ময়েশ্চারাইরাজ, সিরাম, টোনার, ফেশওয়াশ, ফেশিয়াল, বিউটি ট্রিটমেন্ট- ত্বক সুন্দর করতে আরও কত কি ব্যবহার করে মানুষ। সৌন্দর্য সচেতন মানুষ বিশেষ করে নারীদের মধ্যে বিভিন্ন রকমের স্কিন কেয়ার পণ্য অনেক বেশি জনপ্রিয়। হাজার হাজার টাকা ব্যয় করা হয় ত্বকের উন্নতির আশায়। এসব যে কার্যকরী নয় তা নয়! তবে ত্বক সুন্দর করতে বাইরে থেকে রূপচর্চা করা যতটা না কার্যকর, তার চেয়ে অভ্যন্তরীণ যত্ন অনেক বেশি কার্যকর।
আমার যা খাই তার প্রভাব শুধু আমাদের স্বাস্থ্যে নয়, ত্বকেও পড়ে। যেমন, ভাজা-পোড়া খাবার বেশি খাওয়া হলে ত্বকে পিম্পল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই ত্বককে সুন্দর করতে চাইলে আগে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে এমন খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়তে হবে।
ভারতীয় চিকিৎসক কর্ণ রাজন তার নিজস্ব ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে সম্প্রতি এই ব্যাপারে উপদেশে দিয়ে একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘ত্বকের উন্নতি করতে চাইলে স্কিনকেয়ারের পাশাপাশি অন্ত্রের স্বাস্থ্যের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। রঙিন ফল ও শাক-সবজি অন্ত্রের জন্য উপকারী, যার প্রভাব ত্বকেও লক্ষ্য করা যায়। টমেটো, বেল পেপার, গাজর খাওয়ার ফলে সামান্য হলেও লক্ষণীয় পরিবর্তন আসে। এই খাবারগুলো তন্তুজাতীয় হওয়ায় অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার প্রভাব বাড়িয়ে হজমেও উপকারী প্রভাব ফেলে আবার ত্বকেও সোনালী আভা নিয়ে আসে।‘
একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে যেসব শিশুদের চর্মরোগ একজিমা রয়েছে তাদের অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ারও ঘাটতি থাকে। প্রোবায়োটিকসে পর্যাপ্ত পরিমাণে ল্যাকটোবাইসিলি এবং বাইফিডোব্যাকটেরিয়াম থাকে। এই উপাদানগুলো একজিমা আক্রান্ত শিশুদের চামড়ার উন্নতি করতে পারে।
ডাক্তার রাজন আরও বলেন, ‘খাদ্যে বিশেষ তন্তুজাতীয় খাদ্য প্রিবায়োটিক রাখাও ত্বকের জন্য ভালো সিদ্ধান্ত হতে পারে। এই ধরনের খাবারে কিছু নির্দিষ্ট উপকারী ব্যাকটেরিয়ার কার্যক্ষমতা বাড়ায়। অর্থাৎ, প্রাকৃতিকভাবে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি যৌগের উৎপাদন বাড়ে। এর প্রভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রভাবিত হয়।’
এমন আসলে নিদির্ষ্ট কোনো খাবার নেই যা ত্বকের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে। তবে ফল এবং শাক-সবজি এই কাজের ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকে। বিশেষ করে উচ্চ প্রিবায়োটিকস সম্পন্ন এবং বিভিন্ন রঙের রঙিন খাবার। এইসব খাবারে পুষ্টির বৈচিত্র থাকে। এতে উদ্ভিজ্জ ভিটামিন এ, সি এবং ই জাতীয় পুষ্টি উপাদানের আধিক্য থাকে, যা ত্বকে জেল্লা বাড়াতে পারে। বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, রঙধনুর রঙের যেসব সবজি রয়েছে সেসব খাবার অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার কাজ বাড়ায়। আবার আদা,পেঁয়াজ, কলার মতো প্রিবায়োটিকস উপাদান সম্পন্ন ত্বককে মসৃণ করতে সাহায্য করে।
মূলত পেটের যত্ন নিলে ত্বকের সুস্থতা বজায় রাখা অনেকাংশে সহজ হয়ে যায়। ত্বকে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিলে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে খাদ্যতালিকা নিয়েও আলোচনা করুন। জীবনধারা বদলানোর মাধ্যমে সব মুশকিল আসান করা সম্ভব।
তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস