অদূরে সবুজে মোড়ানো পাহাড়ের মাথায় নীলাকাশ ও সাদা মেঘের ভেলা। পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে সারি সারি বাড়ি– দেখলে মনে হবে সবুজ সমুদ্র থেকে উঁকি দিচ্ছে। নিচে নদীর স্বচ্ছ জলধারা, এতে পর্যটকদের নিয়ে ছুটছে ইঞ্চিনচালিত ও ডিঙি নৌকা। নদীতীরে স্তরে স্তরে বিছানো পাথরের স্তূপ। সব মিলে যেন এক অপরূপ রূপে সাজানো সিলেটের জাফলং।
আশ্চর্য সুন্দর মায়াভরা জাফলংয়ের এমন চিত্র ফুটে উঠেছে বার্তা২৪.কম-এর ফটো এডিটর নূর এ আলমের ক্যামেরায়। যেন হাতছানি দিয়ে নিজের মায়ায় জড়াতে পর্যটকদের ডাকছে জাফলং।
ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাহাড়ঘেঁষে সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলা গোয়াইনঘাট। এখানে খাসিয়া জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত জাফলং। পাথরের ওপর দিয়ে বয়ে চলা পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ পানির ধারা, ঝুলন্ত ডাউকি ব্রিজ, উঁচু পাহাড়ে সাদা মেঘের খেলা জাফলংকে করেছে অনন্য।
সীমান্তবর্তী জাফলং-এর ওপারেই ভারতের ডাউকি অঞ্চল। জাফলং-এ দাঁড়ালেই দেখা যায়, বিশাল খাসিয়া জৈন্তা পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে দাঁড়িয়ে থাকা ডাউকির বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি। বাড়িগুলো দেখতে মনোমুগ্ধকর, চোখ ফেরানো দায়!
মেঘালয়ের পাহাড় থেকে অবিরাম-ধারায় প্রবাহমান জলধারা দেখতে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জাফলংয়ে বেড়াতে আসেন ভ্রমণ পিপাসুরা। এখানে পর্যটকদের জন্য রয়েছে নানা আয়োজন। পিয়াইন নদীর তীরে রাখা হয়েছে ইঞ্জিনচালিত ও ডিঙি নৌকা; রয়েছে স্পিড বোটও। কেউ কেউ নদীতে নৌকায় ঘুরে কেউবা পাথরে বসে ‘শহুরে ক্লান্তি ভুলে’ বুক ভরে শ্বাস নেয়। সেই সঙ্গে পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ হিমহিম পানি, উঁচু পাহাড়ে গহিন অরণ্য ও সুনসান নীরবতার কারণে এলাকাটি পর্যটকদের দারুণভাবে মোহাবিষ্ট করে।
বালুর তটে গাঢ় নীল পলিথিনের মোড়ানো সারি সারি দোকান রয়েছে। যেখানে পাওয়া যায়, মুখরোচক খাবারসহ বাহারি পণ্য। পর্যটকরাও গোগ্রাসে খেয়ে নেন এসব খাবার।
বিভিন্ন ঋতুতে ভিন্ন ভিন্ন রূপ নিয়ে আসে জাফলং। বর্ষায় ভরা যৌবন, টইটম্বুর। শরতে মেঘের ভেলায় সবুজ স্নিগ্ধ প্রকৃতি। শীতে স্বচ্ছ জলধারা। জাফলংয়ের সব রূপেই মুগ্ধ ভ্রমণপ্রেমীরা।