মেটাবলিজমের মাত্রা যত কম হয় ওজন ততটাই বৃদ্ধি পায়। বয়স বাড়ার সঙ্গে অকারণে ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণটি হলো, বয়স বৃদ্ধির পাওয়ার ফলে মেটাবলিজমের হার কমে যেতে থাকে প্রাকৃতিকভাবেই।
নির্দিষ্ট একটি বয়স পর্যন্ত মেটাবলিজমের হার শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী স্বাভাবিক থাকে। কিন্তু প্রতিদিনের কিছু বদভ্যাসে মেটাবলিজমের হার কমে যায় লক্ষ্যণীয় মাত্রায়। ফলাফল স্বরূপ দেখা দেয় বাড়তি ওজন।
হয়তো নিজের আপনার মাঝেও আছে এই সকল বদভ্যাসের কয়েকটি। জেনে রাখুন ও সচেতন হোন এখনই।
সকালের নাস্তা যত দেরী করে খাওয়া হয়, খাবারের পুষ্টিগুণ পাওয়া যায় তত দেরীতে ও খাবার পরিপাক হতে সমস্যা। সেই সাথে কমে যায় মেটাবলিজমের হার। আমাদের গ্রহণকৃত খাদ্যপরিপাক হয়ে শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। যা শরীরে শক্তির যোগান দেয়। এই প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার দরুন মেটাবলিজমের স্বাভাবিক ক্রিয়া স্লথ হয়ে যায়।
মানবদেহের প্রতিটি সেলুলার প্রসেস পানির উপর নির্ভরশীল, ফলে শরীরে যখন পানি স্বল্পতা দেখা দেয় তখন স্বাভাবিকভাবে মেটাবলিজমের হার কমে যায়। এমনকি পর্যাপ্ত পানি পান করা না হলে হাঁটাচলা ও স্বাভাবিক কার্যক্রমের জন্যেও পর্যাপ্ত শক্তি পাওয়া যায় না।
বাড়তি ওজনকে কমিয়ে ফেলার জন্য অনেকেই ক্রাশ ডায়েট ফলো করে থাকেন। যা কোনভাবে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নয়। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টির অভাব দেখা দিলে মেটাবলিজমের হার কমে যায় এবং শরীরে জমে থাকা ক্যালোরি বার্ন করতে শুরু করে।
অফিসে, গাড়িতে, বাসায় বসে নেটফিক্স দেখা- প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রয়োজনের চাইতে অনেক বেশি সময় একতানা বসে থাকার ফলে হৃদরোগ, ডায়বেটিসসহ দেখা দিতে পারে গুরুত্বর শারীরিক সমস্যা। প্রায় ৪৭টি ভিন্ন গবেষণার ফলাফল জানাচ্ছে- নিয়মিত শরীরচর্চা করা হলেও একটানা দীর্ঘসময় বসে থাকার ফলে মেটাবলিজম একেবারেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এতে করে শরীরে চিনির মাত্রা বেড়ে যায় অনেক। যে কারণে গবেষকেরা পরামর্শ দেন, প্রতি আধা ঘণ্টা অন্তর অন্তত মিনিট পাঁচেকের জন্য হাঁটাহাটি করার। এমনকি কোন কিছু না করে শুধু দাঁড়িয়ে থাকলেও মেটাবলিজম সচল থাকে।
একজন প্রাপ্তবয়স্কের গড়ে প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। কিন্তু নানাবিধ কারণ ও ব্যস্ততার দরুন প্রয়োজনের চাইতে কম ঘুমানো হয় অনেকের। কম ঘুমের ফলে ইন্স্যুলিন রেসিস্ট্যান্স বৃদ্ধি পায়, যা বাড়িয়ে দেয় রক্তে চিনির মাত্রা। এ থেকেই মেটাবলিজমের মাত্রা হ্রাস পায়।
মানসিক চাপের সঙ্গে নিঃসৃত হয় হরমোন কর্টিসল। কর্টিসল হরমোন নিজেই ওজন বৃদ্ধির জন্য দায়ী। উপরন্তু কর্টিসল মেটাবলিজমের হারকেও কমিয়ে দেয়। ফলে মানসিক চাপের দরুন নেতিবাচক উভয় দিক থেকেই দেখা দেয়।
আরও পড়ুন: পরিচিত বদভ্যাসেই দেখা দেয় কিডনির সমস্যা