সিগন্যাল পেয়ে দাঁড়ানোর পর, কাছে এসে প্রথমে সালাম দিয়ে বললেন, ‘শুভ সকাল’। তারপর জানতে চাইলেন আপনার ব্যাগে কি আছে?
প্রথমে সিগন্যাল পেয়ে ভেবেছিলাম, আহা আজকের দিনটাই বুঝি খারাপ যাবে। সকালের যাত্রাটা খারাপ দিয়ে শুরু হলো। কিন্তু না আর্মড পুলিশের এই ব্যবহারে মনটা ভরে গেল। সচরাচর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্টে নানা রকম তিক্ত অভিজ্ঞতার জনশ্রুতি রয়েছে।
চেকপোস্টে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় মনটা ভরে উঠল। আমরাতো এমন আচরণই চাই জনগণের সেবক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে। অথচ কি দেখি গাড়ির চেকিংয়ের সময় দু-একজন খারাপ আচরণ করে যার জন্য বদনাম হয় পুরো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।
শুক্রবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টায় রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল এন্ড কলেজের সামনে এই ঘটনা মনের মধ্যে দাগ কেটে গেল। সত্যিই আমার দেশের পুলিশ অনেক বদলে যাচ্ছে। যার এই বিনয়ী ব্যবহারে মনটা ভালো হয়ে গেল, তিনি হচ্ছেন কনস্টেবল ‘মমিন’।
বাড়ি মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা পুরান বাউসিয়া গ্রামে। পাঁচ বছর আগে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। এখন আছেন উত্তরা জোনে। সচরাচর গুলশান, বারিধারা ও ডিপ্লোম্যাটিক জোনে দায়িত্ব পালন করেন।
হ্যাঁ, এমন লোককেই তো ডিপ্লোম্যাট জোনে রাখা উচিত। না হলে দেশের মুখ উজ্জ্বল হবে কি করে?
দাঁড়িয়ে যখন তার কার্যক্রম দেখছিলাম। মাসুদ রানা নামের এক বাইকারও এমন অমায়িক ব্যবহারে সিক্ত হন। তিনিও যাওয়ার সময় অনেক ধন্যবাদ দিয়ে বিদায় নেন।
মাসুদ রানা বলেন, ‘আমরা কি খুব বেশি চাই। আমি বলবো চাই না।‘
তিনি বলেন, ‘অনেক সময় দেখি বাইকের কাগজ চেয়ে এমন আচরণ করেন। তুই তোকারি করে বসেন, তখন নিজেকে বড়ই অসহায় মনে হয়। যেন আমি কোনো মহা অন্যয় করে ফেলেছি। আবার অনেক সার্জেন্ট বাইকের ওপর একপায়ের হাঁটু তুলে দিয়ে মাস্তানি স্টাইল দেখান।‘
মাসুদ রানা বলেন, ‘বিমানবালার মত ঠোঁটের কোনে হাসির আভা থাকতে হবে এমন দাবি করি না। আমরা চাই মমিনদের মত, সামান্য একটু ভদ্র ব্যবহার। পুলিশ বাহিনীও যে বদলে যাচ্ছে এটাই তার নমুনা। আমি আশাবাদী মানুষ আশা নিয়ে বাঁচি, ধন্যবাদ ‘মমিন’ তোমার আলোয় আলোকিত হোক গোটা পুলিশ বাহিনী। জনগণও হোক সহযেগিতাপূর্ণ।‘