স্মার্টফোন ছাড়া জীবনে চলাচল করার কথা কল্পনাও করা যায় না। তবে কোনো কিছুই অতিরিক্ত ভালো নয়। এখন মোবাইলের ব্যবহার এত বাড়ছে যে, প্রায় সবারই আসক্তিতে পরিণত হচ্ছে।
ঘরের সবার মোবাইল আসক্তি কমাতে এক অভিনব পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন এক মা। মঞ্জু গুপ্তা নামের এই নারী একজন ভারতীয় নাগরিক। তিনি একটি চুক্তিপত্র বানিয়েছেন। সবাইকে সেই চুক্তিপত্রে সাক্ষর করতে বাধ্যও করা হয়। ৩টি মূল শর্ত চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়।
মঞ্জু লক্ষ্য করেন, সকলের মধ্যের সম্পর্কের জোর কমতে শুরু করেছে। তার চেয়ে সবার মোবাইল ফোনের প্রতি টান বেশি। এতে অন্যান্য সদস্য এবং সন্তানদের সাথে তার দূরত্ব তৈরি হচ্ছে।
ঘটনার সূত্রপাত হিসেবে জানা যায়, মঞ্জুর সন্তানরা তাকে নেটফ্লিক্সের একটি সিনেমা দেখায়। যার নাম, ‘খো গায়ে হাম কাহা?’ এই সিনেমা দেখে তার মনে হয়েছে, সন্তানদের কাছে; তার থেকে ‘লাইক’-এর গুরুত্ব বেশি। তাই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, রাগের মাথায় এই সিদ্ধান্ত নেন নি। গুপ্তা পরিবারের সবার মোবাইল আসক্তি কমাতে এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন তিনি। একটি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পপেপারে চুক্তিটি লেখা হয়েছে। হিন্দি ভাষায় শর্তগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়।
প্রথমত, সকালে উঠেই মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে না। আগে সনাতন ধর্মমতে, সূর্যদেবের আরাধনা করতে হবে। সূর্যের রশ্নি গায়ে না লাগিয়ে কেউ মোবাইল সকালে ধরতে পারবে না।
দ্বিতীয়ত, খাবার টেবিলে সবাই একসাথেই খেতে বসবে। অবশ্যই তখন মোবাইল হাতের কাছে রাখা যাবে না। ২০ কদম দূরে ফোন রেখে টেবিলে খেতে আসতে হবে।
সর্বশেষ, টয়লেটে যাওয়ার সময় কেউ ফোন নিয়ে যেতে পারবে না। মোবাইল নিয়ে টয়লেটে গিয়ে ‘রিলস’ দেখা বন্ধ করার উদ্দেশ্যে এই শর্ত রেখেছেন তিনি।
কেউ এই শর্ত ভাঙলে, ১ মাস তাকে বাইরে থেকে কোনো অ্যাপের মাধ্যমে খাবার আনতে দেওয়া হবে না। এছাড়াও যে নিয়ম লঙ্ঘন করবে, তার ফোন কেড়ে নোকিয়া ১১০০ ফোন ধরিয়ে দেওয়া হবে।
মঞ্জুর ভাগিনেয়ী, এই চুক্তিপত্রের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। সেখানে অনেকেই তাদের অনুভূতি প্রকাশ করে মন্তব্য করেন। হাস্যরসাত্নকভাবেই প্রচারিত হচ্ছে এই ঘটনা। তবে, এসব শর্তের চুক্তিতে আপনিও কি সাক্ষর করতেন?
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি