খাবার খাওয়ার মাঝে পানি পান করা যাবে না- এমন নিষেধাজ্ঞা সকলেই কমবেশি শুনেছেন। অনেকের ধারনা ও অনেকে বিশ্বাসও করেন, খাওয়ার মাঝে পানি পানের ফলে খাদ্য পরিপাকে সমস্যা হয়। যে কারণে খাবার খাওয়ার আধা ঘন্টা পর পানি পানের উপদেশ দেওয়া হয়ে থাকে। আর সকলেই এই উপদেশটি মেনে চলার চেষ্টা করেন।
কিন্তু আমরা কী জানি, বৈজ্ঞানিকভাবে কতটা নির্ভরযোগ্য এই ব্যাপারটি? খাওয়ার মাঝে পানি পান আসলে উপকারী না কি অপকারী?
জেনে বিস্মিত হবেন, গবেষণা জানাচ্ছে যে- খাবার খাওয়ার মাঝে স্বল্প পরিমাণ পানি পান করা বেশ উপকারী! গবেষণা থেকে তুলে ধরা হলো এমন কিছু ফ্যাক্টস।
পাকস্থলী এসিডের মাত্রা
ভ্রান্ত ও প্রচলিত ধারণা হচ্ছে, পানি পানের ফলে, পাকস্থিলস্থ এসিডের সাথে পানি মিশে যায়। ফলে খাদ্য ভালোভাবে পরিপাক হতে পারে না। কিন্তু গবেষক ও ডাক্তাররা বেশ কিছু জটিল পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছেন যে, পাকস্থলিস্থ এসিডের সাথে পানি মেশে না। ফলে খাদ্য পরিপাকেও কোন সমস্যা দেখা দেয় না।
পাকস্থলী ও খাদ্য পরিপাকের ধরণ মানুষ ভেদে ভিন্ন
প্রতিটি মানুষের ধারণ ক্ষমতা ভিন্ন। একইসাথে খাবার খাওয়ার অভ্যাসও ভিন্ন। যার প্রভাবে খাদ্য পরিপাকের ধরণ মানুষ ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। অনেকেই অভিযোগ করেন, খাবার খাওয়ার মাঝে পানি পানের ফলে পেট ফোলাভাব দেখা দেয়। যদিও ডাক্তাররা এই সমস্যাটির কোন বৈজ্ঞানিক কারণ খুঁজে পাননি।
পানি পানের ফলে পেট ভরে যায়
খাবার খাওয়ার মাঝে পানি পানের ফলে খাদ্য পরিপাকে সমস্যা দেখা না দিলেও, অতি দ্রুত পেট ভরে যায়। যে কারণে খাবার খাওয়ার পূর্বে এক গ্লাস পরিমাণ পানি পান করলে ক্ষুধা কমে। যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
খাবার খাওয়ার মাঝে পানি পানের কী কী উপকারিতা?
গবেষক ও ডাক্তাররা গবেষণা থেকে জানিয়েছেন, খাবার খাওয়ার মাঝে পরিমিত পানি পানে কোন সমস্যা নেই। তবে আছে বেশ কিছু উপকারিতা। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই সকল উপকারিতা সমূহ।
১. পাকস্থলিস্থ খাদ্য তরলীকরণে সাহায্য করে।
২. খাদ্যের পুষ্টিগুন পরিপূর্ণভাবে সংগ্রহে সাহায্যে করে।
৩. কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যা প্রতিরোধ করে।
৪. পেটফোলা ভাব প্রতিরোধ করে।
৫. মল নরম হতে সাহায্য করে।
৬. পরিপাকনালী পিচ্ছিলকরণে সাহায্য করে।
সবশেষে বলা যায়, খাবার খাওয়ার মাঝে পানি পান করা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত পছন্দের বিষয়। এর ফলে খাদ্য পরিপাকের উপর কোন নেতিবাচক প্রভাব একেবারেই নেই। বরং খাবার খাওয়ার মাঝে পরিমিত পানি পান স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।