রাত হলেই হিমের আমেজ পাওয়া যায়। আর শীতের প্রাদুর্ভাব মানেই নিয়মিত গোসলে বিরতি চলে আসা। যা করা একেবারেই অনুচিত। সারাদিনে শরীরে বয়ে বেড়ানো ধুলাময়লা ও ঘাম গোসলের মাধ্যমেই পুরোপুরিভাবে দূর করা সম্ভব হয়। আরও বড় বিষয় হলো পরিষ্কার-পরিচ্ছনতার সাথে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্যে গোসল ভীষণ জরুরি।
গোসলের ফলে শরীরের বেশির চাপ অনেকটাই শিথিল হয়ে আসে। এতে করে পেশীর ফ্লেক্সিবিলিটি ও ইলাস্টিসিটি বৃদ্ধি পায়। প্রায়শ ঘুমের ভঙ্গীর ঠিক না থাকায় ঘুম ভাঙার পর শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথাভাব দেখা দেয়। এর প্রধান কারণ পেশী শক্ত হয়ে থাকে। ফলে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নাড়াচাড়ায় ব্যথা হয়। এক্ষেত্রে গোসল অনেকটা সাহায্য করে।
কুসুম গরম পানিতে গোসল করার ফলে রক্ত চলাচলের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং এতে করে প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তার প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ পেয়ে থাকে। এছাড়া রক্ত চলাচল নিয়মিত হওয়ার ফলে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া সাবলীল হয়, যা বিভিন্ন ধরনের হৃদরোগ থেকে রক্ষা করে।
গোসলের সবচেয়ে বড় ও প্রধান কারণ হলো শরীরকে পরিষ্কার রাখা। শুধু বাইরের ধুলাবালি থেকেই নয়, শরীরের যেকোন ফাংগাল ইনফেকশনের সম্ভাবনা কমাতেও গোসল অনেক বড় ভূমিকা রাখে। এছাড়া ঠাণ্ডা পানিতে গোসলের ফলে ভাস্কুলার ও লিম্ফ সিস্টেমের কার্যকারিতা উন্নত হয়, যা শ্বেত রক্তকণিকার উৎপাদন বৃদ্ধি করে। রক্তের হোয়াইট সেল বা শ্বেত রক্তকণিকা ইনফেকশনসহ অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে।
শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে গোসল করার সময় অনবরত পানির পড়ার মাঝেও আমাদের শ্বাসপ্রশ্বাস চালু থাকে। তবে এ সময়ে স্বাভাবিক সময়ের চাইতে গভীরভাবে শ্বাস নেওয়া হয় এবং প্রশ্বাস ফেলার আগে কিছুক্ষণ ভেতরে আটকে রাখা হয়। শ্বাসপ্রশ্বাসের এই ভিন্ন ধরনের মাধ্যমে ফুসফুসের শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং ফুসফুস সুস্থ থাকে।
মন খারাপ থাকলে বা মেজাজ খারাপ হলে চটজলদি গোসল সেরে নিলে মন অনেকটা ভালো হয়ে যাবে। ঠাণ্ডা পানিতে গোসল নার্ভাস সিস্টেমকে শান্ত করে এবং রক্তে ভালো বোধ করার কেমিক্যাল তথা বেটা-এন্ড্রোফিন ও নোরাড্রেনালাইন এর নিঃসরণের মাত্রা বৃদ্ধি করে। এই কেমিক্যালগুলো মূলত ডিপ্রেশন প্রতিরোধে কাজ করে। ফলে দৈনিক গোসল শরীরের সাথে মনকেও সুস্থ রাখতে অবদান রাখে।
আরও পড়ুন: লক্ষণ জানুন, আত্মহত্যা প্রতিরোধ করুন
আরও পড়ুন: কাজের মাঝে ঘুমের যন্ত্রণা!