বছর ঘুরে আবারও এসেছে ২০ অক্টোবর। ২০১০ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী আজকের দিনটি ‘ওয়ার্ল্ড অস্টিওপরোসিস ডে’ হিসেবে পালন করা হয়ে আসছে। সবার মাঝে এই রোগের প্রতিরোধ, প্রতিকার, লক্ষণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে সচেতন করাই হলো দিনটির মূল প্রতিপাদ্য।
অস্টিওপরোসিস (Osteoporosis) শব্দটি মূলত দুইটি শব্দ একত্র গঠিত। অস্টিও অর্থ হলো হাড় ও পরোসিস অর্থ ছিদ্র হওয়া। হাড়ের স্বাভাবিক ঘনত্বের চাইতে পাতলা হয়ে যাওয়া, হাড়ের ভেতর ঝাঁঝরির মতো ছিদ্র হয়ে যাওয়ার সমস্যাকেই অস্টিওপরোসিস বলা হয়। এই সমস্যাটির ফলে হালকা চাপেও হাড় ভেঙে যায়।
সাধারণত বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে এই সমস্যা দেখা দেওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এছাড়া চল্লিশের অধিক বয়সী নারীদের অস্টিওপরোসিস হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে। তবে সচেতনতা ও নিয়মতান্ত্রিক জীবনব্যবস্থা হাড়ের এই সমস্যাকে দূরে রাখতে পারে খুব সহজেই।
খাদ্যাভাস
প্রতিদিনের খাবার তালিকায় ভিটামিন-ডি ও ক্যালসিয়াম পূর্ণ খাদ্য উপাদান রাখতে হবে। হাড়ের গঠনের জন্য এই দুইটি পুষ্টি উপাদান ভীষণ জরুরী। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য প্রতিদিন গড়ে ১০০০ মিলিগ্রাম পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও ৫০০ ইউনিট ভিটামিন-ডি প্রয়োজন হয়। নারীদের ক্ষেত্রে এই পরিমান কিছুটা বেশি হবে। কলা, দুধ, কলিজা, কচুশাক, পনীর, দই, ব্রকলি প্রভৃতি থেকে ক্যালসিয়াম পাওয়া যাবে।
রোদের আলো
হাড়ের সুস্বাস্থ্যের জন্য রোদের আলোর গুরুত্ব অপরিসীম। তবে সমস্যা হলো, বেশিরভাগ মানুষ রোদের আলো ও রোদের আলো থেকে প্রাপ্ত ভিটামিন-ডি সম্পর্কে জানে না। রোদের আলোর অভাবে শরীরে ভিটামিন-ডি এর অভাব দেখা দেয়। বিভিন্ন ধরণের খাদ্য উপাদান থেকে ভিটামিন-ডি পাওয়া গেলেও রোদের আলোর অভাবে হাড়ের ক্ষয়রোগ দেখা দেওয়ার সম্ভবনা প্রকট হয়ে ওঠে।
শরীরচর্চা
গঠনমূলক যে সকল শরীরচর্চা পেশী গঠন করে থাকে, সেই সকল শরীরচর্চা নিয়মিত করার চেষ্টা করতে হবে। এই সকল শরীরচর্চার ফলে পেশী গঠনের পাশাপাশি হাড়ও মজবুত হয়। বিশেষ করে লোয়ার ব্যাক এক্সারসাইজ, ইয়োগা, এবডোমিনাল এক্সারসাইজ হাড়ের জন্য উপকারী।
ধূমপান বর্জন
ধূমপান করা কোনভাবেই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনে না। যে কারণে ধূমপানের ফলে হাড়ের উপরেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে দেয়। এমনকি অস্টিওপরোসিসে আক্রান্ত রোগীর শরীরে চিকিৎসা কোন উপকারী প্রভাব তৈরি করতে পারবে না, যদি আক্রান্ত ব্যক্তি ধূমপায়ী হন।