টানা চতুর্থবারে মতো সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি পেল যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। সদ্য প্রকাশিত এক র্যাংকিংয়ে যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়কে তৃতীয় ও লন্ডন ইম্পেরিয়াল কলেজকে ১০ম স্থানে রাখা হয়েছে। দ্বিতীয় হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দ্যা ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি।
দ্যা অ্যানুয়াল টাইমস হায়ার এডুকেশন ওয়ার্ল্ড র্যাংকিং-২০২০ প্রকাশিত বার্ষিক তালিকায় এ চিত্র দেখা গেছে।
৯২টি দেশের ১৪০০ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে এই তালিকা করা হয়েছে। শিক্ষার গুণগতমান, গবেষণার পরিমাণ এবং খ্যাতি, গবেষণার উদ্ধৃতি, শিল্প এবং আন্তর্জাতিক সংযোগগুলো থেকে আয়-এ সমস্ত বিষয়ের ওপর ভিত্তি করেই র্যাংকিং নির্ধারণ করা হয়েছে।
র্যাংকিংয়ের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের মতে, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের প্রতিযোগিতায় যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালগুলোকে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ইউরোপের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার প্রতিযোগিতায় যুক্তরাজ্যের ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে জার্মানি।
বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা
এ তালিকায় বরাবরের মতোই যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অধিপত্য বজায় রয়েছে। সেরা ১০টির ৭টি যুক্তরাষ্ট্রের। আর প্রথম ২০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য ৬০টিও তাদেরেই।
এশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও দ্রুত উপরের দিকে উঠে আসছে। বিশেষ করে চীন ও জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তালিকায় নিজেদের শক্ত অবস্থান জানিয়েছে এবার। তবে তালিকায় সবচেয়ে উন্নতি হয়ে ইরানের বিশ্ববিদ্যালগুলোর। তবে হাজারের মধ্যেও নেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্বের শীর্ষ ১০ বিশ্ববিদ্যালয়
অবস্থান | বিশ্ববিদ্যালয় |
১ | অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় |
২ | ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি |
৩ | ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় |
৪ | স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় |
৫ | যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) |
৬ | প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় |
৭ | হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় |
৮ | ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় |
৯ | শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় |
১০ | লন্ডন ইম্পেরিয়াল কলেজ |
র্যাংকিং বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, যুক্তরাজ্যের কথিত 'গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল' তথা অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজ ও লন্ডন ইম্পেরিয়াল কলেজ বরাবরের মতই সফলতা ধরে রেখেছে।
তবে ২০১৬ সাল থেকে প্রথম ২০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৪ থেকে কমে ২৮ এ এসে দাঁড়িয়েছে। যেখানে জার্মানির সংখ্যা তিন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২৩ হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব
টাইমস হায়ার এডুকেশনের এক বিশ্লেষণে বলা হয়, তালিকায় জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উত্থান এটাই প্রমাণ করে দেশটির উচ্চ শিক্ষা কার্যক্রমে প্রচুর পরিমাণে বিনিয়োগ করছে সেখানকার সরকার।
ব্রেক্সিটের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের অংশীদারিত্বমূলক গবেষণা কার্যক্রমে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ হারাবে যুক্তরাজ্য। যার ফলে শিক্ষাখাতে বিনিয়োগে জার্মানির চেয়ে তারা আরও পিছিয়ে পড়তে পারে বলেও সতর্ক করেন তারা।
সংস্থাটির কর্মকর্তা ফিল বেটি বলেন, 'আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে যুক্তরাজ্য যদি আরও বেশি সরে আসতে শুরু করে তাহলে র্যাংকিংয়ে এখনো যে অবস্থানে তারা আছে সেটির ওপরে ভবিষ্যতে প্রভাব পড়বে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য লুইজি রিচার্ডসন বলেন, 'অক্সফোর্ডের সফলতার অন্যতম কারণ হলো বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে গবেষণা সহযোগিতা। তাই ব্রেক্সিট আমাদের জন্য যা কিছুই আনুক না কেন আমরা এই সহযোগিতার সম্পর্ক আরও গভীরতর ও বৃদ্ধি করব, এটাই আমাদের সংকল্প।'