সহিদুল হোসেন (৪০) পেশায় মাছ শিকারী, বড়শি দিয়ে মাছ ধরেন তিনি। মাছ ধরার জন্য পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করতে জামালপুর জেলা থেকে কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলায় এসেছেন। সম্প্রতি উপজেলার আমবাড়ী এলাকায় এই পিঁপড়া সংগ্রাহক—সাহিদুল ইসলামের সাথে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।
বাঁশের লম্বা লাঠির মাথায় ছাতা ঝুলিয়ে রাস্তা চলার সময় হঠাৎ চোখে পড়ে তাকে। ছাতায় অসংখ্য পিঁপড়ার ডিম। প্রথমে কয়েকটি ছবি তুলে নাম ও বাড়ি কোথায় জানতে চাইলে তিনি জানান জামালপুর থেকে এসেছেন। এত দূরে কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের এলাকায় পিঁপড়ার ডিম খুব বেশি পাওয়া যায় না তাই এখানে এসেছি সারাদিন ডিম সংগ্রহ করে রাতেই আবার বাড়িতে ফিরব।’
বড়শি দিয়ে কেমন মাছ ধরেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আগের মতো এখন মাছ পাওয়া যায় না, গত বছর ৬ কেজি ওজনের একটি বোয়াল মারছিলাম।’ তিনি আরো বলেন, ‘মাছ ধরা শখের পেশা, পাই না-পাই নদী বিলে বড়শি নিয়ে মাছ ধরতে যাই। ভাগ্য ভালো থাকলে মাছ ধরে না হলে নাই।’
স্থানীয় গ্রামের মানুষদের সাথে কথা বলে জানা গেছে টোপ (বড়শিতে লাগানো খাদ্য) হিসেবে কেঁচো, পুঁটি মাছ, ময়দা, পিঁপড়ার ডিম ব্যবহার করা হয়ে থাকে। পিঁপড়ার ডিম দিয়ে টোপ বানালে মাছ বেশি আকৃষ্ট হয়। তাই বড়শি দিয়ে যারা মাছ ধরে তাদের কাছে পিঁপড়ার ডিমের খুবই কদর। বর্ষা মৌসুম ও শীতকাল আসলে গ্রামে বেশি দেখা যায় পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহকারীদের।
ডিম সংগ্রহের পদ্ধতি হচ্ছে লম্বা বাঁশের মাথায় দড়ি দিয়ে ছাতা বেঁধে দেওয়া হয়। যে গাছে বড় লালপিঁপড়া গাছের পাতা মুড়িয়ে বাসা বাঁধে, তার ভেতর বাঁশের লাঠির মাথা দিয়ে নাড়াচাড়া করলে ডিম থাকলে বাসা ভেঙ্গে ছাতার ভেতর ডিমগুলো এসে পড়ে। পরে পিঁপড়া থেকে ডিম আলাদা করে সংগ্রহ করে মাছ ধরার কাজে ব্যবহার করা হয়।