ঝিনাইদহের মাঠে মাঠে এখন চলছে কৃষকের বোরো চাষের ব্যস্ততা। শীতের হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে এ এলাকার কৃষকরা এখন কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন। বোরোর জমিতে চাষ, সেচ প্রদান ও জমিতে ধান লাগাতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তারা। এদিকে, ফলন ভালো পেতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে নানা পরামর্শ।
ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে এ বছর জেলার ৬ টি উপজেলায় ৯২ হাজার ৫শ ৬০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ঠিক করা হয়েছে ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৬শ ৪৩ মেট্রিক টন চাল। ইতিমধ্যে জেলার প্রায় ৩০ ভাগ জমিতে রোপণ করা হয়েছে বোরো ধান। ফলন ভালো পেতে তাইতো তীব্র শীত উপেক্ষা করে চাষাবাদে ব্যস্ত কৃষকরা।
জেলা সদর, শৈলকুপা, মহেশপুর ও কোটচাঁদপুরসহ ৬ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চলছে বোরো আবাদ। কলের লাঙল দিয়ে মাটি চাষ করে তৈরি হচ্ছে বোরো ক্ষেত। দেওয়া হচ্ছে জমিতে সার ও সেচ। শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় সেচ পাম্প থেকে পানি নিচ্ছেন চাষিরা। আবার কোথাও সারিবদ্ধভাবে রোপণ করা হচ্ছে ধানচারা। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলনের ব্যাপারে আশাবাদী তাঁরা। ধান উৎপাদনের খরচ বেড়ে গেলেও উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তাঁরা। ধানের উৎপাদিত ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান কৃষকরা।
সদর উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের কৃষক আতিয়ার রহমান বলেন, এ মৌসুমে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পানি পাওয়া যায় না। বোরো ধান লাগানো থেকে শুরু করে ঘরে তোলা পর্যন্ত ৩ হাজার টাকার পানি প্রয়োজন হয়। এছাড়াও অন্যান্য খরচ মিলে বিঘা প্রতি ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা খরচ হবে। কিন্তু ধানের দাম না পেলে আমরা লাভবান হতে পারব না। তাই ধানের দাম ১ হাজার টাকা মন করার দাবি তার।
মহেশপুর উপজেলার বজরাপুর গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান বলেন বিদ্যুৎ ও ডিজেল সংকট একটি বড় সমস্যা। তিনি বলেন, ‘শুকনো মৌসুমে বোরো ধানের জমিতে দিনে তিনবার করে পানি দিতে হয়। তখন যদি ডিজেল সংকট থাকে, তাহলে আমরা বিপদে পড়ে যাব।’ তিনি নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ও ডিজেলের সঠিক সরবরাহ চান তিনি।
এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ জিএম আব্দুর রউফ বলেন, কৃষকদের বোরো আবাদ করতে আদর্শ বীজতলা, সারের সঠিক ব্যবহারসহ নানান পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।