ক্লাস করতে করতে বিরক্ত কিশোর। বাড়ি যেতে খুব ইচ্ছে করছে! কিন্তু কিভাবে যাবে? বাড়ি থেকে তাকে বিদ্যালয়ের হোস্টেলে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্কুল ছুটি দিলেই কেবল বাড়ি যাওয়া যাবে। শিগগিরই বিদ্যালয়ে থেকে কোনো ছুটি দেবে না। তবে, যদি বিদ্যালয়ে কেনো দুর্ঘটনা ঘটে? যদি কারো মৃত্যু হয়? তাহলে তো ছুটি দেওয়া হবেই!
এমন ভাবনা থেকেই এক ভয়ংকর অপরাধে জরিয়ে পড়ে অষ্টম শ্রেণীর এক কিশোর। ভারতের উত্তর বঙ্গের পুরুলিয়া জেলার ঘটনা। ‘সারদা শিশু মন্দির শান্তিবন’- বিদ্যালয়ে ঘটেছে একটি দুর্ঘটনা। বাড়ি যাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়েছিল কিশোর। তাই, সে স্কুলের এক নিচের ক্লাসের ছাত্রকে টার্গেট করে।
গতমাসের শেষদিকে একদিন দুপুরের খাবারের পর প্রথম শ্রেণীর একটি ছাত্র হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যায়। তাকে আশেপাশে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক খোঁজাখুঁজির করা হচ্ছিল শিশুটিকে। তার দু’দিন পর, বেসরকারি সেই স্কুল থেকে প্রায় ৪ শ মিটার দূরে একটি পুকুরে হৃদয় বিদারক ঘটনার সাক্ষী হয় সকলে।
সেই প্রথম শ্রেণীর সেই শিক্ষার্থীর মরদেহ পাওয়া যায় পুকুর থেকে। দেহ উদ্ধার করার পর শিশুর মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এরপর পুলিশ রহস্যময় এই মৃত্যুর তদন্ত শুরু করে। বেশ কয়েকটি সূত্র অষ্টম শ্রেণীর সেই শিশুর দিকেই নির্দেশ করে।
ছোট ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী স্কুলে অনুপস্থিত ছিল। পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে, সে ছেলেটিকে হত্যার কথা স্বীকার করে। হত্যার কারণ শুনে সকলে অত্যন্ত অবাক হয়।
ছেলেটি প্রথম শ্রেণির ছাত্রকে খুন করেছে , কারণ সে ছুটি চায়। তার বিশ্বাস ছিল, স্কুলে কোনো মৃত্যু হলে নিশ্চিতভাবে স্কুল ছুটি দেবে। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, মাত্র এক সপ্তাহ আগেই তাকে হোস্টেলে রাখা হয়। কিন্তু সে বাড়ি ফিরে যেতে চেয়েছিল। তাই সে এমন নির্মম অপরাধে লিপ্ত হয়। এখনো এই মামলার তদন্ত চলছে।