শরীরের সুস্থ্যতা কে না চায়? মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতিও ইদানিং সচেতন হয়ে উঠছে মানুষ। কিন্তু শুধু শরীর চর্চা বা শুধু মনের সুস্থ্যতা দিয়ে কি পরিপূর্ণ সুস্থ্য জীবন যাপন সম্ভব? বিজ্ঞান বলছে, মানুষের অসুখের পেছনে নিরানব্বই শতাংশ কারণই মনোদৈহিক। তাই সুস্থ্যতা কিংবা সৌন্দর্য চর্চায় শরীর ও মনের সমন্বয়ের কোন বিকল্প নেই। ব্যক্তিভেদে জীবন যাপনের ভিন্নতার ফলে শারীরিক ও মানসিক সমস্যাও ভিন্ন।
ফলে কোন সচেতন ব্যক্তি যদি চান তার সুস্থ্যতায় নিয়মিত ব্যায়াম করবেন, কি ব্যায়াম তার জন্য প্রয়োজনীয়, কি ধরণের খাদ্যাভাসে তিনি অভ্যস্থ, সেখানে কি কি পরিবর্তন আনা জরুরী এমনকি তার মানসিক স্বাস্থের বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় কি ধরণের চিন্তার পরিবর্তন আনা জরুরী এ সকল প্রশ্নের উত্তর অনেক সময়ই তার জানা থাকে না।
যার ফলে মানুষ কখনো জিমে, কখনো অনলাইনে বিভিন্ন টিউটোরিয়াল দেখে ব্যায়াম, ইয়োগা কিংবা মেডিটেশন এ ঝুঁকছেন। কিন্তু নিজের মন ও শরীরের যথাযথ সমস্যাটি অনুধাবন করতে না পারায় অনেক ক্ষেত্রেই ভুল চর্চা করে থাকেন সবাই। পাশাপাশি কিছুদিন করেই হাঁপিয়ে ওঠেন। দীর্ঘদিনের ভুল জীবন চর্চা, খাদ্যাভাস ও নেতিবাচক হাজারো চিন্তার মধ্যে বসবাস করায় সঠিক স্বাস্থ্য চর্চা থেকে দূরেই থাকে অধিকাংশ মানুষ। এছাড়াও চর্চার ধারাবাহিকতা রক্ষায় সঠিক মেন্টর বা কোচের অভাবই যে এর মূল কারণ তা প্রত্যেকেই অনুভব করলেও সঠিক পথটি জানা নেই কারো।
ব্যক্তিভেদে সমস্যা নির্ণয় করে এ সব প্রশ্নের যথাযথ উত্তর, পরামর্শ ও নিয়মিত স্বাস্থ্যচর্চার মনিটরিং ও ট্রেইনিং করান যিনি তিনিই একজন লাইফস্টাইল কোচ। উন্নত বিশ্বে সচেতন মানুষের কাছে যার চাহিদা দিন দিন অপরিহার্য হয়ে উঠছে। আমাদের দেশে এ পেশার যাত্রা শুরু হয়েছে গুটি কয়েক মানুষের হাত ধরে। তার মধ্যে অন্যতম একজন তানভীর হাসান বৃত্ত।
অনলাইন ও অফলাইন কেন্দ্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন বৃত্ত। তিনি ফিটনেস এন্ড লাইফ স্টাইল কোচিংয়ে আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান আমেরিকান কাউন্সিল অন এক্সারসাইজ (এসিই) থেকে প্রশিক্ষক হিসেবে সনদপ্রাপ্ত হয়েছেন। এছাড়াও কানাডার পারসোনাল ট্রেইনার ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (পিটিডিসি) অনলাইন ট্রেইনিংয়ের প্রশিক্ষণের পর বাংলাদেশ থেকে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক এ প্রতিষ্ঠানে মেন্টর হিসেবে আমন্ত্রিত হয়ে যোগদান করেছেন। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রশিক্ষকদের নিয়মিত পাঠদান করছেন তিনি।
অন্যদিকে স্বাস্থ্য সচেতনতায় একই পথে হেঁটেছেন নাইমা হাসান। তিনিও কানাডার পিটিডিসি থেকে সাফ্যল্যের সঙ্গে ট্রেইনার সার্টিফিকেশন সম্পন্ন করে দেশে ও বিদেশে নানা পেশার মানুষের কোচ হিসেবে কাজ করছেন।
