দলছুট একটি হনুমান গত কয়েকদিন ধরে বগুড়া শহর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। কখনও গাছের ডালে আবার কখনও বিল্ডিংয়ের ছাদে ঘুরে বেড়াচ্ছে হনুমানটি। হনুমানটি যখন যে এলাকায় যাচ্ছে সেখানে উৎসুক জনতা ভিড় করায় আতংকিত হনুমানটি গাছের পাতার আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রাখছে।
আবার কেউ কেউ ঢিল মেরে হনুমানটিকে ভয় দেখাচ্ছে। এভাবে গত ৪দিন ধরে হনুমানটি স্থান পরিবর্তন করে শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে অবস্থান নেয় শহরের পিটিআই মোড় এলাকায় জেলা জজ বাসভবনের অভ্যন্তরের একটি তেঁতুল গাছে। এর আগে সকালের দিকে ঠনঠনিয়া তেঁতুল তলা এলাকায় একটি বাড়ির ছাদে বিভিন্ন ফল খেতে দেয় বাড়িওয়ালা। ক্ষুধার্ত হনুমানটি কলা ও আপেল দেখে মুহূর্তের মধ্যে সেটা খেয়ে নেয়।
গত মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর) সকালের দিকে বগুড়া শহরের ফুলবাড়ি এলাকায় সরকারি মজিবুর রহমান মহিলা কলেজ সংলগ্ন সুবিল খাল পাড়ে মেহগনি গাছে হনুমানটিকে স্থানীয় লোকজন দেখতে পায়।
বুধবার সকালে হনুমানটি দত্তবাড়ি এলাকায় চলে আসে।দত্তবাড়ি ও কাটনারপাড়া এলাকায় বিভিন্ন গাছে এবং বাসা বাড়ির ছাদে দাপিয়ে বেড়ানোর পর বৃহস্পতিবার সকালে দেখা যায় শহরের টিনপট্টি এলাকায়।
দিনের বেলা গাছে-গাছে ঘুরে বেড়ালেও হনুমানটি প্রতিরাতেই স্থান পরিবর্তন করছে। শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে শহরের ঠনঠনিয়া তেঁতুলতলা এলাকায় একটি বাড়ির ছাদে আশ্রয় নেয়। সেখানেই তাকে কলা,আপেলসহ বিভিন্ন ফল খেতে দেয় বাড়ির মালিক। দুপুরের দিকে হনুমানটি আশ্রয় নেয় জেলা জজ বাসভবনের একটি তেঁতুল গাছে।
বগুড়ার পরিবেশবাদী সংগঠন তীরের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান বার্তা ২৪.কমকে জানান,মাস খানেক আগে হনুমানটি শিবগঞ্জ উপজেলার মাঝিহট্ট এলাকায় একটি গাছে দেখা যায়। সেখানে গ্রামের লোকজন হনুমানটিকে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছিল। ওই সময় হনুমানটির পায়ে কাটা দাগ ছিল। বিষয়টি বন বিভাগকে জানানোর পর তারা আর কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
এরপর হনুমানটির আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। গত ৪দিন হল হনুমানটির আবার দেখা মিলেছে।
তিনি বলেন, 'হনুমানটি লোকালয়ে আসার কারণে মানুষজন আতংকিত হচ্ছে। আবার মানুষের ভিড় দেখে হনুমানটিও ভয় পাচ্ছে। তীর এর সদস্যরা হনুমানটি পর্যবেক্ষণ করছেন যেন কেউ তার ক্ষতি না করে।'
রাজশাহী বিভাগীয় বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ কার্যালয়ের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির বার্তা২৪.কমকে জানান, 'হনুমানটিকে উদ্ধার করার প্রয়োজন নাই। মানুষ তাকে ভয়ভীতি না দেখালে স্বেচ্ছায় তার গন্তব্যে চলে যাবে।'
এরআগে বগুড়ার শাজাহানপুর থেকে একটি হনুমান উদ্ধার করে গাজীপুর বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। কিছুদিনের মধ্যে হনুমানটি সেখান থেকে চলে গেছে। হনুমানটিকে কেউ যেন বিরক্ত না করে এজন্য জনসচেতনতা মূলক প্রচার চালাতে হবে বলেও জানান তিনি।