অফিস, বাসা কিংবা ব্যক্তিগত কাজের মাঝে নির্বিঘ্নে ঘুমের জন্য লম্বা সময় বের করা বেশ কষ্টকর হয়ে ওঠে। তবে একটা বিষয় সবারই জেনে রাখা প্রয়োজন। নিয়মিত শরীরচর্চা ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের মতোই, একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের সুস্বাস্থ্যের জন্য সাত-আট ঘন্টার পরিপূর্ণ ঘুম আবশ্যিক। অন্যথায় অসুস্থতা অনিবার্য।
সারাদিনের কাজের চাপ, মানসিক চাপ, পারিপার্শ্বিক সমস্যা, শারীরিক অসুস্থতাজনিত নানান কারণেই, ঘুমের পাশাপাশি প্রয়োজন হয় বিশ্রামেরও। দুঃখজনক হলেও সত্যি, ঘুমের জন্যেই যেখানে সময় পাওয়া কষ্টকর হয়ে যায়, বিশ্রামের সময় পাওয়া সেখানে দুঃসাধ্য।
অথচ নিত্যদিনের জীবনে নিজেকে সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে পরিমিত বিশ্রাম ও ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জেনে রাখুন কেন বিশ্রাম ও ঘুমের উপরে এতোটা গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
ঘুমের ঘাটতির ফলে মস্তিষ্কের উপরে খুব সহজেই নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। যার ফলে স্মৃতিশক্তিজনিত সমস্যা দেখা দেয়। নিয়ম মেনে যতটা ঘুমানো হবে, স্মৃতিশক্তি ততই ভালো থাকবে। কারণ ঘুমের মাঝে আমাদের মস্তিষ্ক সেই সকল ঘটনাগুলো নিয়ে কাজ করে, যা জেগে থাকার সময় আমরা করি, দেখি বা বলি। এমনকি কোন কিছু শেখা হলে সেটাও ঘুমের মাঝে ঝালাই হয় স্মৃতিতে। তাই ঘুম যতটা ভালো হবে, ততই স্মৃতিশক্তি ভালো থাকবে।
পরিমিত মাত্রায় ঘুমের ফলে সৃজনশীলতার মাত্রা বৃদ্ধি পায় নিজ থেকেই। ঘুমের মাঝে মস্তিষ্ক বাইরের বাড়তি ঝামেলা ও কাজের বাইরে নিজের মতো করে কাজ করার সময় পায়। যা সৃজনশীলতা বৃদ্ধিতে অবদান রাখে। এছাড়াও সাময়িক বিশ্রাম ঘুমের মতই সৃজনশীলতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
এখানে একটি বিষয় জানিয়ে রাখা প্রয়োজন। কম ঘুমের মতোই, প্রয়োজনের অতিরিক্ত ঘুম মস্তিষ্কের উপরে বাড়তি চাপ তৈরি করে। এই বাড়তি চাপ রক্তচাপ বৃদ্ধি করে। যা থেকে হৃদযন্ত্রের উপরেও চাপ পড়ে। তাই শুধু মস্তিষ্ক নয়, হৃদযন্ত্রকেও সুস্থ রাখতে চাইলে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের সাত-আট ঘণ্টার ঘুম প্রয়োজন।
ঘুমের তারতম্য ও কম ঘুমের ফলে গুরুত্বর প্রভাব পড়ে হরমোনের উপরে। কম ঘুম কর্টিসল তথা স্ট্রেস হরমোন তুলনামূলক বেশি নিঃসৃত করে। এই হরমোন ওজন বৃদ্ধির জন্য দায়ী।
আরও পড়ুন: আট ঘণ্টার বেশি ঘুমানো কতটা ক্ষতিকর?
আরও পড়ুন: অফিসে যখন ঘুম পায়!