রাত পোহালেই বাদ ফজর নামাজ শেষে আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হবে ৫৭ তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। গাজীপুরের টঙ্গী তুরাগ তীরে তাবলিগ জামাতের অনুসারীদের আগমনে কানায় কানায় পূর্ণ ইজতেমা ময়দান। মাঠে জায়গা না পেয়ে অনেকেই অবস্থান নিয়েছেন সড়কের দু-পাশে। এখনও বাস, ট্রাক, ট্রেন ও হেঁটে দলে দলে ইজতেমা ময়দানে আসছেন অনেকে। তাদের কাঁধে বা পিঠে ঝুলছে ময়দানে অবস্থানের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। ভারী ব্যাগ মাথায় নিয়েও আসতে দেখা গেছে অনেককে। রোববার আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত মানুষের এ আগমন অব্যাহত থাকবে বলে জানান আয়োজকরা।
আয়োজকরা জানান, ইজতেমার প্রথম দিনই শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে তুরাগ তীরে দেশের বৃহত্তম জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এবারের জুমার নামাজে ইমামতি করবেন কাকরাইলের মুরুব্বি মাওলানা জোবায়ের। প্রতিবারই জুমার নামাজে অংশ নিতে তাবলিগের অনুসারী ছাড়াও গাজীপুর ও আশপাশের জেলা থেকে প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। ইজতেমা ময়দান ছাপিয়ে কামারপাড়া, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ আশপাশের অলিগলিতেও কাতারবদ্ধ হয়ে জুমার নামাজে অংশ নেবেন এসব মানুষ।
এবার ময়দানের পশ্চিমে তুরাগ নদের পূর্ব পাশে নামাজের মিম্বর এবং উত্তর-পশ্চিম পাশে বিদেশি মুসল্লিদের কামরার পাশে বয়ান মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। নামাজের মিম্বর থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ইমাম এবং বয়ানের মঞ্চে বয়ানকারী অবস্থান করেন। বয়ান মঞ্চ থেকে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করা হবে। বিশ্ব ইজতেমার জন্য প্রায় ১ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের মাঠটিতে বাঁশের খুঁটির ওপর ছাউনির মধ্যে বয়ান শোনার জন্য লাগানো হয়েছে বিশেষ ছাতা মাইক। লাগানো হয়েছে পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিক বাতি। দেশীয় তাবলিগের অনুসারীদের জন্য জেলাওয়ারি আলাদা খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। বিদেশি তাবলিগ অনুসারীদের জন্য মাঠের উত্তর-পশ্চিম কোণে আধুনিক সুবিধা সংবলিত আলাদা থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিশ্বের মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহৎ এই সম্মেলনের আয়োজক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী আব্দুন নূর ও মো. মাহফুজ জানান, জিকির-আসকারে সময় পার করছেন ইজতেমায় আগত মুসল্লিরা। দেশ-বিদেশের লাখো মুসলিমের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে টঙ্গীর তুরাগ তীর।
বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে ১৬০ একরের ইজতেমা ময়দান কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। বিশ্ব ইজতেমার মূলপর্ব শুক্রবার থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বুধবার থেকেই দলে দলে তাবলিগের অনুসারীরা ইজতেমা ময়দানে এসে অবস্থান নিয়েছেন। তারা মাঠের ভেতরে ঢুকে নিজ নিজ জেলার খিত্তায় অবস্থান নিতে শুরু করেছেন।
মুসল্লিদের ধর্মীয় কাজে মনোনিবিষ্ট করতে ও ময়দানে উপস্থিত মানুষদের জমিয়ে রাখতে মুরুব্বিরা বৃহস্পতিবার বাদ ফজর থেকে প্রাথমিক বয়ান করছেন। প্রাথমিক বয়ান করেন দিল্লীর মাওলানা আহমদ লাট, তা বাংলায় তরজমা করেন মাওলানা ওমর ফারুক ও বাদ জোহর থেকে বয়ান করছেন হযরত মাওলানা রবিউল হক (বাংলাদেশ)।
ইতিমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত মুসল্লিরা ইজতেমায় অংশগ্রহণ কররেছেন যার মধ্যে ভারত, পাকিস্তান, কুয়েত, সৌদি আরব, আফগানিস্তান, জাপান, ওমান, কানাডা, মোজাম্বিক, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, কিরগিজস্তান, সিঙ্গাপুর, ইতালি, জর্দান ও যুক্তরাজ্য অন্যতম।