খাসিয়া বীর ইউ তিরৎ সিং স্মরণ অনুষ্ঠানমালায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন ভারতের বাংলাদেশ সংলগ্ন মেঘালয় রাজ্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকালে মেঘালয়ের উপ-মুখ্যমন্ত্রী স্নিয়াভলং ধরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় পৌছায় বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশন।
প্রতিনিধি দলে অন্যদের মধ্যে আরও রয়েছেন-রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী, শিল্প ও সংস্কৃতি মন্ত্রী, রাজ্য পরিকল্পনা বোর্ডের চেয়ারম্যান, মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টাসহ রাজ্য সরকার ও প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কর্তা ব্যক্তিরা। শুক্রবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত ভারতীয় হাই কমিশনের ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টার চত্বরে খাসিয়া বীর ইউ তিরৎ সিং মোমোরিয়াল উন্মোচনে যোগ দেবেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নিজের স্বাধীন খাসিয়া পাহাড় রাজ্য (ব্রিটিশ শাসনামলে আসামের অংশ হলেও বর্তমানে তা মেঘালয়ে রাজ্যের অন্তর্গত) রক্ষায় ৪ বছর ব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পরাজিত হয়ে খাসিয়া রাজা ইউ তিরৎ সিং ১৮৩৩ সালের ৯ জানুয়ারি আহতাবস্থায় আটক হন এবং পরবর্তীতে ঢাকায় কারাগারে তাকে অন্তরীণ রাখা হয়। কারাবন্দি অবস্থায় মাত্র ৩৩ বছর বয়েসে ১৮৩৫ সালের ১৭ জুলাই ঢাকাতেই মৃত্যুবরণ করেন অসীম সাহসী এই স্বাধীনতা সংগ্রামী।
মেঘালয় ও আসামের অধিবাসীদের শৌর্য বীর্যের প্রতীক এই বীরের প্রতি আনুষ্ঠানিক শ্রদ্ধা জ্ঞাপন এবং তাঁর স্মৃতিকে ধরে রাখার অংশ হিসেবে ঢাকায় তিরৎ সিং মোমোরিয়াল স্থাপনের প্রয়াস নেওয়া হয়। মেঘালয় রাজ্য সরকার ও ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের আনুকূল্যে হাইকমিশন এই উদ্যোগ গ্রহণ করে।
হাই কমিশন সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) মোমেরিয়াল উন্মোচনের পর মেঘালয় প্রতিনিধি দলের সদস্যদের পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন সড়কের কেন্দ্রীয় কারাগার (যা বর্তমানে জাদুঘর হিসেবে উন্মোচনের জন্য সংস্কারাধীন) দেখতে যাওয়ারও কথা রয়েছে, যে কারাগারে এক সময় তাদের মহান বীর অন্তরীণ ছিলেন।
ইউ তিরৎ সিংয়ের সংগ্রামী জীবনের আখ্যান তুলে ধরতে একই দিন সন্ধ্যায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় এক বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে। এতে মেঘালয়ের সাংস্কৃতিক দল নানা বর্ণিল পরিবেশনায় তাদের মহান বীরের জীবনালেখ্য তুলে ধরবে।