পরিপাকতন্ত্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই অংশটি মানবদেহের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রত্যঙ্গ। খাদ্য সঠিক ও পরিপূর্ণভাবে পরিপাক করা ও শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন পদার্থ বের করে দেওয়ার জন্য কাজ করে লিভার।
সাধারণত লিভার ২ শতাংশ পর্যন্ত ফ্যাট ধারণ করতে পারে। এই পরিমাণটি যদি ১০ শতাংশ হয়ে যায় তবে তাকে ‘ফ্যাটি লিভার’ হিসেবে ধরা হয়। ফ্যাটি লিভারের সমস্যা যদি বৃদ্ধি পেতে থাকে তবে তা থেকে লিভার সিরোসিস (Cirrhosis) ও লিভার ফেইল্যুরের মতো গুরুত্বর সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
ফ্যাটি লিভারের সমস্যাটি হতে পারে দুইটি কারণে। প্রথমত, মদ্যপানের ফলে। দ্বিতীয়ত অস্বাস্থ্যকর খাবার, অতিরিক্ত ওজন, হাইপারলিপিডেমিয়া, ডায়বেটিসজনিত কারণে।
মূলত বেশ কয়েক বছর ধরে ধীরে ফ্যাটি লিভারের সমস্যাটি তৈরি হয়। ফলে এই রোগটির লক্ষণগুলো খুবই অস্পষ্ট এবং হুট করেই দেখা দেয়। আলাদাভাবে কোন শারীরিক সমস্যা বা অসুস্থতা দেখা দেয় না বলেই শনাক্তকরণে বিলম্ব হয়। তবে প্রাথমিকভাবে কিছু লক্ষণ অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়। তাঁর কয়েকটি হলো- অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ওজন কমে যাওয়া, ক্ষুদামন্দা, জন্ডিস, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, পেটের ডান পাশের উপরের অংশে ব্যথাভাব, দুর্বলতা ইত্যাদি।
উপরেই জানানো হয়েছে যে, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসসহ অন্যান্য নানান কারণেই ফ্যাটি লিভারের সমস্যাটি তৈরি হতে পারে। তবে খাদ্যাভ্যাস ঠিক রাখতে পারলে এই সমস্যাটি অনেকাংশেই দূরে রাখা সম্ভব।
আজ ১৯ এপ্রিল ‘ওয়ার্ল্ড লিভার ডে’ হিসেবে পালন করা হয়। নিজের সুস্থতা নিশ্চিত করতে জেনে নিন কয়েকটি খাদ্য উপাদানের নাম, যা লিভারকে সুস্থ রাখতে ও ফ্যাটি লিভারের সমস্যা প্রতিরোধে কাজ করবে
অলিভ অয়েল
অগণিত স্বাস্থ্য উপকারিতা ও উপকারী ফ্যাট সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক এই তেলটি রাখতে হবে প্রতিদিনের খাদ্যভাসে। যা লিভারকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি মেটাবলিজমের মাত্রা বৃদ্ধিতে ও হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতেও কাজ করে।
তৈলাক্ত মাছ
তৈলাক্ত মাছ থেকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। স্বাস্থ্যকর এই ফ্যাট প্রদাহ কমাতে, লিভারকে সুস্থ রাখতে, এনজাইমের মাত্রা ঠিক রাখতে ও হৃদরোগের প্রাদুর্ভাব কমাতে কাজ করে।
বাদাম
বিভিন্ন ধরনের বাদামে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফ্যাট, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন-ই ও স্বাস্থ্যের জন্য অন্যান্য উপকারী উপাদান। পুষ্টি উপাদানের এই মিশ্রণটি একইসাথে লিভার ও হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী।
ফুলকপি গোত্রের সবজি
ক্রুসিফেরাস (Cruciferous) গোত্রের সবজি যেমন: ফুলকপি, ব্রকলি, ব্রাসেলস স্প্রাউটস প্রভৃতি সবজিতে থাকে উচ্চমাত্রার খাদ্যআঁশ। যা বিভিন্ন সবজির মাঝে অনেক বেশি উপকারিতা বহন করে। গবেষণায় দেখা গেছে ব্রকলি ও ব্রাসেলস স্প্রাউটস একই মাত্রার ডিটক্সিফাইং এনজাইম নিঃসৃত করে। যা লিভারের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
বিটরুটের জ্যুস
বিটরুটের জ্যুসে হলো নাইট্রেটস ও বেটালাইনস নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের চমৎকার এক উৎস। যা হৃদযন্ত্র ও লিভারকে সুস্থ রাখে যেকোন ধরনের প্রদাহ ও অক্সিডেটিভ ড্যামেজ থেকে।
আরও পড়ুন: ওয়ার্ল্ড ডায়বেটিস ডে: প্রতিরোধে প্রয়োজন সচেতনতা
আরও পড়ুন: ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার ডে: ক্যান্সার দূরে রাখবে সঠিক নিয়ম