আপনি কি জানেন গরুর দুধ এবং সজনে পাতার মধ্যে পুষ্টিগত কোনো পার্থক্য নাই? বিজ্ঞানীরা বলছেন, গরুর দুধের পুষ্টি এবং সজনে পাতার পুষ্টির পরিমাণ প্রায় সমান।
আমরা উপমহাদেশে বা বাংলাদেশে গরুর দুধ কেন খাই? গরুর দুধ আমরা খাই মূলত ক্যালসিয়ামের জন্য, প্রোটিনের জন্য, আমিষের জন্য। গরুর দুধকে আমরা সুষম খাবার বলি।
গরুর দুধে যা আছে, সজনে পাতাতেও তা আছে। যে লক্ষ্যে আমরা মূলত গরুর দুধ খাই, সে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম আছে সজনে পাতায়। পর্যাপ্ত আমিষও আছে।
অনেকেই দুধ খেতে চান না। তাদের জন্য দুধের পুষ্টি পূরণে কার্যকরী বিকল্প হতে পারে সজনে পাতা। চলুন জেনে নেই এর পুষ্টি গুণ সম্পর্কে।
পুষ্টি গুণ
১. সজনে পাতার কিছু ঔষধি গুণ আছে। আর এই ঔষধি গুণের কারণে আর্থ্রাইটিস নিরাময়ে এটি দারুণ কার্যকর। যাদের হাঁটু ব্যথা আছে, সজনে পাতার জুস খান। সজনে পাতার ভর্তা খান অথবা গুঁড়া খান। ছয় মাস খান। দেখবেন উপকার পাবেন।
২. শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে সজনে পাতা। শরীরের বর্জ্য পদার্থ, টক্সিন, ফ্রি রেডিক্যাল যদি সেলের ভেতরে থেকে যায়, আপনি কোনো দিন সুস্থ থাকতে পারবেন না। এই বর্জ্য পদার্থকে বের করার জন্য আপনি সজনে পাতা খেতে পারেন। এটা দারুণ একটা ডিটক্স হিসেবে কাজ করতে পারে।
৩. সজিনার পাতা হৃদরোগীদের জন্যে ঠিক ওষুধের মত কাজ করে, উচ্চ রক্তচাপ কমায়, কোলেস্টেরল কমায়, ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রিত রাখে।
৪. প্রতিদিন সকালে এক চামচ শুকনা গুড়া পানিতে গুলিয়ে খেলে পেটের প্রদাহ, গ্যাস্ট্রিক মুক্তি পাওয়া যায়।
৫. সজিনা পাতা যকৃত ও কিডনির কাজ সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করতে সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধ করে কিডনি ও লিভার সুস্থ রাখে।
৬. দৈনিক ৬ চামচ সজনে পাতার গুঁড়া একটি গর্ভবর্তী বা স্তন্যদানকারী মায়ের চাহিদার সবটুকু ক্যালসিয়াম ও আয়রন সরবরাহ করতে সক্ষম।
৭. গবেষকরা সজনে পাতা ও ডাটাকে বলে থাকেন নিউট্রিশন্স সুপার ফুড এবং সজনে গাছকে বলা হয় মিরাক্কেল ট্রি। এটি শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে শরীরকে করে পূর্বের থেকেও বেশি স্বাস্থ্যকর।
সজনে পাতা কিভাবে খাবেন
সবচেয়ে উত্তম উপায় হচ্ছে সজনে পাতার জুস করে খাওয়া। এজন্য কিছু সজনে পাতা নিন। কিছু পানি যোগ করে টেস্টের জন্য কিছু আদা, কিছু জিরা, একটু বিট লবণ দিতে পারেন। ভালো করে ব্লেন্ড করেন। এরপর ছেঁকে নিন। ছেঁকে নিয়ে খাওয়ার সময় একটু মধু দিয়ে খেয়ে নিন।
যদি আপনার জুস বানাতে ঝামেলা হয় অথবা সব দিন যদি জুস খেতে না পারেন, ভর্তা খান, তবে এটা কাঁচা হলে বেস্ট। যখন আপনি সিদ্ধ করলেন, এই যে নানাবিধ যে উপাদানগুলো আছে এটি নষ্ট হয়ে যেতে থাকবে। সে জন্য কাঁচা পাতা ভালো করে বেটে নিয়ে এটাকে সুস্বাদু করার জন্য যা যা লাগে রসুন, আদা, মরিচ, পেঁয়াজ দিয়ে খান।
তথ্যসূত্র-নিউজবাংলা২৪.কম