কাজের ব্যস্ততা থাকবেই। হোক সেটা নিজের বাসায়, ক্লাসে কিংবা অফিসে। কিন্তু তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেকেও সুস্থ রাখতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে নিজের শরীরের প্রতি।
ঘন্টাখানেকের জন্য জিমে যাওয়ার কিংবা আয়োজন করে স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরির সময় না থাকলেও নিজেকে কীভাবে ফিট রাখা যাবে জেনে নিন আজকের আলোচনা থেকে।
কাজের ব্যস্ততায় রান্না করাটা বেশ ঝামেলাপূর্ণ কাজ। কিন্তু রান্না না করে, বাইরের খাবার খেয়ে খুব বেশিদিন কাটানো সম্ভব নয় নিশ্চয়। তাই রান্না সারতে হবে ওয়ান-পট মিল তৈরির মাধ্যমে। ওয়ান-পট মিলে নানান ধরণের উপাদান একসঙ্গে রান্না করে নেওয়া যায় একটি পাত্রেই। সময় বাঁচাতে ও ঝামেলা কমাতে পাশ্চাত্যে ওয়ান-পট মিল খুবই জনপ্রিয়। আলাদাভাবে সবজি, মাংস ও ডাল রান্নার বদলে এক রান্নাতেই যদি সব সেরে নেওয়া যায় তবে খারাপ কী! এতে করে শরীর সব পুষ্টিগুণ একসাথে পাবে, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া হবে এবং বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রয়োজন দেখা দিবে না।
সকাল থেকে সন্ধ্যা, কোন কোনদিন রাত অব্দি অফিসে কাটাতে হয়। যার ফলে শরীরচর্চার জন্য আলাদা সময় তো বটেই, এনার্জিও পাওয়া যায় না। তারপর কিন্তু নিজেকে ফিট রাখা সম্ভব। অফিসের লিফট নয়, ব্যবহার করতে হবে সিঁড়ি। পাঁচ-ছয় তলা পর্যন্ত অবলীলায় সিঁড়ি ব্যবহার করা যায়। ৯-১০ তলা বা তারও বেশি হলে বিরতি দিয়ে দিয়ে উঠতে হবে। সিঁড়ি দিয়ে উপরে ওঠার ফলে শরীর প্রতিদিন বাড়তি ক্যালোরি বার্ণ করবে, যা ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখবে।
পেট ভরে খেলেই যে ওজন বাড়বে এমন ভ্রান্ত ধারণা থেকে বের হয়ে আসা প্রয়োজন। ওটস, লাল আটার রুটি, সবজি, শাক, ফল প্রভৃতি স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে পেট ভরে ফেলতে হবে সকালের নাস্ত কিংবা দুপুরের খাবার সময়। এতে করে ঘনঘন ক্ষুধাভাব দেখা দিবে না। হুটহট ক্ষুধাভাব দেখা দেওয়ার ফলে স্ন্যাক্স জাতীয় অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া হয়। যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তো বটেই, ওজনকেও অনেক বাড়িয়ে দেয়।
অফিসে, ক্লাসে বা বাসাতে প্রচন্ড কাজের চাপ থাকলেও হাতের কাছে একটি পানির বোতল অবশ্যই রাখতে হবে। সময়ে সময়ে পানি পানের কথা একেবারেই ভোলা যাবে না। পানি পানের মাত্রা কমে গেলে খাবার পরিপাকে সমস্যা দেখা দেয়, মেটাবলিজমের হার কমে যায় এবং শরীরে পানি স্বল্পতার কারণে ক্লান্তিভাব দেখা দেয়। তাই কাজের গতি ও নিজেকে ঠিক রাখার জন্যে পানি পান করতে হবে পর্যাপ্ত।
তাড়াহুড়ো করে কোন কিছু খাওয়ার প্রয়োজন দেখা দিলেও প্যাকেটজাত খাবারকে এড়িয়ে যেতে হবে সথাসম্ভব। প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাবারে ক্ষতিকর কার্ব, চিনি, সোডিয়াম, প্রিজার্ভেটিভ ও আর্টিফিসিয়াম ফ্লেভার থাকে অনেক বেশি এবং স্বাস্থ্য উপকারিতা থাকে শূন্য।
সকল চেষ্টাই বিফলে যাবে যদি ঘুমের নিয়মে ব্যাঘাত ঘটে। কাজের চাপ, মানসিক ও শারীরিক চাপের সৃষ্টি করে। যে কারণে শরীর ও মনের জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রামের প্রয়োজন হয়। অন্তত আট ঘন্টার ঘুম না হলে ক্লান্তি ও অবসাদভাব শরীর ও মনে থেকে যাবে। যার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবে অসুস্থতার প্রকোপ দেখা দিতে শুরু করবে। তাই সঠিক খাদ্যাভাসের সঙ্গে ঘুমটাকেও ঠিক রাখতে হবে।
আরো পড়ুন: যেভাবে তাড়াবেন মধ্যরাতের ক্ষুধা
আরো পড়ুন: ১২ কারণে গড়ে তুলুন বই পড়ার অভ্যাস