গভীর অরণ্যে গাছের আড়াল থেকে শোনা যায়, পাখির কিচির-মিচির শব্দ। দেখা-অদেখার সে জগতে ঘুরে বেড়ায় বৈচিত্র্যময় হরেক রকমের প্রাণী! তাদের কিছু কিছু আমাদের পরিচিত; অনেক কিছুই আবার অপরিচিত। বনে বাস করা প্রাণীদের জীবনযাত্রা আমাদের খুব কাছ থেকে দেখা হয় না। কিন্তু, প্রকৃতির পরিবর্তনের প্রভাব পৃথিবীতে বাসকারী প্রাণীর ওপর পড়ে।
কেউ কেউ হয়ত কালের বিবর্তনে হারিয়ে যায়, পরিবেশ ও সময়ের সঙ্গে নিজেদের খাপ খাওয়াতে না পেরে। খাদ্যের অভাব, বাসস্থানের জায়গা কমে যাওয়া, নগর উন্নয়ন, বিরূপ পরিবেশে অনেক প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যায়। কারণ যাই হোক, প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখতে প্রতিটি প্রজাতিই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দিন দিন বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীর তালিকা ক্রমে বেড়েই চলেছে।
তেমনি লম্বা লেজওয়ালা বিড়ালের মতো ছোট লোমশ একটি প্রাণী, নাম- নীলগিরি মার্টেন। দক্ষিণ ভারতে একসময় যাদের হরহামেশাই দেখা যেতো, ছোট ছোট পায়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় দৌড়ে বেড়াতো। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা বিলুপ্ত হতে চলেছে।
ভারতীয় বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করা আইএএস (ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার) কর্মকরাত সুপ্রিয়া সাহু সম্প্রতি এই মজাদার প্রাণীর দুরন্তপনার একটি ভিডিও মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে (সাবেক টুইটার) আপলোড করেছেন। সেখানে একটি ক্ষুদেবার্তায় কিছু কথাও লেখেন তিনি। তিনি লেখেন, অনেকেই হয়ত নীলগিরি মার্টেনের কথা শোনেননি। চকলেট রঙের পশমধারী এই প্রাণীটির গলার কাছের অংশ সর্ষে হলুদ রঙের। ছোট এই জীব এখন সংখ্যায় অত্যন্ত অল্প। তামিলনাড়ু সরকার পরিকল্পনা করেছে, বিলুপ্ত হওয়ার হাত থেকে এদের রক্ষা করার।
তিনি আরো বলেন, আগে কর্ণাটক, কেরালা, তামিলনাড়ুতে সহজেই এদের দেখা মিলতো। বর্তমানে বিলুপ্তপ্রায় হওয়ার কারণে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনভার্সেশন অব নেচারের (আইউসিএন) বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীর তালিকায় আছে এই নীলগিরি মার্টেন। বিলুপ্তপ্রায় এরকম প্রাণীদের তালিকা তৈরি করছে সরকার। সে কারণে এসব প্রাণী সংরক্ষণে তহবিলও গঠন করা হয়েছে।
ভিডিও দেখার পর অনেকেই মন্তব্য করেছেন। তাদের মতে, জীবজগতের এক অনন্য রত্ন- নীলগিরি মার্টেন। কেউ বলেছেন, বেশি দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই আমাদের এক হয়ে এদের রক্ষা করতে হবে।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি