অনেকেই সবজি খেতে পছন্দ করেন না। বিশেষ দুই-একটি সবজির বাইরে কোন সবজিই খেতে চান না, এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। কিন্তু মুলা এমন একটি সবজি যার ব্যাপারে প্রায় সকলেই একমত জানাবেন। উদ্ভট গন্ধযুক্ত এই মৌসুমি এই সবজিটি কেউই খেতে পছন্দ করেন না।
অথচ শীতকালীন এই সবজিটিতে রয়েছে ভরপুর স্বাস্থ্য উপকারিতা। কচি মুলা সালাদ কিংবা মিক্স সবজি হিসেবে খেতে একেবারে খারাপ লাগে না। এ সময়ে অন্যান্য সবজির সাথে অপছন্দের মুলা কেন খাবেন, সেটাই তুলে ধরা হল সবজিটির কয়েকটি স্বাস্থ্য উপকারিতার মাধ্যমে।
রান্নায় কিংবা প্রতিদিনের সালাদে মুলা রাখলে খুব সহজেই শরীরে আঁশের চাহিদা পূরণ হয়ে যাবে। মুলাতে থাকা আঁশ পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখে এবং ভালোভাবে খাদ্য পরিপাক হতে সাহায্য করে। বিশেষত গলব্লাডার ও লিভার ভালো রাখায় মুলা সেইফগার্ডের ন্যায় কাজ করে।
মুলা থেকে পাওয়া যায় পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যান্থসায়ানিনস (Anthocyanins), যা হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতাকে নিয়মিত রাখতে অবদান রাখার পাশাপাশি পরিচিত হৃদরোগ দেখা দেওয়া থেকে প্রতিরোধ করে। এছাড়া মুলায় থাকা পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন-সি, ফলিক অ্যাসিড ও ফ্ল্যাভনয়েডস হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে কাজ করে।
মুলা থেকে আরও পাওয়া যাবে পটাশিয়াম, যা রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে কাজ করে। বিশেষত যাদের হাইপারটেনশনের সমস্যাটি আছে, তাদের প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে মুলা রাখা খুবই জরুরি। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মোতাবেক, মুলাতে থাকা উপকারী উপাদান রক্তকে ঠাণ্ডা করে। ফলে রক্তচাপের সমস্যাটি কমে যায়।
মুলাতে থাকা পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন-সি সাধারণ ঠাণ্ডা-কাশির সমস্যাকে কমাতে কাজ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তবে সবজিটি থেকে এই উপকারিতা পেতে প্রতিদিন স্বল্প পরিমাণে হলেও মুলা খেতে হবে। উপকারী এই সবজিটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি ফ্রি রেডিক্যালজনিত কারণে দেখা দেওয়া প্রদাহকে প্রতিরোধ করে।
একেবারেই সাদামাটা এই সবজিটি থেকে কি ধরনের উপকারিতা পাওয়া যেতে পারে, সেটা নিয়ে দ্বিধায় থাকতে পারেন অনেকেই। এক মুলা থেকেই পাওয়া যাবে ভিটামিন- এ,বি৬, সি, ই ও কে। সাথে রয়েছে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমূহ, আঁশ, জিংক, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ম্যাংগানিজ। উল্লেখিত প্রতিটি পুষ্টি উপাদানই শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য ভীষণ প্রয়োজনীয়। যার চাহিদা একটি সবজি থেকেই পূরণ করা সম্ভব।
শীতকালীন সময়ে ত্বকের জন্য চিন্তা করার বদলে খেতে হবে মুলা। ভেতর থেকে ত্বককে সুস্থ রাখতে ও ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা ধরে রাখতে চাইলে মুলা অনবদ্য। মূলত এতে থাকা ভিটামিন-সি, জিংক ও ফসফরাস ত্বকের শুষ্কভাব কমাতে কাজ করবে।