এলাকায় প্রতিষ্ঠান গড়ার কারিগর হিসেবে খ্যাত আলহাজ আব্দুল মান্নান সরকার নিজ নামে এ পর্যন্ত প্রায় ২৫টি স্কুল, মাদ্রাসা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন। এর ফলে আব্দুল মান্নান সরকার এলাকায় বেশ সুনাম ও খ্যাতি অর্জন করেছেন।
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের কিশামত খেজু গ্রামের মৃত গেন্দা মামুন সরকারের ছেলে আব্দুল মান্নান সরকার। বর্তমানে তিনি পিতার নামে গড়া প্রতিষ্ঠান কিশামত খেজু গেন্দা মামুন ব্যাপারী দাখিল মাদ্রাসায় সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।
আব্দুল মান্নান সরকার নিজ নামে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করাসহ তার পিতা, মাতা, শ্বশুর ও ভাইয়ের নামেও একাধিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
আব্দুল মান্নান সরকারের নামে প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, উত্তর নুরপুর মো. আব্দুল মান্নান সরকার পিসি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা, কিশামত বড় বাড়ি এমএ পিসি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা ও বড় নুরপুর মো. আব্দুল মান্নান সরকার পিসি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা। পিতার নামীয় প্রতিষ্ঠান হচ্ছে- কিশামত খেজু জিএমবি দ্বি-মূখী দাখিল মাদ্রাসা ও কিশামত খেজু গেন্দা মামুন ব্যাপারী দাখিল মাদ্রাসা। মাতার নামে- কিশাতম খেজু মহিরন নেছা বালিকা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রসা। ভাইয়ের নামে- আজিজল হক হারিয়ার কুটি বালিকা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা। শ্বশুরের নামে প্রতিষ্ঠান হচ্ছে- মধ্য দামোদরপুর শহর উদ্দিন বালিকা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা।
এছাড়াও তিনি কিশামত খেজু সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টির তৎকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠালগ্নে নিজের শয়ন ঘর অপসারণ করার পর ওই ঘরটি স্কুলঘর হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন। সবমিলে অত্রলাকায় প্রায় ২৫টি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত করেছেন আব্দুল মান্নান সরকার। সেই সাথে ২০০২ সালে নিজের দুই শতক জমি দান করে প্রতিষ্ঠিত করেন কিশামত খেজু ডাকঘরটি। এখানে তার স্ত্রী আলহাজ মোছা. সলুকজান বেগম পোস্টমাস্টার হিসেবে কর্মরত আছেন। তার দুই কন্যা ও জামাইরাও শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত। তাঁর পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে প্রায় ২০জন ব্যক্তি শিক্ষকতা পেশায় আছেন। তিনি বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসা ও মসজিদে সভাপতি হিসেবেও যথারীতি দায়িত্ব পালন করেছেন।
স্থানীয় শহিদুল ইসলাম জানান, আব্দুল মান্নান সরকারের কর্মকাণ্ড ব্যতিক্রম। তার তুলনা হয় না। এখনও তিনি প্রতিষ্ঠান সমূহে এসে কার্যক্রম তদারকি করেন। শিক্ষার প্রতি তাঁর প্রবল আগ্রহ আমাদের উজ্জীবিত করে। এত বড় ত্যাগ আমাদের সমাজে এ পর্যায়ের মানুষের মধ্যে খুব একটা দেখা যায় না। মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায় তিনি প্রত্যক্ষ অবদান রেখেছেন। নিজের সংসারের চেয়ে অন্যের উপকার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকেন তিনি।
বৃদ্ধা সাহেব উদ্দিন বলেন, শৈশব থেকে মানুষের বিপদ-আপদে পাশে গিয়ে দাঁড়াতেন আব্দুল মান্নান সরকার। সে সময়ে টাকা দেওয়ার সামর্থ্য না থাকলে কায়িক শ্রম দিয়ে উপকার করতেন। তাকে নিয়ে আমরা খুব গর্ববোধ করি। তার চেষ্টাতেই আজ শিক্ষার আলোয় আলোকিত এই এলাকা। এমন নিঃস্বার্থ মানুষ সমাজে বিরল।
আব্দুল মান্নান সরকার বলেন, এলাকার শিক্ষিক ব্যক্তির কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার জন্য অনেক স্বপ্ন দেখেছিলাম। এ স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে প্রায় ২৫টি প্রতিষ্ঠান নিজ প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত করেছি। সম্প্রতি হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা রয়েছে।