মোবাইল ফোন এখন নিত্যদিনের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় যন্ত্র। যোগাযোগ করা বাদেও পড়ালেখা, কর্মক্ষেত্র, জরুরি তথ্য সরাবরাহ-সবকিছু এর মাধ্যমেই হয়। তাই পড়ালেখায় সাহায্য হবে ভেবে বাবা-মা অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়েদের হাতেও মোবাইল তুলে দেয়। নিম্নবিত্ত পরিবারের বাবা-মা নিজেদের সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে হলেও সন্তানের সুখ চায়।
তবে ইন্টারনেটের অজানা দুনিয়ায় অবুঝ শিশু-কিশোররা পড়তে পারে নানারকম ফাঁদে। না বুঝেই এমন কিছুতে তারা ফেঁসে যেতে পারে, যার থেকে বেরিয়ে আসা মুশকিল। ভারতের উত্তর প্রদেশে লক্ষ্ণৌতে বান্থরা গ্রাম। সেখানে এক কিশোর আত্মহত্যা করেছে। নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয় ১০ম শ্রেণীর সেই ছাত্র। কারণ, সেই মোবাইল ফোন সম্পর্কিত!
একটি ভিডিও গেম খেলতে গিয়ে তার টাকার প্রয়োজন হয়। গেমে সে টাকা হেরে যায় কিশোর। খেলায় হেরে যাওয়া টাকা শোধ করতে হতো। তাই চাচাতো ভাইয়ের থেকে ১০ হাজার রুপি ধার করেছিল সে। কিন্তু কিছুতেই ভাইয়ের টাকা শোধ করতে পারছিল না। তার বাবা খুবই সামান্য বেতনের চাকরি করে। একজন সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে চাকরি করে সে। যে বেতন পায় তাতে কোনোরকমে সংসার চলে।
এতগুলো টাকা জোগাড় করতে তাকে বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল। পরিবারের লোকজন যখন ধার করা টাকার ব্যাপারে জানতে পারে, তখন তারা রাগ প্রকাশ করে। প্রতিবেশীদের মতে, ছেলেটির বাবা তার গায়েও হাত তোলে। কোনোভাবেই টাকা জোগাড় করতে না পেরে ভেঙ্গে পড়ে ছেলেটি। কোনো উপায় না পেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় সে।
নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল ১৭ বছর বয়েসি কিশোর। তাকে বাঁচানোর চেষ্টাও করা হয়ে। লক্ষ্ণৌয়ের সিভিল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক জানান, তার শরীরের অধিকাংশ স্থান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। প্রায় ৭০ শতাংশ শরীরই পুড়ে গেছে। অবশেষে ছেলেটিকে আর বাঁচানো যায়নি।
বান্থরা পুলিশ স্টেশন থেকে অফিসার হেমন্ত রাঘব এই ব্যাপারে তথ্য দেন। তিনি বলেন, পরিবারের লোকজন তার লাশ তাদের গ্রাম হারডোইয়ে নিয়ে গেছে। সকল তথ্যর ভিত্তিতে মামলার তদন্ত চলছে।
তথ্যসূত্র: ইনসর্টস