তারা মনে করেন, প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে দিন দিন মানুষের শারীরিক পরিশ্রম কমছে, আরাম বাড়ছে পাশাপাশি নিরাপদ ও সতেজ খাবারের সংকটও বাড়ছে। সঠিক জীবন যাপন পদ্ধতি ও খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কেও বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছে মানুষ। রঙ বাহারি বিজ্ঞাপনের প্রলোভনে প্রতিনিয়ত এ ভ্রান্তি বাড়ছেই। এছাড়াও শরীর চর্চা সম্পর্কে সঠিক ও বিজ্ঞানসম্মত জ্ঞানের অভাব তো রয়েছেই। মানসিক চাপ, বিসন্নতা, দুশ্চিন্তা কিংবা ইনসমনিয়ার মতো জটিলতায় ভূগছে অধিকাংশ মানুষই।
এ থেকে উত্তরণের জন্য ব্যক্তিভেদে সঠিক সমাধান খুঁজে দিতেই কাজ করছে বৃত্তর ‘বেঙ্গল ক্যালিস্থেনিক্স’ ও নাইমার ‘নাইমা হাসান হেলথ এন্ড লাইফস্টাইল কোচিং’ ব্যক্তিভেদে বিভিন্নরকম ব্যায়াম, পুষ্টি পরামর্শ, মেডিশন, ইতিবাচক মনোভাব তৈরি ও মানসিক সমস্যা পর্যবেক্ষণ করে সে অনুযায়ি ট্রেইনিং ও কোচিং কার্যক্রম পরিচালিত করছেন তারা।
এ প্রসঙ্গে বৃত্ত বলেন, ‘আমাদের দেশে মানুষ এখন সাস্থ্য সচেতন হতে শুরু করেছে। অনেকেই নানা উপায়ে স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হচ্ছেন। এটি খুবই ইতিবাচক একটি দিক। আমাদের পেশাটি কিছুটা ব্যতিক্রম এবং নতুন এ জন্য যে আমরা সমন্বিত সুস্থ্যতার দিকে মানুষকে আহ্বান জানাই। ব্যক্তিভেদে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তাদের অভ্যাস গড়ে তুলি। আমার মতো আরো তরুণ এ পেশায় যুক্ত হোক এটা আমি চাই।’
নাইমা বলেন, ‘আমাদের দেশে এ ধরণের কোর্সের কোন প্রতিষ্ঠান নেই। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ পেশায় দক্ষ মানুষ গড়ে তুলছে। আমিও সে কাজটিই করেছি। আমার ক্লায়েন্টরা মূলত করপোরেট ব্যক্তিত্ব ও দেশের বাইরের। আমি বেশ আনন্দিত তাদের সাহায্য করতে পেরে।’
তাদের ভাষ্যে, আমাদের দৈনন্দিন জীবন যাপনে ভুল খাদ্যাভাস, নেতিবাচক চিন্তার চর্চা ও শরীর সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে নিজের অজান্তেই আমরা নানা রকম অসুস্থতার কারণ হচ্ছি। যার ফলে কখনো শরীর, কখনো মনের সুস্থতায় আমরা চিকিৎসা নির্ভর হয়ে পড়ছি। কেউ কেউ সচেতন হতে চাইলেও বিচ্ছিন্নভাবে শরীর ও মনের চর্চায় নানা ধরণের উদ্যোগ নিয়ে থাকলেও তা কার্যকর হচ্ছে না।
এর কারণ সুস্থতা ও সৌন্দর্যের জন্য কেবল ব্যায়াম বা ইয়োগা বা শুধু মেডিটেশন এককভাবে যথেষ্ট নয়। সম্ভব নয় সাময়িক চর্চায়ও। শরীর ও মনের সুস্থতার সমন্বয় করতে জরুরী আমাদের জীবন যাপনের ধরণ, খাদ্যাভ্যাস ও চিন্তা পদ্ধতির আমূল পরিবর্তন। যা কখনো কখনো একা একজন ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠেনা।
একজন লাইফস্টা্ল কোচই পারেন ব্যাক্তিভেদে সমস্যা নিরুপণ করে যথাযথ মনিটরিং, ট্রেনিং এবং কোচিংয়ের মাধ্যমে সে তাকে সঠিক জীবন যাপন পদ্ধতির অভ্যাসের দিকে নিয়ে যেতে।
বেঙ্গল ক্যালিস্থেনিক্স
https://www.facebook.com/BengalFitnessAcademy
নাইমা হাসান হেলথ এন্ড লাইফস্টাইল কোচিং
https://www.facebook.com/Nayma-Hasan-Health-Lifestyle-Coaching-100482105340242