যতই চেষ্টা করা হোক না কেন, রাত হলেই চোখের পাতা থেকে ঘুম যেন পালিয়ে যায়। দেরিতে বহু কষ্টে ঘুম আসলেও, শেষরাতের দিকে অকারণেই ঘুম ভেঙে যাবার সমস্যাটা থেকেই যায়। অথচ ঘুম যদি ঠিকভাবে না হয়, তবে সারাদিনের কাজের প্রাণশক্তি একেবারেই পাওয়া সম্ভব হয় না।
নিজেকে সুস্থ রাখার তাগিদেই পর্যাপ্ত, পরিপূর্ণ ও গভীর ঘুম হওয়া প্রয়োজন। ঘুমের অনিয়ম ও ঘুম ভাঙার সমস্যা দূর করতে কয়েকটি নিয়ম মানাই যথেষ্ট। টানা কয়েকদিন এই সকল নিয়ম মেনে চললেই ঘুমের নিয়মে দেখা দিবে বড়সড় ধরণের ইতিবাচক পরিবর্তন।
জেনে নিন স্বাস্থ্যকর, উপকারি ও প্রয়োজনীয় এই নিয়মগুলো।
দিনের শুরুতে কিংবা সারাদিন বাইরে থাকার পর ঘরে ফিরে গোসল করলেও, ঘুমের ঠিক ঘন্টাখানেক আগে গোসল করতে হবে। এতে শরীরে বাড়তি তাপমাত্রা কমে যায়, শরীর স্থিতিশীল হয় এবং শরীর ও মনে প্রশান্তিভাব কাজ করে। ঘুমের আগে গোসল করার সময় সুগন্ধিযুক্ত এসেনশিয়াল অয়েলের ব্যবহার প্রশান্তির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। তবে চুল দ্রুত না শুকালে, গোসল করার সময় চুল না ভেজানোই ভালো।
যদি ভেবে রাখেন রাত বারোটায় ঘুমাবেন, তবে ঠিক এক ঘন্টা আগে থেকেই ঘর অন্ধকার করে ফেলুন। চেষ্টা করুন ডিম লাইট ব্যবহার না করার জন্য। ঘর যত বেশি অন্ধকার হবে, নার্ভ ততই শান্ত হবে। উজ্জ্বল আলো নার্ভকে শান্ত হতে বাধা দেয়, ফলে ঘুম আসে না কিংবা ঘুম আসতে দেরি হয়।
ঘর অন্ধকার করে বিছানায় শুয়ে মোবাইলের ভেতর ডুবে থাকলে কিন্তু কোন ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে না। মোবাইল, ট্যাব, ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটারের ক্ষতিকর ব্লু-রে চোখের উপরে চাপ তৈরি করার পাশাপাশি ঘুম ভাবকেও বিনষ্ট করে।
ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ শুধু শরীরকে সুস্থ রাখতেই নয়, রাতে দ্রুত ও গভীর আনতেও দারুন কার্যকরি ভূমিকা পালন করে। গবেষণা থেকে দেখা গেছে, যারা নিয়মিত শরীরচর্চা করেন তাদের মাঝে শতকরা ৮৩ জনের ঘুমের ক্ষেত্রে কোন ধরণের সমস্যার মুখোমুখি হন না।
তবে ঘুমাতে যাওয়ার আগে নয়, শরীরচর্চা করতে হবে ভোর সকালে অথবা বিকালের দিকে। কারণ ঠিক ঘুমের সময়ের আগে আগে শরীরচর্চার ক্ষেত্রে মিশ্র ফলাফল পাওয়া যায়। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ঘুমের সমস্যা দূর হলেও, কিছু মানুষের ক্ষেত্রে কোন পরিবর্তন দেখা দেয় না।
অন্ধকার ঘরে বিছানায় শুয়ে কী করবেন ভাবছেন? রিল্যাক্সেশনের নানান উপায় আছে, তার কিছু ফলো করার চেষ্টা করুন। সারাদিনে ঘটা কোন মজার ঘটনা ভাবুন, লো ভলিউমে রিল্যাক্সিং সাউন্ড ছেড়ে দিন, ছোট্ট করে হট অয়েল ম্যাসাজ নিন। এতে শরীরে ক্লান্তি দূর হয়ে প্রশান্তিভাব কাজ করবে।
প্রতিদিন ঘুমানোর সময়টা নির্দিষ্ট করে নিতে হবে। শরীরকে যেভাবে পরিচালিত করা হবে, শরীর যেভাবেই চলবে। নিয়মমাফিক যদি ঘুমানো হয়, তবে শরীর সেই নিয়মেই অভ্যস্ত হয়ে উঠবে। যে কারণে ছুটির দিনেও সেই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটানো যাবে না।