জাপানে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সম্প্রতি দেশটির স্বরাষ্ট্র ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় প্রবীণদের নিয়ে এক জরিপ প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, দেশটির ১০ শতাংশ নাগরিকের বয়স ৮০ বা তার বেশি। এ খবর ভাবিয়ে তুলেছে সূর্যোদয়ের দেশ জাপানকে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির ১২৫ মিলিয়ন জনসংখ্যার প্রায় ২৯.১ শতাংশ মানুষ ৬৫ বা তার বেশি বছর বয়সী, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রেকর্ড।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পপুলেশন অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি রিসার্চ অনুসারে, জাপানে ২০৪০ সালের মধ্যে ৬৫ বা তার বেশি বয়সী জনসংখ্যার হার ৩৪.৮ শতাংশ।
বিশ্বের সর্বনিম্ন জন্ম-মৃত্যুহার প্রধান দেশগুলোর মধ্যে জাপান অন্যতম। জাতিসংঘ বলছে, জাপানে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক জনসংখ্যা রয়েছে। সারাবিশ্বে ৬৫ বা তার বেশি বয়সীদেরকে বয়স্ক ধরে জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে। এই অনুপাতে ইতালি ২৪.৫ শতাংশ নিয়ে দ্বিতীয় এবং ফিনল্যান্ড ২৩.৬ শতাংশ নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
জাপানের বয়স্কদের দেখভাল করার কাজে ব্যয়কৃত বাজেট বাড়ছে ক্রমবর্ধমান সামাজিক নিরাপত্তা ব্যয়ের কারণে। জাপান আগামী অর্থবছরের জন্য সর্বোচ্চ বাজেট অনুমোদন করেছে। জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়, এবং দীর্ঘ কর্মঘণ্টার মধ্যেও জন্মহার বাড়ানোর প্রচেষ্টা সামান্য সাফল্যের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। জাপানের প্রতিবেশীসহ অনেক দেশেই জন্মহার কমছে, কিন্তু সমস্যাটি বিশেষ করে জাপানে তীব্র। দেশটিতে গত বছর ৮ লাখেরও কম শিশুর জন্ম হয়েছে। যা ১৯ শতকে রেকর্ড শুরু হওয়ার পর থেকে সর্বনিম্ন সংখ্যা। ১৯৭০ এর দশকে এই সংখ্যা ছিল দুই মিলিয়নেরও বেশি।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা চলতি বছরের জানুয়ারিতে বলেন, জাপান ক্রমহ্রাসমান জন্মহারের কারণে তরুণ সমাজ নিয়ে কাজ করতে পারছে না। তবে জন্মহার হ্রাসের সমাধান হিসেবে অভিবাসী শ্রমিকদের গ্রহণ করার বিষয়েও কর্তৃপক্ষ দ্বিধান্বিত। এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোও একই রকম জনসংখ্যাগত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন।
১৯৬১ সালের পর ২০২২ সালে প্রথমবারের মতো চীনের জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। একই বছর দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বের সর্বনিম্ন জন্মহারের কথা জানায়।