অনন্য প্রজাতির পশু-পাখির বাসস্থানের প্রসঙ্গ যখন আসে, তখন শীর্ষে নাম থাকে অস্ট্রেলিয়ার। এই খবরে দর্শনার্থী এবং বন্যপ্রাণী-প্রেমীদের চোখ হয়তো অ্যাডভেঞ্চারের আনন্দে চকচক করে ওঠতে পারে। তবে, স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য জীবনের প্রতি মুহূর্ত একেকটি চ্যালেঞ্জ। বিপদের কুড়াল মাথার উপর ঝুলিয়েই তাদের জীবন-যাপন করতে হয়।
বেশিরভাগ অস্ট্রেলিয়ানদের প্রধান উদ্বেগের কারণ, বাসিন্দারা প্রায়ই বিষাক্ত সাপের সম্মুখীন হন। বাড়িতে, অফিসে নানা জায়গা থেকে হুটহাট বিভিন্ন প্রজাতির লুকিয়ে থাকা সাপ উদয় হয়। বিশ্বের সবচেয়ে বিষাক্ত সাপের তালিকার ২য় স্থানকারী ‘ইস্টার্ন ব্রাউন’ সাপের আধিক্য দেখা যায় অস্ট্রেলিয়ায়। চলতি মাসেই দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার এক পরিবারের ফ্রিজ থেকে এই প্রজাতির সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। এর ঠিক ২ দিন পরেই, আরেকটি সাপ একজন নারীকে দংশন করে।
গতকাল আবার একজন নারী ঠিক একই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন। তার ৩ বছর বয়সী শিশুর ড্রয়ার থেকে কাপড় নিতে গিয়ে তিনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কারণ, বিষাক্ত এক সাপ সেখানে অপেক্ষা করছিল।
নিউইয়র্ক পোস্টে এই ঘটনার উপর রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ান সাপ শিকারী ‘মার্ক পেলে’ এই সাপ শিকার করতে বাচ্চাদের বেডরুমে গিয়েছিলেন। ৫ ফুট লম্বা এই সাপের রঙ হালকা বাদামী। পেলি ফেসবুকে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। সেখানে তিনি সাপ আবিষ্কার এবং উদ্ধারের ঘটনার বর্ণনা করেন।
শিশুর মা, সাপটিকে লক্ষ্য না করেই ড্রয়ারে নিয়ে গিয়েছিলেন। ফেসবুকে অনেকেই এই ঘটনায় অবাক হয়ে মন্তব্য প্রকাশ করেছেন। সেই প্রেক্ষিতে পেলি জানিয়েছেন, এই জাতের সাপ ওজনে হালকা হয়। তাই অমনোযোগী থাকলে, সাপের ব্যাপারে টের পাওয়া যায়না। তাই যেকোনো কারো ক্ষেত্রেই এরকম ঘটনা ঘটতে পারে।
‘ইউনিভার্সিটি অফ মেলবর্ন’-এর ‘অস্ট্রেলিয়ান ভেনম রিসার্চ ইউনিট’-এর তথ্য অনুসারে, ইস্টার্ন ব্রাউন সাপের বিষ বিশ্বব্যাপী দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিষাক্ত। এদের বিষে শক্তিশালী নিউরোটক্সিন রয়েছে। এর প্রভাবে ক্রমান্বয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির হৃদয়, ফুসফুস এবং ডায়াফ্রামের স্নায়ুগুলো অবশ হতে শুরু করে। অবশেষে শ্বাসরোধের কারণে রোগীর মৃত্যু হতে বাধ্য।
‘কুইন্সল্যান্ড পরিবেশ ও বিজ্ঞান বিভাগ’ বলে, এই প্রজাতির সাপ দিনের বেলায় সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে। বেশি উত্তেজিত অবস্থায় এরা কামড়াতেও পারে। অস্ট্রেলিয়ার পূর্বাংশ জুড়ে এদের আধিক্য দেখা যায়। বিশেষ করে ইঁদুর জাতীয় প্রাণি শিকারের খোঁজে কৃষিজমি এবং শহরতলির এলাকায়িএরা ঘুরে বেড়ায়।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি