেক্ষায় থাকে, যেন রাতটি শেষ না হয়। মরমী শিল্পী বারী সিদ্দিকীর মতো গভীর বেদনায় উচ্চারণ করে, ‘রজনী হইস না অবসান/আজ নিশিতে আসতে পারে বন্ধু কালাচাঁন।’
মানুষের অন্তর্গত অপেক্ষার প্রহরে বারী সিদ্দিকীর গান মর্মে দোলা দেয়। মন উচাটন করা সেসব গানে মানুষ হৃদয়ের সব যাতনা ভুলে যায়। জীবনের সব দুঃখ-কষ্ট একাকার হয় গানে গানে।
বারী সিদ্দিকী সুরের আকাশে এমনই এক ‘সুয়া চান পাখি’। হিজলে তমালে ছাওয়া হাওরের বুক থেকে গান নিয়ে ছড়িয়েছেন সারা বাংলায়। জল ছলছল লিলুয়া বাতাসে ভেসে সেই অপরূপ গানে স্পর্শ করেছেন বাঙালির সত্ত্বা।
বারী সিদ্দিকী আত্মার গভীর থেকে ভেসে আসা গানকে করেছেন জীবনের ধ্রুবতারা।
তার গান যেন হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া রাশি রাশি বিষাদের পুঞ্জিভূত মেঘমালা। আধুনিক-যান্ত্রিক জীবনের বেদনায় তিনি উচ্চারণ করেছেন মানুষের প্রেম ও বিরহের অপরূপ কথামালা।
গেয়েছেন, ‘আমার গায়ে যত দুঃখ সয়, বন্ধুয়ারে করো তোমার মনে যাহা লয়’।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ শিক্ষা ও আধুনিক জীবনের যাবতীয় আয়োজনকে তিনি মিশিয়ে দিয়েছিলেন মরমী গানের কথা ও সুরের ঝরণাধারায়।
গান নিয়ে বারী সিদ্দিকী অসামান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং চর্চা করেছেন। শুধু গান নয় অসাধারণ সুরেলা বাঁশি বাজাতেন তিনি।
গায়ক, শিল্পী, সঙ্গীতকার বারী সিদ্দিকীর মধ্যে সমাবেশ ঘটেছিল বহুগুণের। একজন সম্পূর্ণ সঙ্গীত-ব্যক্তিত্বের উজ্জ্বল প্রতিচ্ছবি তিনি।
তিনি বহু মানুষের হৃদয়স্পর্শকারী অনন্য শিল্পী।
উত্তর-পূর্ব বাংলার উড়াল পঙ্খির দেশের তিনি ছিলেন গানের একটি ‘সুয়া চান পাখি’। হিজলে তমালে ছাওয়া আদিঅন্তহীন হাওরের বুক থেকে গান নিয়ে তিনি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সারা বাংলায়। জল ছলছল লিলুয়া বাতাসে ভেসে সেই অপরূপ গানে গানে স্পর্শ করেছিলেন সমগ্র বাংলাদেশ এবং বিশ্বব্যাপী বাংলাভাষী মানুষদের।
বৃহস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) শিল্পী বারী সিদ্দিকীর জন্মদিন। ১৯৫৪ সালে নেত্রকোনায় জন্মগ্রহণ করেন গুণী এই শিল্পী। তার জন্মদিনে বার্তা২৪.কমের বিনম্র শ্রদ্ধা।