চলতি বছরের শীতকাল ছিল বিগত কয়েক বছরের চেয়ে অনেক বেশি ঠান্ডা। জাতিসংঘের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানাচ্ছে, শীতকাল পার হলে এই বছরের তাপমাত্রা বিগত বছরের রেকর্ড ছাড়াবে। তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে, এখন থেকেই। অ্যান্টার্কটিকা হলো পৃথিবীর সবচেয়ে শীতলতম অঞ্চল। বিশ্বের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড রয়েছে এখানেই। সর্বনিম্ন -৯৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস অবধি তাপমাত্রা নেমেছিল। এখানে তাপমাত্রা এত কম থাকে যে, খুব বেশি তাপমাত্রা বাড়লেও অ্যান্টার্কটিকার বরফ কখনো প্রভাবিত হয়নি।
১৯৭০ সালের শেষদিক থেকে অ্যান্টার্কটিকার ওজোন স্তর রহস্যজনকভাবে পাতলা হতে শুরু করে। তখন এখানকার বরফের স্তর এবং গড় তাপমাত্রা পরিমাপ করা হয়। তখনও তা সীমার মধ্যেই ছিল। কিছু বছর আগেও অ্যান্টার্কটিকা ঝুঁকিতে ছিল না। কিন্তু এখন উত্তর মেরুর বরফের বিশাল অংশে ফাটল দেখা গেছে বলে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
খবরে বলা হয়, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর অবধি এখানে প্রায় ১৫ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার পরিমাণ বরফ গলেছে, যা ভারতের মতো দেশের দৈর্ঘ্যেরও ৪ গুণ! এর কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের পানি ৫ মিটার উচ্চতা অবধি বাড়তে পারে। এতে পরিবেশে অনেকটা পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
বরফের গলতে শুরু করা সমগ্র জীব জগতের জন্য হুমকিস্বরুপ। মানুষ, শীতল অঞ্চলের প্রাণীরা তো ভুক্তভোগী হবেই; তার সঙ্গে পৃথিবীরই শৃঙ্খল ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইতোমধ্যে, কম তাপমাত্রার কারণে বিপুলসংখ্যক মেরু প্রাণী মারা যাচ্ছে।
উত্তর মেরুর মতো শীতল জায়গা পৃথিবীতে খুব কম রয়েছে। পেঙ্গুইনের মতো কিছু প্রজাতির প্রাণী এরকম পরিবেশ ছাড়া প্রজনন ঘটাতে পারে না। শীতের শেষ থেকে বসন্ত পর্যন্ত এরা প্রজনন করে এবং ডিম দেয়। অ্যান্টার্টিকার তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় গত বছর বরফ গলে ৯ হাজার পেঙ্গুইনের ডিম এবং শিশু পেঙ্গুইন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এখন মাত্র ২ লাখ জোড়া অবশিষ্ট রয়েছে।
অ্যান্টার্কটিকার সমুদ্র-বরফের চক্রকে পৃথিবীর 'বিটিং হার্ট' বলা হয়।
তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস