প্রতিদিন পুরো বিশ্ব জুড়ে হাজার হাজার মানুষ এই মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে ও মৃত্যুবরণ করছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এখনও পর্যন্ত এই ঘাতক রোগ সম্পূর্ণরূপে ভালো হবার কোন চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। কিছু ক্ষেত্রে ব্যয়বহুল চিকিৎসায় কিছুটা সুস্থতা আসলেও পুরোপুরি সুস্থ হবার নজির খুবই বিরল।
আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির মতে প্রতিদিন আমরা এমন কিছু কাজ করছি, যা আমাদের ঠেলে দিচ্ছে এই মরণব্যাধির দিকে। নিজের সুস্থতা ও নিরাপত্তার স্বার্থে জেনে রাখুন এমন কয়েকটি অভ্যাসের বিবরণ।
আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুসান গাপ্সটুর বলেন, ‘আমাদের জীবনযাত্রার ধরণ ও মানের উপর ক্যান্সার অনেকটা নির্ভরশীল’। কোন অসুখ বা দূর্ঘটনার পরে নিয়ম মেনে না চলার কারণে ক্যান্সার হতে পারে বলেও অভিহিত করেন তিনি।
শুধু ধূমপানের ফলে নয়, তামাকের ব্যবহারের ফলেও ক্যান্সার দেখা দেয়। বিশেষত তামাকের সরাসরি ব্যবহার আরো বেশি ক্ষতিকর। দেখা গেছে তামাক ব্যবহারকারীদের গড় আয়ু, তামাক ব্যবহার করেনা এমন মানুষদের তুলনায় ১০ বছর কম। তবে আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি জানাচ্ছে, ৪০ বছর বয়সের আগে তামাক খাওয়া বা ধূমপান ছাড়লে, তা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ধূমপান সম্পর্কিত অসুখে মৃত্যু রোধ করবে।
অতিরিক্ত ওজন শুধু হৃদযন্ত্রের অসুখের জন্যই দায়ি নয়, এটি ক্যান্সারের জন্যেও দায়ি। ধূমপানের পরে বেশীর ভাগ মানুষের ক্যান্সারের কারণ অতিরিক্ত ওজন।
ব্যায়াম না করলে এমনিতেই ওজন বেড়ে যায়। আর ওজন বাড়লেই ক্যান্সারের ঝুঁকি। কোলোন, ব্রেষ্ট ও এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সারের মত অসুখ বাসা বাঁধতে পারে ব্যায়ামহীন আরাম আয়েশে থাকা শরীরে।
সিগারেট থেকে নির্গত হয় কারসেনোজেনিক (ক্যান্সারজনক) কেমিক্যাল। বিজ্ঞানীরা এ পর্যন্ত প্রায় ৭০ ধরণের কেমিক্যাল নিশ্চিত করেছে, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। নিজে ধূমপান না করলেও এই ঝুঁকিটি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এটাকে বলা হয় প্যাসিভ স্মোকিং। ধূমপায়ীর আশেপাশের মানুষও ধূমপায়ীর মতোই ক্যান্সারের ঝুঁকিতে থাকেন এই প্যাসিভ স্মোকিং কিংবা সেকেন্ড হ্যান্ড স্মোকিং এর জন্য। এ কারণে বিভিন্ন স্থানে ধূমপান করা সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ।
ফ্রাই, গ্রিল বা বারবিকিউ এর মত উচ্চ তাপমাত্রায় মাংস রান্না করলে, তা এক প্রকার রাসায়নিক পদার্থ সৃষ্টি করে। যা ক্যান্সারের কারণ। এই রাসায়নিক নিয়ে কাজ করা বিজ্ঞানীরা বলছে, হেটেরোসাইক্লিক এ্যামিনস (HCAs) ও পলিসাইক্লিক এরোমেটিক হাইড্রোকার্বন্স (PAHs) নামের দুই ধরনের রাসায়নিকের সন্ধান মিলেছে, যা মানুষের শরীরের ডিএনএকে ক্ষতিগ্রস্থ করে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
আরো পড়ুন: জীবাণুমুক্ত থাকার পদ্ধতিগুলো কী সঠিক?
আরো পড়ুন: ঘুম আসবে মাত্র ৬০ সেকেন্ডেই!