ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যাচ্ছে চল্লিশের ঘর। মাত্রাতিরিক্ত তাপমাত্রার ভেতর নিজেকে সুস্থ রাখতে প্রয়োজন শরীরের বাড়তি যত্ন ও পুষ্টিকর খাদ্য উপাদান গ্রহণ। গরমে বাড়তি ঘামে শরীর থেকে পানি বের হয়ে যাওয়ায় পানিশূন্যতা দেখা দেয়। এই পানির চাহিদা পূরণে পানির পাশাপাশি পান করতে হবে ডাবের পানিও।
ডাবের পানির গুণাগুণের শেষ নেই। মানব শরীরের জন্য ডাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে। ভিটামিন সি, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাংগানিজ, জিংক, অ্যামিনো অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ম্যাগনেসিয়ামে পূর্ণ প্রাকৃতিক এই পানীয়।
তীব্র রোদে থাকার পর তৃষ্ণা মেটাতে ছুটে যাওয়া হয় দোকানে কোমল পানীয় কিনতে, কিন্তু পাশে থাকা ডাবের ভ্যানের দিকে যেন নজর যায়না।
কি মনে হচ্ছে, এতে নিজের শরীর কি সুস্থ রাখছেন? মোটেও নয়, বরং আরও ক্ষতি হচ্ছে আপনার স্বাস্থ্যের। কোমল পানীয়তে থাকা ক্ষতিকর উপাদানগুলো নানাভাবে ক্ষতি করছে শরীরের।
তাই গরম আবহাওয়ায় পানীয় হিসেবে বেছে নিতে হবে ডাব। কেন? তা জেনে নেওয়া যাক-
১. ডাবের পানি শরীরের পানিশূন্যতা দূর করে দেহে পানির ভারসাম্য বজায় রাখে।
২. রক্তে গ্লুকোজের পরিমান কমিয়ে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ করে।
৩. শারীরিক ক্লান্তির পাশাপাশি মানসিক হীনতা, বিষণ্ণতা দূর করে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে।
৪. হজম ক্ষমতা বাড়াতে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কাজ করে।
৫. পেট বা বুকে জ্বালাপোড়া বন্ধ করে।
৬. ইউরিন ইনফেকশন দূর করে।
৭. কিডনির রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৮. রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখে।
৯. হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়।
১০. ত্বকের ব্রন, তৈলাক্তভাব দূর করে এবং ত্বক শুষ্ক থেকে সতেজ করে তারুণ্য ছাপ ধরে রাখে।
ভালো দিকগুলোতো জেনে নিলেন, কিন্তু কি জানেন সবকিছুরই ভালো দিকের সাথে কিছু নেতিবাচক দিকও থাকে, যা আমাদের শরীর ধারন করতে পারেনা। প্রত্যেকটি জিনিসের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। যেমনটি ডাবের পানির ক্ষেত্রেও।
১. ওজন কমানোর চেষ্টা করলে ডাবের পানি নিয়মিত পান করা উচিৎ নয়। কারণ এতে চিনির পরিমান কম থাকলেও প্রচুর ক্যালরি রয়েছে।
২. ডাবের পানি রক্তে শর্করার মান বৃদ্ধি করে। সেক্ষেত্রে ডায়বেটিস রোগীদের জন্য একদম কচি ডাবের পানি পান করতে হবে।
৩. ডাবের পানিতে প্রচুর সোডিয়াম থাকে, তাই অধিক পরিমাণ ডাবের পানি পান হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।
যেকোনো বয়সে যেকোনো খাদ্য অতিরিক্ত গ্রহণ করার ফলাফল ভালো হয়না। সবকিছুই নির্দিষ্ট পরিমাণে ও নিয়ম মেনে গ্রহণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেই সাথে প্রতিটি খাদ্য উপাদানের ভালো গুণাগুণের পাশাপাশি ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে। এছাড়াও রোগীদের ক্ষেত্রে সবকিছু সম্পর্কে খেয়াল রেখে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে তবেই নির্দিষ্ট খাদ্য উপাদান গ্রহণ করতে হবে।
আরও পড়ুন: মৌসুমি ফল জামের সাত উপকারিতা
আরও পড়ুন: বুক জ্বালাপোড়া কমাবে যে খাবারগুলো