সূর্য প্রদক্ষিণ করার সাথে সাথেই বছর ঘুরে তারিখের পুনরাবৃত্তি ঘটে। সময়ের আবর্তন বয়ে চলার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি দিনই কিছু বিশেষত্ব নিয়ে হাজির হয়। পৃথিবীর সঙ্গে সূর্যের এক পরিক্রম সম্পন্ন করে দিনপঞ্জিকা আবার এসেছে ঠেকেছে ২৪ অক্টোবরে। এইদিনে একই সঙ্গে পালিত হয় জাতিসংঘ দিবস, বিশ্ব উন্নয়ন তথ্য দিবস এবং বিশ্ব পোলিও দিবস। জেনে নেওয়া যাক এইসব দিবসের তাৎপর্য-
জাতিসংঘ দিবস: বিশ্বে ২০৬ টি দেশ রয়েছে। বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব রক্ষা এবং দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ স্থাপনের উদ্দেশ্যে গঠিত হয় জাতিসংঘ। ১৯৪৭ সালের ২৪ অক্টোবর স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রসমূহ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘের কাজ শুরু হয়। এই কারণে আজকের দিনে জাতিসংঘ দিবস পালন করা হয়।
জাতিসংঘের যাত্রা শুরু হয়েছিল ৫১টি রাষ্ট্র নিয়ে। বর্তমানে ১৯৩ টি সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে জাতিসংঘ বিশ্বে দ্বন্দ মিটিয়ে শান্তি রক্ষা ও উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের থেকে স্বাধীনতা লাভের ৩ বছর পর (১৯৭৪ সালে) বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্য হিসেবে যুক্ত হয়। সেই থেকে আমাদের দেশেও ২৪ অক্টোবর জাতিসংঘ দিবস পালিত হয়ে আসছে।
বিশ্ব উন্নয়ন তথ্য দিবস: সময়ের সাথে সাথে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অভাবনীয় মাত্রায় উন্নতি করে চলেছে। গত শতাব্দীতেও তথ্য আদান-প্রদান ও যোগাযোগ ছিল সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। অথচ এখন কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে তথ্য আদান-প্রদান করা যায়, তাও সহজেই এবং নাম মাত্র খরচে।
আজ ২৪ অক্টোবর বিশ্ব উন্নয়ন তথ্য দিবস। আন্তর্জাতিক ধাপে তথ্য সরবরাহ আরও উন্নত করার উদ্দেশ্যে এই দিবস পালন করা হয়। জাতিসংঘ দিবসের সাথে মিল রেখে আজকের তারিখেই উন্নয়ন তথ্য দিবস পালন করা হয়। ১৯৭২ সাল থেকে এই দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুসারে জানা যায়, ১৯৭০ সালে দ্বিতীয় জাতি উন্নয়ন দশক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন কৌশল গৃহীত হওয়ার তারিখ হিসাবে এই দিনটিকে আরও স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। ১৯৭২ সালের ১৭ মে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্মেলন (ইউএনটিএটিএডিডি) তথ্য প্রচার ও বাণিজ্যদগ ও বিকাশের সমস্যার সাথে জনমত জড়িত করার জন্য পদক্ষেপের প্রস্তাব করেছিল।
বিশ্ব পোলিও দিবস: শিশুরাই রাষ্ট্রের ভবিষ্যত। তাই শিশুদের সুস্থতা নিশ্চিত করা শুধু তার বাবা-মা এবং পরিবার নয়, রাষ্ট্রেরও দায়িত্ব। শিশুদের রোগমুক্ত রাখতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, তার কার্যক্রম জন্মের পরপরই শুরু হয়ে যায়। শিশুদের প্রাথিমিকভাবে যেসব টিকা প্রদান করা হয়, তারমধ্যে অন্যতম হলো পোলিওমায়েলাইটিস। সাধারণ এটি পোলিও নামে পরিচিত।
২৪ অক্টোবর বিশ্ব পোলিও দিবসও পালন করা হয়। রোটারি বাংলাদেশ পোলিও প্লাস কমিটির তথ্যমতে, পৃথিবী থেকে পোলিও নির্মূল হলেও এখনো দুটি দেশে ১০০ শিশু পোলিও আক্রান্ত আছে। ১৯৭৯ সাল থেকে পোলিও টিকা কার্যক্রম শুরু হয়। তবে পোলিও নির্মূলের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে আন্তর্জাতিক, জাতীয়, আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক টিকা দিবস ধারাবাহিকভাবে পালন শুরু হয় ১৯৯৫ সাল থেকে।
সারাবিশ্বে এক সময়ে এই রোগের ভয়াবহ আতঙ্ক ছিল। এখন ভয়াবহতা অতো বেশি না থাকতেও, সাবধানতা অবলম্বন করা বাধ্যতামূলক। বাংলাদেশ পোলিওমুক্ত হয় ২০০৬ সালে। শিশুদের পোলিও টিকা প্রদান করা অত্যন্ত জরুরী।