গ্রীষ্মের উত্তাপজনিত প্রাণহানির এক-তৃতীয়াংশের বেশি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘটে থাকে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক গবেষকদের একটি দল। গত সোমবার গবেষকরা সতর্ক করে দিয়ে জানান, বৈশ্বিক তাপমাত্রা আরও বাড়লে প্রাণহানি আরও বেশি ঘটতে পারে।
জলবায়ু পরিবর্তন কীভাবে মানুষের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে, সে ঝুঁকি সম্পর্কে আগের নানা গবেষণায় পূর্বাভাস দিয়ে বলা হয়েছে, তাপমাত্রা, খরা, দাবানল এবং অন্য চরম ঘটনাগুলো উষ্ণায়নের ফলে ভবিষ্যতে আরও খারাপ পরিস্থিতির দিকে যেতে পারে।
পরিস্থিতি কতটা খারাপ হবে, তা নির্ভর করে মানুষ কত দ্রুত কার্বন নিঃসরণ কমাতে পারবে তার ওপর। ২০১৯ সালে রেকর্ড পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ ঘটলেও করোনা মহামারির সময় তা কমেছে। তবে ৭০ জন আন্তর্জাতিক গবেষকের একটি দল বৈশ্বিক উষ্ণায়নে স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব কতটা পড়েছে, তা নিয়ে নতুন একটি গবেষণা করেছেন। গবেষণা নিবন্ধে লেখকেরা বলেছেন, এ ধরনের গবেষণা এটাই প্রথম।
গবেষণাসংক্রান্ত নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার ক্লাইমেট চেঞ্জ’ সাময়িকীতে। এ ক্ষেত্রে গবেষকেরা ৪৩টি দেশের ৭৩২টি জায়গার তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। তাতে দেখা গেছে, তাপ-সম্পর্কিত সব মৃত্যুর ক্ষেত্রে গড়ে ৩৭ শতাংশ মৃত্যুকে সরাসরি বৈশ্বিক উষ্ণতার জন্য দায়ী করা যেতে পারে।
গবেষণা নিবন্ধের জ্যেষ্ঠ লেখক আন্তোনিও গ্যাসপারিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন সুদূর ভবিষ্যতে কিছু নয়। আমরা পরিবেশ ও বাস্তুসংস্থানসংক্রান্ত প্রভাব ছাড়াও ইতিমধ্যে স্বাস্থ্যের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পরিমাপ করতে পারি।’
গবেষকেরা বলেন, তারা যে পদ্ধতিতে গবেষণা করেছেন, তা যদি বিশ্বব্যাপী বর্ধিত করা যায় তবে দেখা যাবে, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রতিবছর প্রায় এক লাখের বেশি মানুষের তাপজনিত মৃত্যু সংঘটিত হবে।
দ্য গার্ডিয়ান–এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মানবসৃষ্ট কার্যক্রম ৩৭ শতাংশ তাপজনিত মৃত্যুতে ভূমিকা রেখেছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়েছে দাবানল থেকে শুরু করে চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ার ক্ষেত্রেও। তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার পথে ঘন ঘন দাবদাহ সৃষ্টির ফলে বয়স্ক মানুষের ওপরে তার প্রভাব পড়ে। যাদের হাঁপানির মতো রোগ আছে, তারা অনেক বেশি ঝুঁকিতে পড়েন ও অকালমৃত্যুর মুখে পড়েন।