কারণ অসুস্থতা দেখা দিলে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হয় রোগীকেই। বর্তমান বিশ্বে অন্যান্য নানাবিধ শারীরিক অসুস্থতার মাঝে কিডনিজনিত সমস্যা দেখা দেওয়ার প্রকোপ বাড়ছে প্রতিনিয়ত।
কিডনি ফাউন্ডেশনের প্রফেসর হারুন-উর-রশিদ জানান, বিশ্বে মৃত্যুজনিত সমস্যার মাঝে ক্রনিক কিডনি ডিজিজ (CKD) রয়েছে ১১তম স্থানে। বাংলাদেশেও আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে কিডনিজনিত জটিলতা। কিডনি ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, প্রতি বছর বাংলাদেশে কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছে ৩৫,০০০-৪০,০০০ জন মানুষ।
সবচেয়ে ভীতিকর বিষয়টি হলো, আমাদের প্রতিদিনের বেশ কিছু অভ্যাস কিডনির সমস্যা তৈরির জন্য দায়ি। কিডনি সমস্যার মতো গুরুত্বর বিষয়ে সচেতনতা প্রয়োজন। জেনে রাখা প্রয়োজন কোন কাজগুলো এড়িয়ে চললে কিডনিকে সুস্থ রাখা সম্ভব হবে।
উচ্চ সোডিয়াম তথা লবণযুক্ত খাবার গ্রহণের ফলে তা রক্তচাপ বৃদ্ধি করা সহ কিডনির উপর বাড়তি চাপ প্রয়োগ করে। যেকোন ধরণের ফাস্ট ফুড ও ক্যানড খাবারে প্রচুর পরিমাণ সোডিয়াম থাকে। এ ধরণের খাবার যদি বেশি খাওয়া হয় তবে কিডনিজনিত জটিলতা দেখা দেওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায় অনেকখানি।
পানি পানের ক্ষেত্রে কোন ছাড় দেওয়া যাবে না একেবারেই। শরীরকে সর্বদা হাইড্রেটেড রাখার জন্য নির্দিষ্ট সময় পরপর পানি পান করতে হবে। শরীরে প্রয়োজনীয় পানির ঘাটতি দেখা দিলে কিডনির উপর চাপ পড়বে। যা কিডনিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
গরু, খাসির মাংস তথা রেড মিট যতই সুস্বাদু ও প্রিয় হোক না কেন, এই মাংসগুলো খেতে হবে একেবারেই স্বল্প পরিমাণ। রেড মিটের ক্ষতিকর নাইট্রোজেন, অ্যামোনিয়া ও প্রাণীজ প্রোটিন কিডনিকে দুর্বল করে দেয়।
প্রস্রাবের বেগ দেখা দিলেও নিজেকে ভারমুক্ত না করে চেপে রাখার অভ্যাসটি কমবেশি সবার মাঝেই আছে। এতে করে ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন দেখা দেওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায় অনেক বেশি এবং কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সাধারণ এই অভ্যাসটির ফলে নারীদের কিডনিজনিত সমস্যাটি বেশি দেখা দেয়।
অনিয়ন্ত্রিত চিনি গ্রহণ শুধু ডায়বেটিস দেখা দেওয়ার সম্ভবনা বৃদ্ধি করে তাই নয়, পাশাপাশি রক্ত নালিকা ক্ষতিগ্রস্থ করে ও কিডনির সমস্যাও তৈরি করে।
এই অভ্যাসটি সবদিক থেকেই শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ধূমপানের ফলে টক্সিক উপাদান সমূহ ফুসফুসের সঙ্গে কিডনির উপরেও নেতিবাচক ও মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব তৈরি করে। ফলে খুব অল্প সময়ের মাঝেই কিডনি ফেইল্যুরের ঘটনা ঘটে।
যে কারণেই হোক না কেন, ঘুম যদি অপর্যাপ্ত হয়ে থাকে তবে তা শরীরকে দুর্বল করে দেওয়ার পাশাপাশি মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা ও অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয়। যা কিডনির উপর পরোক্ষভাবে চাপ তৈরি করবে।
আরও পড়ুন: কিডনি সুস্থ রাখবে ‘পাঁচ নিয়ম’
আরও পড়ুন: কিডনি সুস্থ রাখতে যে খাবারগুলো খেতে হবে