বাঙালিদের কাছে বেগুন ভর্তা অতি পরিচিত একটি খাবার। গরম ভাতের সাথে বেগুন ভর্তার স্বাদের কথা জানতে চাইলে অনেকেই বলবেন, এটা অসাধারণ বা এর তুলনাই হয় না। বিশেষত ভর্তা প্রেমীরাতো ভর্তা দিয়েই প্লেট ভর্তি ভাত নিমিষেই শেষ করে ফেলেন।
এটা এমনই এক ভর্তা যে, খেয়ে মন ভরেনা। ইচ্ছে করে আরও খেতে তা পেটে জায়গা থাকুক বা না থাকুক। তবে একেকজন একেক স্টাইলে ভর্তা করে থাকেন। যেমনসিদ্ধ, ভাজা, পোড়ানো ইত্যাদি। সবগুলোই মজার তবে পোড়া বেগুন ভর্তার আলাদা একটা কদর আছে। আজ শেয়ার করবো পোড়া বেগুন ভর্তার রেসিপি।
উপকরণ-
বেগুন
পেঁয়াজ কুচি
পেঁয়াজ বেরেস্তা
দুটি শুকনো মরিচ
দুটি কাঁচা মরিচ
ধনিয়াপাতা
সরিষার তেল
লবণ
যেভাবে তৈরি করবেন পোড়া বেগুন ভর্তা-
প্রথমে দুটি বেগুন সিদ্ধ করে নিন। এরপর চুলায় একটি ফ্রাইং প্যানে দিয়ে দিন সরিষার তেল। এবার এই তেলে প্রথমে শুকনো মরিচ দুটো ভেজে নিতে হবে। এরপর কাঁচা মরিচ দুটি ও পেঁয়াজ কুচি সামান্য একটু ভেজে নিতে হবে। পেঁয়াজগুলো কিছুটা স্বচ্ছ কালার হলেই তুলে ফেলতে হবে। এতে করে পেঁয়াজের কাঁচা গন্ধটাও চলে যাবে অথচ পেঁয়াজের যে কচকচে একটা ভাব থাকে সেটা অব্যাহত থাকবে।
এবারে আগে থেকে সিদ্ধ করে রাখা বেগুনগুলোর উপরের পোড়া চামড়া ছাড়িয়ে নিতে হবে। এখন বেগুনগুলো টুকরো করে নিতে হবে। বেগুন কাটা হয়ে গেলো এবার ধনিয়াপাতা কুঁচি করে নিন।
এবার ভর্তা মাখার পালা। প্রথমে শুকনো মরিচ দুটো মেখে নিন। দিয়ে দিন স্বাদ মতো লবণ। এবার ভাজা পেঁয়াজ, ভাজা কাঁচা মরিচ এবং ধনিয়াপাতাও মেখে নিন। শুকনো মরিচ, পেঁয়াজকুচি, ধনিয়াপাতা এবং কাঁচা মরিচ সব একসাথে মাখিয়ে নিন। আর দিয়ে দিন সরিষার তেল।
এখন বেগুনের সাথে সব একসাথে মেখে নিতে হবে তবে তার আগে বেগুনগুলো একটু আলাদা করে মথে নিন। মাখার উপরও কিন্তু ভর্তার স্বাদ হেরফের হয়। প্রবাদে আছে নুন মরিচ চর্তা এই মিলে হয় ভর্তা। অর্থাৎ লবণ মরিচ এবং মাখানো এই তিনটি সঠিক মাত্রায় হলেই ভর্তা মজা হয়।
সবশেষে দিয়ে দিন পেঁয়াজ বেরেস্তা এবং মাখিয়ে নিন। পেঁয়াজ বেরেস্তা এই ভর্তায় আলাদা একটা স্বাদের মাত্রা যোগ করবে তবে সেটা অপশনাল। এটা ছাড়াও অসাধারণ হয় পোড়া বেগুন ভর্তা।
ভর্তা মাখানো হয়ে গেলো এবার গরম ভাতে পরিবেশনের পালা। আমাদের দেশে সাধারণত গরম ভাতেই ভর্তা খাওয়া হয়। তবে পান্তাভাত, কালাইরুটি বা সাজেরপিঠা, ছিটারুটি দিয়েও বিভিন্নভর্তা খাওয়াহয়।
রোজ রোজ মাছ-মাংস খেতে খেতে এক ঘেয়ে চলে এলে ভর্তাই ভরসা রুচি ফেরাতে। আর তা যদি হয় এমন পোড়া বেগুনের ভর্তা তাহলে হাড়িতে চাল কয়েক মুঠো বাড়িয়ে দেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।