শুধু কথার কথা নয়- সত্যিকার অর্থেই পুরনো জঞ্জালকে পেছনে ফেলে, নিজেকে নতুনভাবে গুছিয়ে সামনের দিনগুলোতে এগিয়ে যেতে হবে। সত্যি কথা হলো, নতুন বছরের প্রতিটি দিন, এক একটি নতুন সম্ভাবনা। এই নতুন বছরকে কীভাবে কাজে লাগাবেন, কীভাবে নিজেকে পরিণত করবেন সেটা কিন্তু সম্পূর্ণই আপনার উপর নির্ভর করে।
বিশেষত ক্যারিয়ার নিয়ে সচেতন প্রতিটি চাকরিজীবীকে আরও বেশি মনযোগী হতে হবে নিজের কাজ নিয়ে। গোছানো ও পরিকল্পিতভাবে কাজ করার পাশাপাশি কিছু বিষয়ে নজর দেওয়া সকলের প্রয়োজন।
দেরী করে ঘুমানো ও দেরী করে ঘুম থেকে ওঠা কখনোই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। কর্মক্ষেত্রে ভালো করতে চাইলে অবশ্যই নিজেকে সুস্থ রাখতে হবে। তাই সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার কোন বিকল্প একেবারেই নেই। অ্যামেরিকার ন্যাশনাল ইস্টিটিউট অফ হেলথ জানায়, সঠিক মাত্রার ঘুম মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি দৃঢ় করতে কাজ করে এবং আট ঘন্টার পূর্ণ ঘুম শেষে সকালে ওঠার পর মস্তিষ্ক পরিপূর্ণভাবে কাজ করতে পারে।
শুধু অফিসের কাজ নয়, নিজের ব্যক্তিগত কাজ কিংবা বাসার কাজের ক্ষেত্রেও গোছানো স্বাভাব আয়ত্বে আনতে হবে। এতে করে সবকিছুই খুব সহজে ও ঝামেলাবিহীনভাবে করা সম্ভব হবে। যেমন, আগামী পুরো সপ্তাহে অফিসে পরার জামা আগে থেকে রেডি করে রাখলে, অফিসের যাবার আগে তুলনামূলক কম সময় প্রয়োজন হবে। এমনকি পরবর্তী মিটিং এর কাজ আগে থেকে জানা থাকলে, সেইভাবে পরিকল্পনা করে রাখলেও দ্রুত কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।
ক্যারিয়ারের সঙ্গে শরীরচর্চার বিষয়টি অদ্ভুত শোনালেও নিজেকে একটিভ রাখার জন্য শরীরচর্চার কোন বিকল্প নেই। গবেষকেরা জানান, শরীরচর্চার ফলে হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকে এবং রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। উভয় কারণই শরীরে এনার্জি বৃদ্ধি করে এবং শারীরিক ও মানসিক স্ট্রেস কমায়। স্বাভাবিকভাবেই আপনি যত বেশি স্ট্রেস ফ্রি থাকতে পারবেন, তত বেশি নিজের কাজের প্রতি মনযোগী হতে পারবেন। তাই প্রতিদিন অন্তত ১৫-২০ মিনিট ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করার অভ্যাসটা আজ থেকে গড়ে তুলুন।
একেবারে খুব বড় কোন লক্ষ্য নির্ধারণ করার প্রয়োজন নেই। সাপ্তাহিক লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। পরবর্তি সপ্তাহে কোন কাজগুলো শেষ করবেন সেটা ঠিক করুন। সেই অনুযায়ী কাজ করুন। লক্ষ্য পূরণ হলে পরবর্তি সপ্তাহের জন্য পরিকল্পনা করে ফেলুন। এভাবে ছোট ছোট লক্ষ্য পুরণের মাধ্যমেই বড় অনেক কাজ শেষ করে ফেলা সম্ভব হবে।
কাজ তো সকলেই করেন, কিন্তু বুদ্ধি ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেন খুব কম মানুষ। নতুন বছরে তাই কাজ করার চেষ্টা করুন পরিকল্পনা মাফিক, দক্ষতার সাথে। যে কাজটি দুই ঘণ্টার মাঝেই শেষ করা সম্ভব, তার জন্য দুই দিন পরিশ্রম করা অর্থহীন। তাই নিজের কাজগুলো ভাবুন, পরিকল্পনা করুন, কাজের ধরণকে জানার চেষ্টা করুন। এতে করে অহেতুক পরিশ্রম করার প্রয়োজন হবে না।
নিজের কর্ম দক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্রচুর ক্ষেত্র পাওয়া যাবে, যেখানে নিজেকে সময় দিতে হবে। নিজের মাঝে সবসময় নতুন কিছু শেখার ও জানার মনোভাবটাকে ধরে রাখতে হবে। কারণ শেখার কোন শেষ নেই। যেকোন ক্ষেত্রেই, যত বেশি শেখা যাবে, ততবেশি নিজেকে পরিণত করে গড়ে তোলা সম্ভব হবে। শেখার জন্য যে রীতিমত ক্লাস করতে হবে, পরীক্ষা দিতে হবে- এমনটা নয়। ইউটিউবে শিক্ষামূলক ভিডিও দেখা, শিক্ষামূলক কোন বই পড়া এমনকি কর্পোরেট লাইফের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কোন ক্লাসে অংশ নেওয়াও হতে পারে ইতিবাচক পদক্ষেপ।
ক্যারিয়ারের মাঝে ছুটি কাটানোর কথা বলা হচ্ছে হবে অবাক হবে না। ব্যস্ত ও যান্ত্রিক জীবনের মাঝে হাঁপিয়ে উঠলে খুব স্বাভাবিকভাবেই কাজের গতি ধীর হয়ে যায়। কাজের প্রতি বিরক্তিভাব চলে আসে। তাই সময় বুঝে ৫-৭ দিনের ছুটির পরিকল্পনা করে ফেলুন।
আরো পড়ুন: ক্যারিয়ারে যখন হতাশা!