কালের সাক্ষী হয়ে শত বছরের ইতিহাস নিয়ে মাথা তুলে যশোরের রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য বৃক্ষ। যশোর জেলা থেকে বেনাপোলের দিকে ১৮ কি.মি. আগালেই গদখালী ফুলের বাজার।
দেখে মনে হবে সৃষ্টিকর্তা যেন নিজ হাতে তৈরি করে দিয়েছেন ফুলের এক স্বর্গ রাজ্য। কাকডাকা ভোরে সাইকেল, ভ্যান অথবা মোটরসাইকেলে করে ফুল চাষিরা ফুল নিয়ে আসেন গদখালীর পাইকারি ফুলের বাজারে।
সূর্যের আলো ফোটার আগেই রাস্তার দু'পাশে সারি সারি দাঁড়িয়ে পড়েন ফুল বিক্রেতারা। শুরু হয় ফুল বিক্রি।
আর এই বাজারের মূল ক্রেতা দূরদূরান্ত থেকে আসা ফুলের ব্যাপারীরা। তারা এখান থেকে স্বল্প দামে ফুল কিনে নিয়ে পরে তা সরবরাহ করেন ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। রপ্তানি হয় বিদেশেও।
গোলাপ, গাঁদা, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, জারবেরা, চন্দ্রমল্লিকাসহ বিক্রি হয় বাহারি সব ফুল। ফুল চাষিরা যে বাহনে করে ফুল আনেন সেটাতে বসেই চলে বেচা-বিক্রি।
প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে বাজারে ফুল বিক্রি শেষ হয়ে যায়। কোনো দিবস বা বিশেষ দিন এলেই দিনে প্রায় কোটি টাকারও বেশি ব্যবসা করেন গদখালীর ফুল চাষি ও বিক্রেতারা।
ঝিকরগাছা ও শার্শা থানার ৯০টি গ্রামের প্রায় ৪ হাজার বিঘা জমিতে চাষ করা হয় বাজারে আসা ফুলগুলো। দেশের ফুলের মোট চাহিদার একটা বড় অংশের জোগান দিয়ে থাকেন ঝিকরগাছা ও শার্শা উপজেলার এই ফুলচাষিরা।
এখানে আছে ফুলের সুঘ্রান, মৌমাছির গুঞ্জন আর রঙিন প্রজাপতির ডানায় ভর করে আসা চিরন্তন সুন্দরের বার্তা। প্রায় সব ধরনের ফুলের দেখা মিলবে এই ফুলের রাজ্যে।
দেশের মোট চাহিদার প্রায় ৭০% ফুলের জোগান আসে যশোরের গদখালি থেকে। এখন গ্রামের বেশিরভাগ মানুষই ফুল চাষ অথবা বিক্রি পেশার সাথে জড়িত।
ফুলের বাগানগুলোতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে প্রত্যেকটি পরিবার।
দেশের এই বৃহত্তম ফুলের রাজ্য ঘুরে আসলে আপনার মন হয়ে উঠবে আরও প্রাণবন্ত ও উচ্ছ্বল।