শীত মৌসুমে বেড়ে যায় গ্রামাঞ্চলের বিল ও খোলা মাঠে অতিথি পাখির আনাগোনা। এই সুযোগ টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে অভিনব কায়দায় পুঁটি মাছের পেটে বিষ দিয়ে নির্বিচারে বক শিকার করছে এক শ্রেণির অসাধু শিকারিরা। খাওয়ার জন্য এই বক শিকার হয়। সেইসঙ্গে বিষযুক্ত মাছ খেয়ে শিকারির হাতে ধরা না পড়া বকগুলো মারা যাচ্ছে।
উপজেলার চরনিকলা বিল, কয়েড়া ধোপা চড়া বিল, আমুলা বিলসহ বিভিন্ন বিলে খোলা মাঠে অল্প পানিতে মাছ শিকারের জন্য প্রচুর পরিমাণে বকসহ অন্যান্য দেশি-বিদেশি পাখি আসে। এসব বিলে ও খোলা মাঠে বিষ জাতীয় দ্রব্য পুঁটি ও ছোট চ্যালা মাছের পেটে ঢুকিয়ে ছিটিয়ে দেওয়া হয়। সেগুলো বক ও অন্যান্য পাখি অসুস্থ হয়ে পড়ে।
এরপর অপেক্ষারত শিকারিরা বকগুলো ধরে জবাই করেন। পরবর্তীতে এই বক দিয়ে ভুড়িভোজের আয়োজন করে এবং অনেকে স্থানীয়দের কাছে বিক্রি করে থাকেন।লাইলোনের সুতো দিয়ে তৈরি ফাঁদে পাখি শিকারের ঘটনা ঘটছে হরহামেশাই। এছাড়া ব্লাটাল ও মারবেলের মাধ্যমেও দূর থেকে বক শিকার করে শিকারিরা।
শিকারিরা জানান, শীতের মৌসুমে শখ করে বিল থেকে বক, ঘুঘু, বালি হাঁস শিকার করেন তারা। বিষ জাতীয় দ্রব্য বা ব্লাটালের মাধ্যমে দূর থেকে শিকার করা যায়। তবে, বিষ খেয়ে অসুস্থ ও ব্লাটালের মাধ্যমে ছোঁড়া মারবেলের আঘাতে আহত হয়ে শিকার মাটিতে নেতিয়ে পড়ে। অনেকে সেগুলো পড়ে জবাই করে। অনেকে আবার বিক্রি করেন।
ভারই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব সৈয়দ মাসুদুল হক টুকু বলেন, সঠিক নজরদারি ও জনসচেতনতার অভাবে পাখি শিকার বেড়েছে। প্রচলিত আইনে পাখি শিকার দণ্ডনীয় অপরাধ জেনেও তারা বিরত থাকছে না। যারা পাখি নিধনে বাঁধা প্রদান করে শিকারিরা তাদের হয়রানি করে। এসব রোধে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশন (ভূমি) ফাহিমা বিনতে আখতার জানান, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী পাখি শিকার ও নিধন আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। পাখি নিধন বা শিকাররোধে অভিযান চালানো হবে। এছাড়া কোনো অভিযোগ পেলে অসাধু পাখি শিকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।