দেশে জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরের প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। আর ঠিক এ সময়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ এবং মৃত্যু বাড়ছেই। প্রতিদিনই শনাক্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
বরাবরের মতো রাজধানী ঢাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। চলতি বছরের জুলাই মাসের ২৮ দিনেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৭২৬ জনে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে—মহামারিকালে ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে উঠছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি। অপরদিকে, চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন—একজন ব্যক্তি একইসঙ্গে করোনাভাইরাস এবং ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হতে পারেন। ফলে জ্বর হলে তাকে করোনা ও ডেঙ্গু, উভয় টেস্ট করানো জরুরি।
করোনা ও ডেঙ্গুর পার্থক্য—
শরীরে জ্বর আসা করোনা এবং ডেঙ্গু দুই ধরনের ভাইরাসের উপসর্গ হলেও এর কিছু পার্থক্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন বায়োমেড ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড রিসার্চ ল্যাবরেটরির মেডিকেল অফিসার ডা. মুহম্মদ মুহিদুল ইসলাম।
তিনি জানান, করোনা ও ডেঙ্গুর কিছু লক্ষণ এবং উপসর্গ এক মনে করা হলেও স্পষ্ট কিছু পার্থক্য রয়েছে। তবে এমন লক্ষণ দেখা দিলে রোগীকে ডেঙ্গু এবং করোনাভাইরাস; দুই ধরনের পরীক্ষা একসঙ্গে করাতে হবে।
‘ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে রোগীর তীব্র জ্বর, মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, জ্বর আসার ২-৫ দিনের মধ্যে গায়ে র্যাশ ওঠা, নাক দিয়ে রক্তপাত, পাতলা পায়খানা হতে পারে’ বলেও জানান ডা. মুহিদুল।
করোনায় আক্রান্ত রোগীর জ্বরের উপসর্গ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কেউ করোনা আক্রান্ত হলে তার মধ্যম পর্যায়ের জ্বর, মাথাব্যথা হতে পারে। এছাড়া গলাব্যথা, সর্দি-কাশি এবং মুখে স্বাদ না থাকা, নাকে ঘ্রাণ না পাওয়ার মতো উপসর্গও দেখা দিতে পারে। তবে রোগীর অবস্থা গুরুতর হলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে।’
তবে বই-পুস্তক অনুযায়ী অনেক পার্থক্য থাকলেও বাস্তবে সবার ক্ষেত্রে এক রকম লক্ষণ নাও দেখা যেতে পারে বলেও উল্লেখ করেন এই চিকিৎসক।
ডেঙ্গুর পর্যায়
ডেঙ্গু কয়েকটা পর্যায় আছে। তার মধ্যে হলো—ডেঙ্গু ফিভার, ডেঙ্গু হেমোরিজিক ফিভার, ডেঙ্গু শক সিনড্রোম, এক্সপান্ডেড ডেঙ্গু সিনড্রোম।
এখন জ্বর হলেই ডেঙ্গুর জন্য জ্বরের প্রথম ৫-৬ দিন পর্যন্ত ডেঙ্গু এনএস১ অ্যান্টিজেন (Dengue NS1 Antigen) টেস্ট করাতে হবে। এরপর থেকে IgG, IgM অ্যান্টিবডি পাওয়া যাবে। তবে এখন জ্বর হলেই কমপক্ষে দু’টি টেস্ট করাতে হবে। সেগুলো হলো—NS1 Antigen & COVID-19 টেস্ট।