বিশ্ব ব্রেন টিউমার দিবস: গুরুত্ব দিতে হবে শারীরিক লক্ষণে

স্বাস্থ্য, লাইফস্টাইল

ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইফস্টাইল | 2023-09-01 13:14:24

প্রতি বছর ৮ জুন বিশ্ব ব্রেন টিউমার ডে হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

সাধারণ মানুষদের মাঝে ব্রেন টিউমার সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তুলতে ও এ সম্পর্কিত তথ্য ছড়িয়ে দিতে জার্মান ব্রেন টিউমার অ্যাসোসিয়েশন ২০০০ সাল থেকে এই দিনটি পালন করা শুরু করে।

পুরো বিশ্বব্যাপী প্রতিদিন প্রায় পাঁচ শতাধিকের বেশি মানুষের ব্রেন টিউমার ধরা পরে। এমনকি সেকেন্ডারি ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা প্রতিদিন গড়ে প্রায় পাঁচ শতাধিকের বেশি হয়ে থাকে।

মূলত ব্রেন টিউমার বেশ কয়েক ধরনের হয়ে থাকে। যার মাঝে কিছু সংখ্যক ব্রেন টিউমার হলো নন-ক্যানসারাস (ক্ষতিকর নয়) এবং কিছু সংখ্যক টিউমার হলো ক্যানসারাস (মারাত্মক ক্ষতিকর)। সেকেন্ডারি টিউমার হলো ক্যানসারাস, যা শরীরের যেকোন স্থানে দেখা দেয় এবং মস্তিষ্ক পর্যন্ত ছড়িয়ে পরে।

ব্রেন টিউমার সম্পর্কে যা জানা প্রয়োজন

ভয়াবহ এই রোগটি সম্পর্কে সবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে রাখা প্রয়োজন। এখানে তা তুলে ধরা হলো।

১. যে কোন বয়সেই ব্রেন টিউমার দেখা দিতে পারে।

২. কী কারণে ব্রেন টিউমার দেখা দেয় তা সঠিকভাবে চিহ্নিত করা যায়নি। তবে বংশগত সমস্যা ও এক্স-রের মতো হাই ডোজ রেডিয়েশন এর ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

৩. ডাক্তাররা ব্রেন টিউমারের বিভাগ তৈরি করে গ্রেড করার মাধ্যমে। গ্রেড যত বেশি, বুঝতে হবে টিউমার তত বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। ব্রেন টিউমারকে গ্রেড ১, ২, ৩, ৪ করে বিভাগীকরণ করা হয়।

ব্রেন টিউমারের লক্ষণ

ব্রেন টিউমারের আকার, ধরণ ও অবস্থানের উপরে এর লক্ষণ সমূহ নির্ভর করে। তবে প্রায় প্রতিটি রোগীর ক্ষেত্রেই কিছু কমন ও সাধারণ শারীরিক লক্ষণ প্রকাশ পায়। এগুলো হলো-

১. মাথাব্যাথা।

২. খিঁচুনি।

৩. দৃষ্টিশক্তির সমস্যা।

৪. বমি হওয়া।

৫. মানসিক ও আচরণগত পরিবর্তন।

৬. ভারসাম্য বজায় রাখা কিংবা স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলায় সমস্যা দেখা দেওয়া।

৭. কথা বলার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেওয়া।

কীভাবে ব্রেন টিউমারের হাত থেকে নিরাপদ থাকা যাবে?

প্রথমেই বলা হয়েছে যে, ব্রেন টিউমার দেখা দেওয়ার সঠিক কারণ এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে কিছু সাধারণ নিয়ম ও স্বাস্থ্যকর জীবন ব্যবস্থা ব্রেন টিউমারকে দূরে রাখতে কাজ করবে বলে বিশ্বাস করে বিশেষজ্ঞরা। যার মাঝে রয়েছে-

পর্যাপ্ত ঘুম

চোখ ও মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দেওয়ার জন্য প্রতিটি পূর্ণবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে হবে।

ক্যানসার প্রতিরোধী খাবার গ্রহণ

প্রচুর পরিমাণ প্রাকৃতিক খাদ্য উপাদান থেকে ক্যানসার বিরোধী উপাদান পাওয়া যায়। আপেল, আঙ্গুর, ব্রকলি, গাজরের মতো উপকারী এই সকল খাদ্য উপাদানগুলোকে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখার চেষ্টা করতে হবে।

মোবাইলের সীমিত ব্যবহার

মোবাইল ফোন থেকে নিঃসৃত রশ্মি ব্রেন টিউমার দেখা দেওয়ার সম্ভবনাকে বাড়িয়ে দেয়। তাই মোবাইল ফোন যথাসম্ভব কম ব্যবহার করতে হবে।

ধূমপান বর্জন করা

সন্দেহাতীতভাবে এই বিষয়ে একমত পোষণ করতেই হবে। ধূমপান ক্যানসারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। এছাড়া ব্রেন টিউমারের ঝুঁকি বৃদ্ধিতেও অবদান রাখে এই বদ অভ্যাসটি।

এছাড়া নিয়মিত শরীরচর্চা করা, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি মূলক কাজ করা (ধাঁধা কিংবা গণিত সমাধান), মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। পাশাপাশি সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে, উপোরক্ত লক্ষণ সমূহ প্রকাশ পেলে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।

আরও পড়ুন: প্রতিনিয়ত অকাল মৃত্যুকে ডেকে আনছি যার মাধ্যমে!

আরও পড়ুন: ওয়ার্ল্ড লিভার ডে: লিভারের সুস্থতায় যে সকল খাবার

এ সম্পর্কিত আরও খবর